সিনহাকে গুলির আগে-পরে সাক্ষী নাজুর সঙ্গে লিয়াকতের রহস্যজনক আলাপ

ডেইলি বাংলাদেশ ◑ অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানকে হত্যার ঘটনায় আরো চাঞ্চল্যকর তথ্য মিলেছে। জানা গেছে, সিনহাকে গুলির আগে বাহাড়ছড়া ফাঁড়ির বরখাস্তকৃত ইন্সপেক্টর লিয়াকত পুলিশের মামলার সাক্ষী নিজাম উদ্দিন নাজুর সঙ্গে রহস্যজনকভাবে অসংখ্য বার ফোনালাপ করেছেন।

লিয়াকত আলীর কল লিস্ট বিশ্লেষণ করে এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য মিলেছে। সিনহাকে গুলি করার আগে নাজুর সঙ্গে লিয়াকতের এতবার ফোনালাপ হওয়ার বিষয়টি র‍্যাবের তদন্তকারী দলের নজরে এসেছে।

পুলিশের এজাহার অনুযায়ী, শাপলাপুর চেকপোস্টে ঈদের আগের দিন অর্থাৎ ৩১ জুলাই রাত সোয়া ৯টার দিকে চেকপোস্টে হাজির হয়ে তল্লাশি শুরু করেন লিয়াকত। আর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহাকে গুলি করার খবর রাত ৯ টা ৩০ মিনিটে ওসি প্রদীপ কুমার দাশকে জানান লিয়াকত।

কল লিস্ট বিশ্লেষণে দেখা যায়, সন্ধ্যার পর থেকে লিয়াকত আলীর মোবাইলে ব্যস্ততা বেড়ে যায়। রাত ৮টা ৪৭ মিনিটে একটি রবি নাম্বার থেকে লিয়াকতের মোবাইলে একটি কল আসে। সেই কলটি ছিল নাজুর। নাজুর সঙ্গে লিয়াকতের এক মিনিট চার সেকেন্ড কথা হয়। ঠিক ১০ মিনিট পর ৮টা ৫৭ মিনিটে আবারো লিয়াকতকে ফোন দেন নাজু। রাত ৯টা থেকে লিয়াকত ও নাজুর মধ্যে যোগাযোগ বাড়তে থাকে।

কল লিস্টের তথ্যানুযায়ী, রাত ৯টা ২ মিনিটে বাহারছড়া ফাঁড়ির মুহুরি আরিফকে কল দেন লিয়াকত। এরপরই এক থেকে দেড় মিনিট করে ছয় বার কথা বলেন লিয়াকত ও নাজু। পরের চার মিনিটে লিয়াকতের মোবাইলে আর কোনো কল আসেনি। রাত ৯টা ৩০ মিনিটে ওসি প্রদীপ কুমার দাশকে কল দেন লিয়াকত।

প্রদীপকে কলের তিন মিনিট পর মুহুরি আরিফকে কল দেন লিয়াকত। এজাহার অনুযায়ী ওই সময়েই গুলির ঘটনা ঘটে। তবে মুহুরিকে কল দিলেও রহস্যজনকভাবে গুলির ঘটনা বলেননি লিয়াকত। রাত ৯টা ৩৪ মিনিটে কক্সবাজারের এসপি বিএম মাসুদের কাছে কল করেন লিয়াকত।

এসপিকে লিয়াকত বলেন, একজনকে ডাউন করছি স্যার, আরেকজনকে ধরে ফেলছি। আমি এখন কি করব স্যার। পিস্তল তাক করছে, পিস্তল পাইছিতো স্যার।

পাল্টা উত্তরে বিএম মাসুদ বলেন, আচ্ছা ঠিক আছে, তুমি.. তোমারে গুলি করছে, তোমার গায়ে লাগে নাই। তুমি যেটা করছ সেটা তার গায়ে লাগছে।

এরপর থেকেই লিয়াকতের মোবাইলে আরো ব্যস্ততা বেড়ে যায়। মাঝ রাত পর্যন্ত এসপি, অতিরিক্ত এসপি, ওসি প্রদীপ, জেলার ডিবির ওসির সঙ্গে কলে যোগাযোগ করেন লিয়াকত। তবে রহস্যজনকভাবে রাত ১০টা ১৩ মিনিট থেকে লিয়াকতের সঙ্গে নাজুর পাঁচবার কল ও দুইবার এসএমএসে যোগাযোগ হয়।

আরও খবর