উচ্ছেদ আতঙ্কে ঘর না পাওয়া জলবায়ু উদ্বাস্ত প্রায় ৩০০ পরিবার

সাইফুল ইসলাম,কক্সবাজার জার্নাল ◑ 
জলবায়ু উদ্বাস্তুদের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একান্ত ইচ্ছায় কক্সবাজার সদরের খুরুশকুলে প্রস্তুত করা হয়েছে দেশের সর্ববৃহৎ আশ্রয়ণ কেন্দ্র।

যেখানে আশ্রয় পাচ্ছে ঘূর্ণিঝড়ে উদ্বাস্তু হওয়া ৪ হাজার ৪০৯টি পরিবার। ইতোমধ্যেই প্রথম পর্যায়ে ২০টি ভবনে আশ্রয় পেয়েছেন ৬শ’ পরিবার। যারা ফ্ল্যাটে উঠে গেছেন তারা খুশি হয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। গত মাসের ২৩ জুলাই ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী।

যারা ফ্ল্যাট পাচ্ছেন তাদের জায়গাগুলো বুঝে নিচ্ছেন বিমানবন্দর কতৃপক্ষ। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে-ঘর না পাওয়া অনেক পরিবারকেও ৬শ পরিবারের সাথে উচ্ছেদের পায়তারা চলছে। ফলে প্রায় ৩০০ পরিবার এখন উচ্ছেদ আতঙ্কে দিনাতপাত করছে। এদিকে ফদনার ডেইল বিমানবন্দরের পশ্চিম পার্শ্ব (দেয়াল সংলগ্ন) প্রায় ৩০০ পরিবারের পূর্নবাসন ব্যতিত উচ্ছেদ না করতে গত ২০ অাগস্ট ১০০ জনের স্বাক্ষরিত কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে

সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে উচ্ছেদে আতঙ্কে থাকা পরিবারগুলো।
তারা এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। তবে ঘর না পাওয়া প্রায় ৩০০ পরিবারকে পূর্নবাসন ছাড়াই উচ্ছেদের পায়তারা চালাচ্ছে একটি মহল।

তাদের দেয়া স্মারকলিপি সূত্রে জানায়, ১৯৯১ সালের মহা প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ের পর থেকে বসতভিটা হারিয়ে ফদনার ডেইলে বসবাস করে অাসছিল। তাদেরকে ২০০৭ সাল থেকে প্রশাসকের নির্দেশে ফদনার ডেইল নামক স্থানে বসবাসের জন্য প্লট করে দেয়া হয়। কিন্তু বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক রূপান্তরে আশেপাশের সরকারি খাস জমিতে বসবাসরত উদ্বাস্তু বাসিন্দাদের স্থানাস্তরের উদ্যোগ নেয় সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় স্থায়ীভাবে পুর্নবাসনের জন্য অফিস থেকে নির্দেশনা দেওয়ার কথা জানানো হয়। কিন্তু বিগত ১৩ বছর সময়ের মধ্যে প্রশাসনিকভাবে এই বিষয়ে কোন পদক্ষেপ না নেওয়ায় তারা উক্ত জায়গায় বসবাস করে আসছে।

সাম্প্রতিক জানতে পারল যে, বিমান বন্দর পশ্চিম পার্শ্ব (দেওয়াল সংলগ্ন) ৩০০ ফুটের মধ্যে বসবাসরত পরিবারগুলোর মধ্য থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অাশ্রয়ন প্রকল্পে ৬০০ পরিবারকে ফ্ল্যাট দেওয়া হবে। কিন্তু তা করে মুষ্টিমেয় কিছু পরিবারের মাঝে ফ্লাট বরাদ্দ দিয়ে বাকী পরিবারদের প্রশাসনের অযুহাতে এলাকার একটি মহল উচ্ছেদের পায়তারা চালাচ্ছে। সেই প্রেক্ষিতে অানুমানিক ১৮০ পরিবারকে বিচ্ছিন্নভাবে অাশ্রয়ন প্রকল্পে ফ্লাট দেয়া হয়েছে এবং বাকী পরিবারগুলো যার যার স্থানে বসবাস করছে। ওই স্থানে বসবাসরত ৩০০ ফুটের মধ্যে অবস্থিত ঘর না পাওয়া প্রায় ৩০০ পরিবারগুলোর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন পরবর্তীতে পুর্নবাসন না দেয়া পর্যন্ত তাদেরকে বর্তমান অবস্থানে কোন প্রকার প্রশাসনিক বিশৃঙখলা ছাড়া বসবাসের জন্য।

স্থানীয়রা জানান, ঝুপড়ি ও কুঁড়ে ঘরে বসবাস করা মানুষগুলো সুন্দর দালানে স্থায়ী বসবাসের ঠিকানা পেয়ে দারুণ খুশি হয়েছে। তবে প্রথম পর্যায়ে ফ্লাট পাওয়ার কথা ছিল বিমান বন্দর সংলগ্ন দেওয়াল ঘেঁষে যারা বসবাস করছে তারা ।

কিন্তু মুষ্টিমেয় কিছু পরিবার পেয়ে থাকলেও অধিকাংশ এখন ফ্লাটে ঘর পায়নি। তারা বর্তমানে উচ্ছেদের আতঙ্কে রয়েছে। যদিও উচ্ছেদ করে দেয় তারা যাবে কোথায় এমন প্রশ্ন পরিবারগুলোর। প্রথম দিকে ৬০০ পরিবারের ফ্লাট পেয়েছে।

তারমধ্যে ৩০০ ফুটের মধ্যে আছে ১৮০ পরিবার দালানে ঘর পেলেও আরও প্রায় ৩০০ পরিবারের ঠাঁই নেই ওই দালানে এখন। কিন্তু ফ্লাট পাওয়া ৪৪০৯ পরিবারের মধ্যে তালিকায় তাদের নাম রয়েছে। চলমান পরিস্থিতিতে নিয়মিত তারা উচ্ছেদের আতঙ্কে রয়েছে। এরপরেও যদি তাদেরকে সরানো হয় পুর্নবাসনের স্থান দিয়ে উচ্ছেদ করা হউক।

স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন এসব উচ্ছেদের সাথে জড়িত রয়েছে কক্সবাজার পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এস এম আকতার কামাল।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তাদেরকে তো পুর্নবাসন করছে সরকার। এখানে আমার কোন হাতে নেই।

তবে ৩০০ ফুটের মধ্যে যে ৩০০ পরিবারের কথা বলা হয়েছে তা ৩০০ হবেনা। এধরণের পরিবার কিছু হতে পারে।

আরও খবর