কক্সবাজারে পুষ্টি নিরাপত্তায় বসতবাড়ীতে সবজি বাগান কার্যক্রম এগিয়ে যাচ্ছে!

নিজস্ব প্রতিবেদক ◑

কক্সবাজারে কৃষকদের সবজি চাষে উদ্বুদ্ধ করতে ব্যতিক্রমধর্মী উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। করোনা আতঙ্কের কারণে অলস সময় কাটানো কৃষকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিনামূল্যে তুলে দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন প্রকার সবজির বীজ। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কক্সবাজার জেলার উপ পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ আবুল কাশেম কৃষি কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে কৃষকদের হাতে এই বীজ তুলে দিয়েছেন।

বিনামূল্যে এই বীজ পেয়ে কৃষকরাও খুশি। বাড়ির আঙ্গিনায় এই বীজ বপন করছেন তারা। এতে একদিকে যেমন পতিত জমির ব্যবহার নিশ্চিত হবে, অপরদিকে করনো পরবর্তী সময়ে সবজির ঘাটতি দূর হবে।

কক্সবাজার জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চাষিদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সঠিক দিক নির্দেশনা দেওয়ার পাশাপশি বিনামূল্যে হাইব্রিড ঢেড়স, করলা, লাউ, চিচিংগা, ডাটাশাক কলমি শাকসহ বিভিন্ন প্রজাতির বীজ বিতরণ করা হচ্ছে।

উখিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ দোলন চন্দ্র রায় জানান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কক্সবাজার জেলার উপ পরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ আবুল কাশেম স্যারের সরাসরি তদারকিতে এসব বাস্তবায়ন হচ্ছে এবং প্রদর্শনী হবে। এছাড়াও কৃষকরা একটি প্রদর্শনী বাবদ প্রায় ২ হাজার টাকা করে পাবেন।

তিনি আরও বলেন, করোনা মহামারীতে কৃষকরা যাতে তাদের সময়কে কাজে লাগাতে পারে তার জন্য এই প্রয়াস। ডিডি স্যারের নির্দেশ পালন করতে গিয়ে কৃষকদের ভালোবাসা এবং আন্তরিকতা পেয়েছি বেশী। এখন কৃষকরা যখন এসে বলছেন, বিনামূল্যে পাওয়া সবজির বীজ নিয়ে তারা খুশি, এখন অনেক ভালো লাগছে।

রত্নাপালং এর কৃষক উজ্জ্বল বড়ুয়ার জানান, নিজেদের ভাগ্য নিজেরাই বদলাব। আধুনিক চাষাবাদের মাধ্যমে নিজেরাই ফলাব বিষমুক্ত স্বাস্থ্যসম্মত সবজি, ঘরে তুলব। পারিবারিক পুষ্টি বাগান পরিবারের সব সদস্যদের অংশগ্রহণে সহজেই করতে পেরেছি। আর এতে পারিবারিক পুষ্টি চাহিদা পূরণ করে বাড়তি সবজি বিক্রি করে নগদ টাকাও পাওয়া যাবে। কৃষি বিভাগ থেকে বিনামূল্যে বীজ,পরামর্শ ও সহযোগিতা পেয়ে করোনার এই দুঃসময়ে আমরা সবাই লাভবান হচ্ছি। পরিকল্পিত পরিপূর্ণ ব্যবহার করতে শিখেছি। আঙিনায় সবজি-ফলের বাগান, ঘরের চালে মিষ্টিকুমড়া ও স্যাঁতসেঁতে স্থানে কচু জাতীয় সবজি উৎপাদন করে পুষ্টি বাগান গড়ে তুলতে পেরেছি।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কক্সবাজার জেলার উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ আবুল কাশেম বলেন, কৃষিক্ষেত্রে করোনা ভাইরাস আতঙ্কের কোনও প্রভাব যাতে না পড়ে, সেজন্য চাষিদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সঠিক দিক নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। পাশাপশি কৃষকরা যাতে অলস সময় পার না করে, সেজন্য তাদের কৃষি কাজে উদ্বুদ্ধ করতে কাজ করছি সবাই মিলে।’

তিনি আরও বলেন, কৃষক ও কৃষির উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে কৃষি বিভাগ। কৃষকদের জীবনমানের উন্নয়নে ভূমিকা পালন করছে। এর মাধ্যমে তারা আধুনিক চাষাবাদ ও বসতবাড়িতে সবজি-পুষ্টি বাগান তৈরি ও পতিত জমির সুষ্ঠু ব্যবহার জানতে ও শিখতে পারছেন।

উল্লেখ্য যে, বসতবাড়িতে সবজি পুষ্টি বাগান প্রকল্পের আওতায় কক্সবাজার জেলার ৬০ টি ইউনিয়নে ১৯২০ টি ক্ষুদ্র প্রান্তিক কৃষক পরিবারের মাঝে ৯ রকম জাতের গ্রীষ্মকালীন সবজি চাষ শুরু হয়েছে। একশতক জায়গায় ৫ বেডে ৯ প্রকারের শাক সবজি রোপন করা হচ্ছে। আর এ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে প্রদর্শনীও হচ্ছে। আর এসব বাস্তবায়নে সার্বিক সহযোগিতা করে যাচ্ছেন কক্সবাজারের বিভিন্ন উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা ও উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাবৃন্দ।

আরও খবর