করোনায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চাকরি হারা স্থানীয়রা

এইচ.এম এরশাদ ◑

করোনা পরিস্থিতিতে ২ মাস যাবৎ জেলার স্থানীয় অর্ধলাখ কর্মী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কর্মস্থলে যেতে পারছেনা। ফলে তাদের বেতন ভাতাও বন্ধ রেখেছে এনজিওগুলো। তবে ঠিকই চালু আছে রোহিঙ্গা ছেলে মেয়েদের কার্যক্রম। সময়মত বেতন ভাতাও পাচ্ছে তারা। কিছু সংখ্যক এনজিও লকডাউনে রোহিঙ্গাদের কর্মস্থলে নিয়োগ করেছে বলে জানা গেছে।

মহেশখালী গোরকঘাটার ওসমান, আবদুর রশিদ বলেন, আমরা কক্সবাজার সরকারি কলেজে মাস্টার্স শেষ বর্ষের ছাত্র। বর্তমানে একটি এনজিও সংস্থার হয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কর্মরত আছি। আমরা স্বাস্থ্য বিভাগে কাজ করতাম। তবে বর্তমান করোনা পরিস্থিতির কারনে অফিস থেকে আমাদের ক্যাম্পে না যেতে বলা হয়েছে। মার্চ মাসের শুরুর দিকে বেতন ঠিকমত দিলেও বর্তমানে মে মাসের মাঝামাঝি, তারা বলেছেন আবার কাজ শুরু হলে বেতন দেয়া হবে। অথচ আমরা পরিস্কার জানি তারা রোহিঙ্গা ছেলে মেয়ে দিয়ে কাজ করাচ্ছে এবং বেতনও দিচ্ছে। তাদের মূলত দৈনিক মজুরী হিসেবে দেখিয়ে মাসে অন্তত ১৫-২০ হাজার টাকা দেয়া হচ্ছে। উখিয়া ভালুকিয়া এলাকার নাছিমা আক্তার ও রৌশন আক্তার বলেন, আমরা সহ এলাকার অনেকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চাকরী করতো, কিন্তু বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে কেউ আর ক্যাম্পে যেতে পারছেনা। সে জন্য আমাদের বেতনও বন্ধ। সেখানে আগে থেকে কর্মরত কোন রোহিঙ্গার চাকরী যায়নি বরং তাদের কাজ বেতন দু’টাই বেড়েছে। আমাদের কর্মকর্তারা রোহিঙ্গাদের দিয়ে এখন সব কাজ করাচ্ছে।

শফিউল আলম নামের এক এনজিওর কর্মকর্তা বলেন, কক্সবাজারের মানুষ চিন্তাও করতে পারবেনা ক্যাম্পে কি হচ্ছে, এবং সামনে কি হবে। আসলে ২০১৭ সালের দিকে আমরা যা বলতাম তা অপকটে মেনে নিত রোহিঙ্গারা। এখন কেউ কথা শুনেনা বরং তাদের বিভিন্ন দাবি দাওয়া নিয়ে প্রতিবাদ করে। কিছু হলে উল্টো গালিগালাজ করে। এমনকি মহিলারাও তেড়ে আসে। পুলিশ সহ আইন শৃংখলা বাহিনী বাধা দিলেও শুনেনা। আর ক্যাম্পে সর্বনি¤œ ১৫ হাজার টাকা করে কমপক্ষে ২০ হাজার রোহিঙ্গা ছেলে মেয়ে চাকরি করে। মূলত ২/৩ টি আর্ন্তজাতিক সংস্থাই সব নষ্টের মুল। তাদের আশ্রয়ে প্রশ্রয়ে রোহিঙ্গাদের নিয়ন্ত্রন করা যাচ্ছেনা। যেহেতু মাদার এনজিওর টাকা দিয়ে কয়েকশত এনজিও চলে, তাই তাদের কথার বাইরে কেউ কিছু করতে পারেনা। বর্তমানে ৭০ভাগ স্থানীয় ছেলেমেয়ে ক্যাম্পে যেতে পারেনা। সব কাজ করে সেখানকার রোহিঙ্গারা। যারা প্রতিনিয়ত বেতনও পাচ্ছে আবার রেশন সুবিধাও পাচ্ছে।

স্থানীয়রা বলেন, আমরা প্রথম থেকে বলে আসছি মাঝিপ্রথা বাতিল করার জন্য এবং কোন রোহিঙ্গা ছেলে মেয়ে যেন ক্যাম্পে চাকরীর সুবিধা না পায়। কিন্তু আর্ন্তজাতিক কিছু এনজিও সরকারকে উপর থেকে ম্যানেজ করে ভুল বুঝিয়ে ক্যাম্পে নামে বেনামে রোহিঙ্গাদের কাজ করার সুযোগ দিয়েছে। দৈনিক ভিত্তিতে বলে মূলত মাসিক বিপুল টাকা দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে। স্থানীয়দের চেয়ে কম টাকা দিয়ে কাজ করাতে পারছে বলে তারা রোহিঙ্গাদের সুবিধা দিচ্ছে। আবার এনজিওর শীর্ষ কর্মকর্তারা ও ১০ জন কাজ করলে ২০ জনের বেতন দেখিয়ে বাকি টাকা আত্মসাৎ করতে রোহিঙ্গাদের বেশি সুবিধা দিচ্ছে।

আরও খবর