রাজু দাশ, চকরিয়া ◑
কক্সবাজারের চকরিয়ায় বসতবাড়ি দখল নিতে দুর্বৃত্তরা ভোর মধ্যরাতে পেট্রল ছিটিয়ে আগুন দিয়ে সবকিছু জ্বালিয়ে দিয়েছে ২৬টি বসতবাড়ি লুট করে নিয়েছে টাকা, গবাদিপশু, মূল্যবান মালামালসহ অন্তত কোটি টাকার সম্পদ। এ সময় আগুনে পুড়ে মনোয়ারা বেগম নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। গুলিবিদ্ধ ও হামলায় আহত হয়েছেন নারী,পুরুষ, বৃদ্ধ, অন্তত ২০ জন।
আহতদেরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। তার মধ্যে কয়েকজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেপার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৪ মে) চকরিয়া উপজেলার কৈয়ারবিল ইউপির খিলছাদক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত মনোয়ারা বেগম (৫৫) একই এলাকায় মোজাহের আহমদের স্ত্রী।
আহতদের মধ্যে যাদের নাম পাওয়া গেছে, তারা হলেন মারা যাওয়া বৃদ্ধার স্বামী মোজাহের আহমদ (৭০), শাহ আলমের ছেলে ও ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ন আহবায়ক সাজ্জাদ হোসেন (২৫), আকতার আহমদের ছেলে মো. মুরাদ (২৩), হাজি আবু তাহেরের ছেলে আবু ছালেক (৪২), এজাহার আহমদের ছেলে নবীর হোছাইন (৫০), গুলিবিদ্ধ দুইজন ফজল করিমের ছেলে মো. বাবলু (২২) ও হাবিবুর রহমানের ছেলে মো. আলম (৪৫)।
স্থানীয় লোকজন সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে খিলছাদক গ্রামের বেশ কিছু পরিবারের বিশাল অংশ মাতামুহুরী নদীর ভাঙনের কবলে পড়ে নদীতে বিলিন হয়ে যায়। তবে কয়েক বছর ধরে নদীতে তলিয়ে যাওয়া সেই জায়গা নতুন করে জেগে উঠেছে। সেই জায়গায় বসতি গড়ে তোলে। কিন্তু নদীর ওপারের পার্শ্ববর্তী ইউপি বরইতলীর গোবিন্দপুর গ্রামের সশস্ত্র লোকজন এপার এসে বারবার জেগে ওঠা জায়গা দখলে নেয়ার চেষ্টা করে আসছিলো।
এ ঘটনায় নিয়ে একাধিক মামলাও চলমান রয়েছে। বৃহস্পতিবার মধ্য রাতে ঘুমন্ত মানুষদের উপর সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা এসে লাঠিসোটা নিয়ে শতাধিক দুর্বৃত্ত হামলা চালায়। এ সময় ঘরবাড়িতে পেট্রোল ঢেলে আগুন দেওয়া হয়। আগুনে ধান, চাউলসহ ঘরে প্রায় সব কিছু পুড়ে যায়। এ মর্মান্তিক ঘটনা নিয়ে এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
ঘটনাস্থলে ছুটে যান, এমপি জাফর আলম, (ইউএনও) সৈয়দ শামসুল তাবরীজ, ওসি মো. হাবিবুর রহমান, উপজেলা ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা মো. সাইফুল হাছান, উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক কাউছার উদ্দিন কছির, হারবাং পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম, এসআই অপু বড়ুয়া।
ঘটনাস্থলে পরিদর্শনে কক্সবাজার ১ আসনের সাংসদ ও চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাফর আলম বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত ২৬ পরিবারকে প্রাথমিকভাবে ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে এক বস্তা করে চাল, দুই বান্ডিল ঢেউটিন ও সরকারিভাবে আরো দুই বান্ডিল করে ঢেউটিন প্রদান করা হয়েছে। যাতে তাদের খাদ্য ও বাসস্থান নিশ্চিত হয়। তা ছাড়া সরকারিভাবেও তাদেরকে সার্বিক সহায়তা দেওয়া হবে। আর যারাই এই নারকীয় জড়িত তাদেরকে খুঁজে বের করে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পুলিশকে।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-