স্ত্রীর গায়ে হাত তোলায় যুবককে হত্যা করল প্রতিবেশী

চট্টগ্রাম ◑ চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের এক ব্যক্তিকে কেটে টুকরো টুকরো করে হত্যার পর লাশ মাটি চাপা দিয়েছে প্রতিবেশী অপর এক যুবক।

গতকাল শনিবার (১৫ আগস্ট) এলাকাবাসী হত্যাকারীকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করলে আটককৃত যুবক ঘটনার কথা স্বীকার করে। রাতেই মাটি খুঁড়ে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার সলিমপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত উত্তর সলিমপুর গ্রামের লাল মিয়া কলোনিতে দীর্ঘদিন পাশাপাশি বসবাস করতেন হবিগঞ্জ জেলার চুনারঘাট থানার পাইকপাড়ার রমজান আলীর ছেলে রুমেন মিয়া (৩০) ও সীতাকুণ্ডের কেশবপুরের নুরুল হকের ছেলে নুর উদ্দিন (৩৭)। গত ১৩ আগস্ট নুর উদ্দিন হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যান। এরপর থেকে তার স্ত্রী, দুই সন্তানসহ প্রতিবেশীরা সম্ভাব্য সকল স্থানে তাকে খুঁজেও সন্ধান পাননি। এরই মধ্যে বাড়ির পাশে একটি জমিতে মাটি ফেলে মুরগির খামার তৈরি করে রুমেন মিয়া। নুর উদ্দিন নিখোঁজের পর থেকে রুমেনের আচরণে কিছুটা পরিবর্তন লক্ষ করেন অন্যান্য বাসিন্দারা। একপর্যায়ে ১৫ আগষ্ট সন্ধ্যার পর তারা রুমেন মিয়াকে জিজ্ঞাসা করলে সে নুরউদ্দিনকে হত্যার কথা স্বীকার করে। এতে এলাকার জনপ্রতিনিধিরা সীতাকুণ্ড থানায় খবর দিয়ে রুমেনকে পুলিশে সোপর্দ করে। খবর পেয়ে শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে হত্যাকারী রুমেনকে নিয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পরে রুমেনের দেখিয়ে দেয়া স্থানে মাটি খুঁড়ে নুর উদ্দিনের টুকরো টুকরো লাশ উদ্ধার করা হয়।

সলিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন আজিজ জানান, গত ১৩ আগস্ট রুমেন মিয়া নামক যুবক তার প্রতিবেশী নুর উদ্দিনকে কেটে কয়েক টুকরো করে লাশ মাটি চাপা দিয়ে দেয়। এরপর লাশের উপর পোল্ট্রি মুরগির খামার তৈরি করে সে মুরগি পালন শুরু করে। এর মধ্যে নুর উদ্দিন নিখোঁজ হওয়া তাকে খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে শনিবার রুমেনের আচরণ সন্দেহজনক মনে করে এলাকাবাসী রুমেনকে আটক করে গণধোলাই দিলে সে হত্যার কথা স্বীকার করে। পরে পুলিশের কাছে তাকে সোপর্দ করা হয়। রাতে পুলিশ সদস্যরা সেখানে উপস্থিত হয়ে লাশ উদ্ধারের কাজ শুরু করেন।

সীতাকুণ্ড মডেল থানার ওসি (তদন্ত) সুমন বণিক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, নুরউদ্দিনকে হত্যার অভিযোগ তুলে এলাকাবাসী রুমেন নামক ওই হত্যাকারীকে আমাদের কাছে সোপর্দ করে। আমরা তাকে থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে হত্যার করা স্বীকার করে জানায় নুর উদ্দিন তার স্ত্রীকে মারধর করত। এসব মারধর দেখে তার ভালো লাগত না। তাই সে নুর উদ্দিনকে হত্যা করেছে!

ওসি তদন্ত সুমন বণিক আরো বলেন, নুর উদ্দিন তার স্ত্রীকে মারধর করলেও প্রতিবেশী রুমেনের কেন ভালো লাগত না তা বোধগম্য নয়। এতে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখব। তবে রুমেন আটকের পর শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে তারা হত্যাকারী রুমেনকে সাথে নিয়ে উত্তর সলিমপুর গ্রামে আসেন। এ রিপোর্ট লেখার (রাত পৌনে ১১টা) সময় রুমেনের দেখিয়ে দেয়ার মুরগির খামারের ভেতর থেকে লাশ উদ্ধারের জন্য মাটি খোঁড়া হচ্ছিল। এ বিষয়ে হত্যা মামলা দায়ের হবে বলেও জানান তিনি।

আরও খবর