জসিম উদ্দীন ◑
বাঙালীর খুবই প্রিয় এবং ঐতিহ্যবাহী বেলা বিস্কুট নিয়ে কক্সবাজারবাসী রয়েছে মহা বিড়ম্বনায়। প্রতিদিন সকাল কিংবা সন্ধ্যা চায়ের সাথে বেলা বিস্কুট সব বয়সীদের যেন নিত্য প্রিয় খাদ্য। সেই বেলা বিস্কুট যদি একই রকম প্যাকেটে ৪ ধরনের হয় ও স্বাদ ভিন্ন ভিন্ন হয় কেমন টা লাগে?
সরেজমিনে রামু কক্সবাজার ও উখিয়াতে বিভিন্ন দোকানে ঘুরে একই রকম প্যাকেটে ৫ ধরনের বেলা বিস্কুট পাওয়া যায়। কৌতুহল বসত ৫ ধরনের বেলা বিস্কুট একটি যায়গায় রাখার পর দেখতে সব স্বাদের বেলা মনে হবে।
একটি বিষয় স্পষ্ট হলাম যে, সব প্যাকেটের ডিজাইন একই রকম। বড় করে স্বাদ শব্দটার উপরে ছোট্র করে অন্য কোম্পানীর একটি নাম বসিয়ে দিয়ে তারা বিস্কুট বাজারজাত করছে। সাধারন মানুষ বেলা বিস্কুট কিনতে গিয়ে বড় অক্ষরের স্বাদ শব্দটি দেখেই কিনে নিয়ে যাচ্ছে। আদৌ এটা কি স্বাদের স্বাস্থ্যকর বেলা বিস্কুট? অরিজিনাল স্বাদের বেলার সাথে বাকি সব বেলা বিস্কুটের গুনাগুন অনেক তফাৎ তা ইতিমধ্যে বেশ কয়েকজন দোকানদার ও নিয়মিত গ্রাহকরা জানিয়েছেন। স্বাদ এবং স্বাদের বেলা সর্বজন প্রিয় সে সুবাধে গ্রাহকরা বাজারে স্বাদ দেখেই বেলা বিস্কুট কিনে ঠকছে।
বেশ কয়েকজন নিয়মিত গ্রাহক জানান,আমরা নিয়মিত স্বাদের বেলা কিনি। কয়েক মাস যাবত খেয়াল করছি খাওয়ার স্বাদ একটু ভিন্ন এবং মাঝে মাঝে লবনাক্ত ও বালি পাওয়া যাচ্ছে। পরে প্যাকেটের ঘায়ে খেয়াল করছি স্বাদ নামের আগে অন্য নাম। বিষয়টি স্বাদ কক্সবাজারের পরিচালককে আমরা অবগত করি।
মুঠোফোনে স্বাদ ফ্যাক্টরির কক্সবাজারের পরিচালক নাজিম উদ্দীন জানান, স্বাদ বহুল প্রচারিত একটি ব্রান্ড। যার রয়েছে নিজস্ব লাইসেন্স,বিএসটিআইর অনুমোদন,নিজস্ব ফ্যাক্টরি,নিজস্ব ডিলার। স্বাদের বেলার গুনাগুন সবারই জানা। স্বাদের দীর্ঘদিনের সু-পরিচিত নামটি ব্যবহার করে একটি চক্র বছরখানেক আগে কক্সবাজার রামুতে ডিলার খোলে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে কক্সবাজার ভোক্তা অধিকার ও সদর ইউএনও বরাবর অভিযোগও দায়ের করেছি।
রামু থানা সড়কে ৩টি ডিলার এই ব্যবসা নিয়ন্ত্রন করছে। কক্সবাজার জেলা জুড়ে তারা স্বাদের বেলা পরিচয় দিয়ে বিস্কুট সাপ্লাই দিয়ে আসছে। তারা স্বাদের নাম ও মান ক্ষুন্ন করতে উঠে পড়ে লেগেছে। আমি এসব অসাধু ব্যাবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করতে প্রশাসনের সু-দৃষ্টি কামনা করছি।
উক্ত ভুয়া তোহা,প্যারামাউন্ট,এশিয়ান,খাঁটি স্বাদ বেলা বিস্কুট নামিয় কোম্পানীর নামে কোন বিএসটিআইর অনুমোদন নেই বলে জানা গেছে। এসব কোম্পানীর নামিয় কোন ট্রেড লাইসেন্স ও দোকানে কোন প্রকার সাইনবোর্ডও লাগুয়া নেই। তারা চট্রগ্রাম হতে ভুয়া স্বাদের প্যাকেট তৈরী করে কক্সবাজার জেলা জুড়ে গোপনে সাপ্লাই দিচ্ছে।
সম্প্রতি,কক্সবাজারের ভোক্তা অধিকার আইন কক্সবাজার কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো: ইমরান হোসাইন বিষয়টি জানার পর অভিযান পরিচালনা করেন। তিনি জানান, অভিযোগ পেয়ে তিনি রামুস্থ থানা সড়কে উক্ত কোম্পানীর ডিলারে অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানে তারা বৈধ কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। তাই তাদের প্রাথমিকভাবে জরিমানা করা হয় এবং ৭দিনের মধ্যে বৈধ কাগজপত্র নিয়ে অফিসে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। ৭ দিন পেরিয়ে গেলেও তাদের কোন খবর পাওয়া যায়নি। শিঘ্রী তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলেও জানান তিনি।
এই বিষয়ে রামু উপজেলার চৌকস উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রণয় চাকমা জানান, আমি বিষয়টি জানতামনা। আমি শিঘ্রী বিষয়টা দেখছি ও ব্যবস্থা গ্রহন করবো।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-