রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের ৩ বছর হতে চলেছে অল্প কিছুদিন পরেই। ৩ বছর আগে মায়ানমারে পুলিশ চৌকিতে হামলার জের ধরে রোহিঙ্গাদের উপর শুরু হয় সভ্যতার ইতিহাসে সবচেয়ে বর্বর নির্যাতন। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় তাদের ঘরবাড়ি আর নির্বিচারে হত্যা করা হয় অনেককেই।প্রাণ বাঁচাতে স্রোতের মত অনুপ্রবেশ করতে থাকে বাংলাদেশে। বিভিন্ন এনজিও সংস্থার তথ্যমতে এ সংখ্যা ১২ লাখেরও বেশি।
তারা আশ্রয় নেয় উখিয়া- টেকনাফের বিভিন্ন জায়গায়,যে জায়গাগুলো ছিল বনভূমিতে পরিপূর্ণ বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য। এসব রোহিঙ্গাদের চরম প্রভাব পড়ে স্থানীয় জনসাধারণের উপর।প্রথমত,ধ্বংস হয় কক্সবাজারের দক্ষিনাঞ্চলের ২৫ হাজার একর বনভূমি। এই বনভূমি ছিল উখিয়া টেকনাফের প্রায় ১০ হাজার মানুষের জীবীকার উৎস।এই বন থেকেই কাঠ সংগ্রহ করে তারা তাদের জীবীকা নির্বাহ করত।দ্বিতীয়ত,প্রভাব পড়েছে স্থানীয়দের শ্রম বাজারে। রোহিঙ্গাদের অবাধ বিচরণের কারণে তারা ঢুকে পড়েছে শ্রম বাজারে। সস্তায় বিক্রি করছে শ্রম।ফলে বেকার হয়ে পড়েছে হাজারো শ্রমজীবী মানুষ।
এছাড়াও যাতায়াত, শিক্ষা,সামাজিক শৃঙ্খলা সহ প্রভাব পড়েছে আরো নানা ক্ষেত্রে। যার প্রভাব বর্তমানে চরম আকার ধারণ করেছে।
বিনিময়ে কি পেল স্থানীয় জনসাধারণ??
রোহিঙ্গাদের জায়গা দেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকার আর উখিয়া টেকনাফের স্থানীয়রা যে মহানুভবতা দেখিয়েছে তা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল।তার বিনিময়ে সরকার আর এনজিও ভিত্তিক সবচেয়ে সুবিধা পাওয়ার কথা এই দুই উপজেলার স্থানীয়দের।সুবিধা তো পায়নি,বিনিময়ে পেয়েছে অবহেলা আর বঞ্চনা। স্থানীয়দের অধিকারের স্থলে চলে বলে কৌশলে স্থলাভষিক্ত হয়েছে জেলার বাইরের মানুষগুলো।বিভিন্ন কৌশলে তারা কেড়ে নিয়েছে স্থানীয়দের অধিকার।
যদিও রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এনজিওতে লোকবল নিয়োগের ক্ষেত্রে ৭০% স্থানীয়দের জন্য বরাদ্দ রাখার কথা।আর এনজিওদের মোট বাজেটের ২৫% স্থানীয়দের উন্নয়নে ব্যয় করার কথা।এসব কথা কাগজে কলমেই সীমাবদ্ধ। বাস্তবে এর প্রতিফলন কতটুকু তার সবারই জানা।
উখিয়া টেকনাফের স্থানীয়রা আজ নিজে দেশে পরবাসী অবস্থা। এখানে তারা সংখ্যালঘু।তাদের দূর্দশা এখন কারো চোখে পড়েনা।দেখেও কেউ দেখেনা।
স্থানীয়দের মুখে মুখে আজ একটাই উক্তি, ফিরে দাও আমাদের অধিকার, নাহয় ফিরে নাও রোহিঙ্গা।
স্থানীয়দের এই দীর্ঘশ্বাস যেন কর্তৃপক্ষের কানে পৌঁছায় এটাই প্রত্যাশা।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-