ওসি প্রদীপের দাবী ছিল ২০ লাখ: দিতে না পারায় মিথ্যা মামলায় দীর্ঘ দেড় বছর কারাভোগ করছে দুই সহোদর

ক.জার্নাল ডেস্ক ◑
টেকনাফে পুলিশি বর্বরতা এবং সাজানো মিথ্যা মামলার শিকার হয়ে দীর্ঘ দেড় বছর ধরে কারাগারে মানবেতর দিন পার করছে মাহাবুবুল করিম ও রাশেদুল করিম নামে আপন দুই ভাই।
অনুসন্ধানে জানা যায়, বিগত ২০১৯ সালের ৩মে সন্ধ্যার দিকে চলমান মাদক বিরোধী অভিযানের দোহাই দিয়ে সাবেক (ওসি) প্রদীপের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল টেকনাফ সদর ইউনিয়ন ৮নং ওয়ার্ড শীলবুনিয়া পাড়া এলাকার বাসিন্দা মরহুম ডাঃ মোহাম্মদ হানিফের বসতবাড়ীতে হামলা চালায়। ভেঙ্গে দেওয়া হয় বসতবাড়ীতে থাকা নামিদামি জিনিস পত্র।
এসময় তাদের এই অপকর্মে বাধা হয়ে দাঁড়ায় ঘরের ভিতর থাকা ডাঃ হানিফের দুই পুত্র মাহাবুবুল করিম, রাশেদুল করিম। পুলিশ সদস্যরা তোমরা দুই ভাই ইয়াবা ব্যবসায় জড়িত আছো বলে অমানবিক নির্যাতন করতে করতে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।
সূত্রে আরো জানা যায়, ইয়াবা ও অস্ত্র উদ্ধার দেখিয়ে দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে মাদক ও অস্ত্র আইনে দুটি মামলা রুজু করে।
এব্যাপারে জানতে চাইলে তাদের গর্ভধারিনী ‘মা’ শামিমা বেগম (৫৩) কেঁদে কেঁদে বলেন, দীর্ঘ দেড় বছর ধরে কারাগারে থাকা আমার দুই ছেলে ইয়াবা ব্যবসাতো দূরের কথা কোন অনৈতিক কাজে জড়িত ছিলনা। অথচ (ওসি) প্রদীপ আমার আমার ঘরে হামলা করে ঘরের দামি জিনিসপত্র গুলো ভেঙ্গে ফেলে এমনকি ব্যবহারের মোবাইল গুলো নিয়ে যায়।। এসময় আমার দুই ছেলে তাদের এই অপকর্মে বাধা দিলে (ওসি) প্রদীপ তাদের দুইজনকে মারতে মারতে থানায় নিয়ে যায়। এরপর রাতে আমার কাছ থেকে ২০ লক্ষ টাকা দাবী করে।
আমি তাদের বলেছি আমার কাছে টাকা নেই। আমার ছেলেরা নির্দোষ তাদের ছেড়ে দেন। এরপর তাদের দাবীকৃত টাকা উদ্ধার করতে না পেরে মাদক ও অস্ত্র আইনে দুইটি মিথ্যা মামলা রুজু করে কারাগারে প্রেরণ করে।
তিনি কান্না জড়িত কন্ঠে আরো বলেন, কারাগারে থাকা আমার ছেলে মাহাবুবুল করিম টেকনাফ স্থল বন্দরের ব্যবসায়ী তার নিজের নামে রয়েছে সিএন্ডএফ লাইসেন্স। আর রাশেদুল করিম মাষ্টার্স পাশ করে কেয়ার বাংলাদেশ এনজি সংস্থার চাকরি করতো। অথচ অর্থলোভী ওসি প্রদীপ টাকার জন্য আমার নিরপরাধ দুই ছেলেকে মাদক,ও অস্ত্র আইনে অপরাধী বানিয়ে অন্ধকার কারাগারে জীবন যাপন করছে। এদিকে কারাগারে থাকা দুই ছেলের চিন্তা করতে করতে তাদের জন্মদাতা পিতা ডাঃ হানিফ দুনিয়ার মায়া ছেড়ে চলে গেছেন পরপারে। এই কথা গুলো বলতে বলতে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন ভুক্তভোগী ‘মা’ শামিমা বেগম।
তিনি সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে তার দুই ছেলের বিরুদ্ধে দায়ের করা সাজানো মিথ্যা মামলার পুর্ন তদন্ত করে তার দুই ছেলের মুক্তি কামনা করেন।

আরও খবর