মাহে রমজান। পবিত্র গ্রন্থ কুরআন অবতীর্ণের মাস। ক্ষমা ও মুক্তির মাস। এ মাসে ফরজ করা হয়েছে সিয়াম সাধনা ও সুন্নাত করা হয়েছে সালাতুত তারাবি। এ মাস বহুমাত্রিক বৈশিষ্ট্যের আধার।
এ মাসটির ফযীলত ও বারাকাত অর্জন করতে হলে, বিশেষ করে সিয়াম সাধনার যে ফযীলত তা অর্জন করতে হলে আল্লাহ যেভাবে রোজা চেয়েছেন, নবীজী (সা.) যেভাবে রোজা দেখিয়েছেন ওভাবেই পালন করতে হবে। এবং জানতে হবে নবীজী কীভাবে এ মাসের হক আদায় করতেন। আদাব রক্ষা করতেন, আল্লাহর দরবারে কীভাবে ফরিয়াদ করতেন।
php glass
রাসূল (সা.) দু’মাস পূর্ব থেকেই রমজানের প্রস্তুতি গ্রহণ করতেন। মহান রবের দরবারে রমজান পাওয়ার জন্য দরখাস্ত করতেন যে ‘হে আল্লাহ আমাদের রজব-শাবানে তুমি বরকত দান করো এবং রমজান পর্যন্ত পৌঁছিয়ে দাও’। (ছহীহ আল মুজামুল কবীর, হাদীস নং-৩৯৩৯)।
ksrm
সাহাবাদেরকে সিয়ামের প্রতি উৎসাহ প্রদান
নবীজী (সা.) নিজে রমজানের প্রস্তুতি গ্রহণ করতেন এবং সাহাবায়ে কেরামকে সিয়াম ও সালাতের প্রতি উৎসাহ দিতেন। নিজ পরিবারের সদস্যসহ সব সাহাবী ও সমগ্র মুসলিম উম্মাহ যেন রমজানের বরকত লাভ করতে পারে তাই সবাইকে পূর্ব থেকে সচেতন করতেন। ইরশাদ করতেন রমজান মাসের গুরুত্ব ও বিভিন্ন আমলের ফযীলত।
যেমন সালমান ফারসী (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল (সা.) শাবান মাসের শেষ তারিখে আমাদের ভাষণ দিলেন এবং বললেন, ‘ হে লোক সকল তোমাদের উপর ছায়া বিস্তার করছে একটি মর্যাদাশীল বরকমময় মাস, যাতে এমন একটি রাত রয়েছে যা হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ, আল্লাহ তায়ালা এ মাসের রোজা তোমাদের উপর ফরজ করেছেন ও কিয়ামুল্লাইল তথা তারাবির নামাজকে করেছেন পূণ্যের কাজ।’
এ মাসে ব্যক্তি আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের আশায় একটি নফল কাজ করলো, সে যেন ওই ব্যক্তির ন্যায় যে একটি ফরজ আদায় করলো। আর যে ব্যক্তি একটি ফরজ আদায় করলো, সে যেন ওই ব্যক্তির ন্যায় যে অন্য মাসে সত্তরটি ফরজ আদায় করলো। এ মাস ধৈর্যের মাস, যার বিনিময় হলো বেহেশত।
এ মাস সহানুভূতির মাস, এ মাসে বৃদ্ধি করা হয় মুমিনের রিজিক, যে ব্যক্তি রোজাদারকে ইফতার করাবে ইহা তার গুনাহের ক্ষমা ও দোযখ থেকে মুক্তির কারণ হবে। তথাপি সে রোজাদারের সমপরিমাণ সাওয়াব প্রাপ্ত হবে, তবে রোজাদারের সাওয়াব হ্রাস করা হবে না।
লেখক: মুফতি ও মুহাদ্দিস। জামেয়া ইসলামিয়া আজিজিয়া, ছাগলনাইয়া-ফেনী। খতিব-ছাগলনাইয়া মধ্যম বাজার জামে মসজিদ।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-