ব্যবসায়ীরা বিপাকে

লকডাউনে আটকে পড়া মালামাল থেকে চার্জ আদায় করছে টেকনাফ স্থলবন্দর!

গিয়াস উদ্দিন ভুলু,কক্সবাজার জার্নাল ◑ 
করোনা মহামারির কারেন গত দুই মাস ধরে টেকনাফ স্থলবন্দরে আটকা পড়ে আছে হাজার হাজার কাঠের স্তুপ। সরকার সারাদেশে লকডাউন ঘোষনা করার পর থেকে মিয়ানমার থেকে আসা এসব কাঠ সরবরাহ হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে যায়।

এদিকে দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকা এই সমস্ত মালামাল থেকে টেকনাফ বন্দর কতৃপক্ষ পুরো চার্জ আদায়ে অটল ভূমিকা পালন করছেন।

ফলে ব্যবসায়ীরা দু:চিন্তার মধ্যে রয়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছে, করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার গত ২৬ মার্চ সাধারণ ছুটি ঘোষণা করায় চট্টগ্রাম বন্দর কতৃপক্ষ গত দুই মাসের চার্জ মওকুফ করে। চট্রগ্রাম বন্দর সরকারের নিদের্শনায় ৫ এপ্রিল একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে।

যেখানে করোনা বিস্তার ও সংক্রমন প্রতিরোধে সাধারন ছুটি ঘোষণার সময়ে বন্দরে কন্টেইনার বাহি জাহাজ আসছে এবং আসবে সেসব কন্টেইনার ছুটির সময়ে খালাস করা হলে তার বিপরীতে শতভাগ চার্জ মওকুফ এর ঘোষনা দেয়। সরকারের পক্ষ থেকে এমন নির্দেশনা থাকলেও তা অমান্য করে টেকনাফ স্থলবন্দর কতৃপক্ষ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত চার্জ আদায়ে অটল। ফলে টেকনাফ স্থল বন্দর ইউনাইটেড ল্যান্ড র্পোট চেয়ারম্যান বরাবর কাঠের চার্জ মওকুফ চেয়ে ৭ জুন একটি লিখিত আবেদন করেন টেকনাফ স্থল বন্দরের সিএন্ডএফ এসোসিয়েশন কতৃপক্ষ। তা এখনো সুরাহা না হওয়ায় চিন্তিত ব্যবসায়ীরা।

এ প্রসঙ্গে টেকনাফ স্থল বন্দরের সিএন্ডএফ এসোসিয়েশন সাধারন সম্পাদক এহতেশামুল হক বাহাদুর বলেন, ‘করোনা রোধে সরকার সাধারন ছুটি ঘোষনায় গত দুই মাস লকডাউনে থাকতে হয়েছে। এতে ব্যবসায়ী কোন কাঠ সরবাহ করতে পারেনি। তার মাঝে স্থলবন্দর কৃতপক্ষ কাঠ থেকে গেল দুই মাসের অতিরিক্ত চার্জ আদায়ে অটল। ফলে ব্যবসায়ীদের লাখ টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, যদি বৃহত্তম চট্রগ্রাম বন্দর কৃতপক্ষ সেখানকার ব্যবসয়ীদের স্বার্থে চার্জ মওকুফ করতে পারেন। তাহলে স্থলবন্দর কৃতপক্ষ কেন পারবেন না? আমরা চার্জ মওকুফ চেয়ে আবেদনও করেছি তা এখন পর্যন্ত কোন সুরাহ হয়নি। এইভাবে চলতে থাকলে কাঠ ব্যবসা অচল হয়ে পরবে। ফলে সরকার কোটি টাকা রাজস্ব বঞ্চিত হবে।

স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, মিয়ানমার থেকে আসা প্রায় অর্ধ লাখ পিস বিভিন্ন প্রকারে কাঠ টেকনাফ স্থলবন্দরে পরে আছে। এসব কাঠ দেখবাল করছেন বন্দরকতৃপক্ষ। কাঠগুলো লকডাউনের কারনে সরবরাহ দিতে পারেনি ব্যবসায়ীরা। বন্দরকতৃপক্ষ এসব কাঠ থেকে কোন প্রকার অতিরিক্ত চার্জ আদায় করা হচ্ছে না। করোনার আগে যে পরিমান চার্জ আদায় করা হতো, তা নেওয়া হচ্ছে। তবে মিয়ানমার কাঠ রপ্তানি না করলেও সেখান থেকে কোটি টাকার কাঠ টেকনাফ স্থলবন্দরে আসছে। তার বিপরীতে সরকারও রাজস্ব পাচ্ছে।

স্থলবন্দর কাঠ ব্যবসায়ীরা বলেন, ‘লকডাউনের কারনে আমাদের লাখ লাখ টাকার কাঠ বন্দরে পড়ে আছে। এসব কাঠ বৃষ্টির কারনে অধিকাংশ নষ্ট হওয়ার পথে। তার উপরে বন্দর কতৃপক্ষ এসব কাঠ থেকে অতিরিক্ত চার্জ আদায় করছে। আমাদের মত এখন অনেক কাঠ ব্যবসায়ী কাঠ নিয়ে দুঃচিন্তার মধ্যে রয়েছে।

এ বিষয়ে টেকনাফ স্থল বন্দর ইউনাইটেড ল্যান্ড র্পোট ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ জসীম উদ্দীন চৌধুরী বলেন, ‘ কাঠ থেকে অতিরিক্ত চার্জ আদায়ের বিষয়টি সর্ম্পূণ মিথ্যা। আমরা আগের নিয়মে চার্জ নিচ্ছি। এ ব্যাপারে সরকারের নির্দশনার কোন চিঠি এবং চট্রগ্রাম বন্দররে চার্জ মওকুফের বিষয়ে অবগত নই।

তিনি আরও বলেন, তবে টেকনাফ সিএন্ডএফ এসোসিয়েশন এর পক্ষে থেকে কাঠের চার্জ মওকুফের আবেদন পেয়েছি। সেটি উর্দ্ধতন কতৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোন নির্দেশনা আসেনি।

আরও খবর