সৈয়দুল কাদের :
ভাঙাচোরা রাস্তায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন কক্সবাজার শহরের লোকজন। অলিগলির সব রাস্তায়ই চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এসব রাস্তা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব হয়ে উঠেছেন শহরের বিভিন্ন পেশার লোকজন।
এ ছাড়া শহরের প্রধান সড়ক এখন সাধারণ মানুষের জন্য অনেকটা আতংকে পরিণত হয়েছে। পৌর কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানিয়েছেন পৌরসভার নিজস্ব অর্থাৎ ভেতরের অলিগলির সবকটি সড়ক টেন্ডার হয়েছে, বৃষ্টি কমলেই কাজ শুরু হবে।
দেশের প্রধান পর্যটন শহর কক্সবাজারের ভাঙাচোরা সড়ক নিয়ে সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ ও হতাশ।
১৭ আগস্ট থেকে হোটেল-মোটেল জোন খুলে দেওয়ার ঘোষণায় ব্যাপকহারে এসেছে পর্যটক। তাদের হোটেল থেকে বের হওয়ারও কোন সুযোগ নেই।
ঢাকা থেকে আগত একজন সিনিয়র সাংবাদিক কামরুজ্জামান খান কালাতলীর একটি হোটেলে থেকে অতিষ্ঠ হয়ে এ প্রতিবেদককে বলেন, প্রতিটি সড়কেরই এমন অবস্থা, চলাফেরা করার কোন সুযোগ নেই। শুধু শহরে নয় প্রধান সড়কসহ সর্বত্র একই অবস্থা। এই অবস্থা অব্যাহত থাকলে পর্যটক বিমুখ হতে পারে বলে জানালেন তিনি।
এখন অলিগলি এবং রাস্তা-ঘাট নিয়ে ভুক্তভোগীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অত্যন্ত সরব। কোনো মিছিল-সমাবেশ নয়, যে যেভাবেই পারে কেবল ফেসবুক আইডিতেই প্রতিবাদ জানিয়ে যাচ্ছেন।
এমনকি সর্বশেষ কক্সবাজার পৌর শহরের প্রধান সড়কটির মাত্র চার কিলোমিটার খানাখন্দকে ভরা এলাকা সংস্কারের জন্য বেশির ভাগ ফেসবুক আইডিধারীরা খোদ প্রধানমন্ত্রীর কাছে আকুল আবেদন রাখছেন। ফেসবুক আইডিধারীদের অনেকেই স্ব স্ব আইডিতে দেওয়া পোস্টে পর্যটন শহরের রাস্তা সংস্কারে দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন।
প্রাপ্ত তথ্যমতে জানা যায়, কক্সবাজারের রাস্তা-ঘাট তদারকির কাজে দায়িত্বে রয়েছেন সড়ক ও জনপথ বিভাগ, কক্সবাজার পৌরসভা এবং কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কউক)। অর্থাৎ তিনটি সংস্থা। দীর্ঘকাল ধরে শত বছরের ঐতিহ্যবাহী কক্সবাজার পৌরসভা এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগ নিজেদের আওতাধীন সড়কগুলোর তদারকি করে আসছিল। কক্সবাজারে কউকের কার্যক্রম শুরু হলে সংস্থাটিও সড়কের তদারকির ভাগ দাবি করে।
কউকের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে পর্যটন শহরের অন্যতম জনগুরুত্বসম্পন্ন চলাচলের প্রধান সড়কটি সড়ক ও জনপথ বিভাগ এক বছর আগেই গেজেট নোটিফিকেশন মূলে দায়িত্ব হস্তান্তর করে কউকের কাছে। কিন্তু নানা জটিলতার কারণে কউক প্রধান সড়কের সংস্কার কাজ শুরু করতে ব্যর্থ হয়। ফলে উপর্যুপরি টানা প্রায় ৩ বছর ধরে সংস্কারের অভাবে পৌর শহরের একমাত্র প্রধান সড়কটির অনেকাংশ হয়ে পড়ে এক প্রকার চলাচলের অযোগ্য। এ অবস্থায় শহরবাসী সড়কটি নিয়ে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ সহ্য করে যাচ্ছেন।
অপরদিকে কক্সবাজার পৌরসভার অভ্যন্তরীণ সড়ক এবং অলিগলিও দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারবিহীন অবস্থায় পড়ে রয়েছে। ভুক্তভোগীদের অনেকেই এসব অলিগলি এবং সড়কগুলোতে যানবাহনকেও এড়িয়ে চলছেন। রোগী নিয়ে যাওয়া অনেক কষ্টকর হয়ে দাড়িয়েছে।
পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান জানিয়েছেন, অভ্যন্তরীণ প্রায় সব সড়ক ইতোমধ্যে টেন্ডার হয়েছে। কিছু রাস্তায় কাজ শুরু হয়েছে। শিগগিরই দৃশ্যমান কাজ হবে। বৃষ্টির প্রতিবন্ধকতার কারণে শুরু করা হয়নি।
এসব বিষয় নিয়ে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেছেন, আমি কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পৌরসভা, কউক ও সওজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করে চলেছি।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-