কক্সবাজার শহরে মৃত্যুর ১৪ ঘন্টা পর জানা গেল তিনি ‘করোনা পজিটিভ’!

আনছার হোসেন,সিভি ◑

কক্সবাজার শহরের তারাবনিয়ারছড়া এলাকার বাসিন্দা খোরশেদ আলম (৬২) করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে আজ বুধবার (২০ মে) ভোর সাড়ে ৪টার দিকে মারা গেছেন। দুপুরে স্বাভাবিক পদ্ধতিতেই তার জানাযা শেষে দাফন কাজ শেষ করা হয়েছে। কিন্তু মৃত্যুর প্রায় ১৪ ঘন্টা পর জানা গেল তিনি ছিলেন ‘করোনা পজিটিভ’!

কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের এক বিশ্বস্থ সুত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সুত্র মতে, জ্বর, সর্দি ও কাশি উপসর্গ দেখা দেয়ায় খোরশেদ আলম (৬২) গত ১৭ মে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে করোনার নমুনা জমা দেন। নমুনা জমা দেয়ার পর থেকেই তিনি শহরের তারাবনিয়ারছড়া জামে মসজিদের কাছাকাছি নিজের বাড়িতেই অবস্থান করছিলেন। সেখানেই তিনি আজ বুধবার (২০ মে) ভোর সাড়ে ৪টার দিকে মারা যান।

স্থানীয় সুত্র মতে, করোনার নমুনা জমা দেয়ার বিষয়টি গোপন করে বুধবার দুপুরেই স্বাভাবিক পদ্ধতিতে জানাযা শেষে তাকে দাফন করে ফেলা হয়েছে।

এদিকে সন্ধ্যা ৬টার দিকে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ল্যাব থেকে আজ বুধবার টেষ্ট হওয়া সন্দেহভাজন করোনা রোগীদের রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। ওই রিপোর্টে কক্সবাজার সদরের করোনা ‘পজিটিভ’ হওয়া ১১ জনের মধ্যে খোরশেদ আলমও একজন।

তার এক নিকটাত্মীয় জানান, করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু হওয়া খোরশেদ আলমের চার ছেলে-মেয়ে। দুই ছেলে প্রবাসি। দুই মেয়ে বিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু দুই মেয়েই বর্তমানে বাবার বাড়িতে অবস্থান করছেন। তাদের একজন সন্তান প্রসবজনিত কারণে বাবার বাড়িতে আসেন। আরেকজন এই করোনা পরিস্থিতিতে চট্টগ্রামের শ্বশুর বাড়িতে বাবার বাড়িতে এসেছেন।

সুত্র মতে, মৃত্যুকালে খোরশেদ আলমের বাড়িতে তার স্ত্রী, দুই মেয়ে ও সদ্যপ্রসূত এক নাতিসহ দুই নাতি ছিলেন।

স্থানীয় সুত্র মতে, তারাবনিয়ারছড়া কবরস্থান মাঠে খোরশেদ আলমের জানাযার নামাজ অনুষ্টিত হয়। ওই জানাযায় ৫০ জনের অধিক মানুষ অংশ নেন। পরে তাকে রুমালিয়ারছড়া মসজিদ কবরস্থানে দাফন করা হয়।

অন্যদিকে খোরশেদ আলমের মৃত্যুর পর তার সংস্পর্শে আসা, মরদেহের গোসল, দাফনে যারা জড়িত ছিলেন তারা সবাই এখন আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন।

কক্সবাজার সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আলী এহসান কক্সবাজার ভিশন ডটকমকে জানান, রোগী মারা যাওয়ার বিষয়টি তারা জানতে না।

তিনি বলেন, স্বাভাবিক পদ্ধতিতে জানাযা হলেও তেমন কোন সমস্যা নাই। মৃত্যুর পর করোনাভাইরাস ছড়ানোর তেমন আশংকা থাকে না, যদি সতর্কতার সাথে দাফন কাজ শেষ করা হয়।

তবে তার সংস্পর্শে আসা আত্মীয় ও লোকজনদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, করোনায় মৃত খোরশেদ আলম দীর্ঘদিন দুবাই প্রবাসি ছিলেন। তার পৈত্রিক বাড়ি টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের নয়াবাজার এলাকায়। তিনি বহুবছর আগে থেকেই কক্সবাজার শহরের তারাবনিয়ারছড়ায় বসবাস করছেন। তার শ্বশুরবাড়ি কক্সবাজার শহরে।

আরও খবর