স্বাস্থ্যবিধি মেনে ১০ মে থেকে সীমিত আকারে দোকানপাট খোলার সম্প্রতি নির্দেশনা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপরও করোনা বিস্তাররোধে রাজধানীসহ জেলা-উপজেলা শহরের ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন মার্কেটে মালিক সমিতি দোকানপাট না খোলার সিন্ধান্তের কথা জানিয়েছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মতে ১০ মে ভোর থেকে লকডাউন শিথিল করা হয়েছে। উঠে গেছে বিভিন্ন এলাকার চেকপোস্ট। ফলে উৎসবের আমেজ নিয়ে বাজারে ও পথে ঘাটে বেরিয়ে পড়েছেন অচেতন মানুষগুলো।
১০ মে থেকে লকডাউন শিথিল করার ঘোষনা আসলেও গত ৮ মে থেকে কক্সবাজারের বিভিন্ন উপজেলায় তেমন কেউ কলডাউন মেনে আসেনি। যদিও শুরু থেকেই লকডাউন তেমন একটা মেনে চলেনি স্থানীয় বাসিন্দারা। লকডাউনের বিষয়টি অনেকটাই ‘কিতাবে আছে, গোয়ালে নেই’-অবস্থা ছিলো।
শনিবার (৯ মে) রামু উপজেলার কলঘর বাজার, রামু বাজার, জোয়ারিয়ানালা বাজার, চৌমুহনী, সদরের ঈদগাহ, বাংলা বাজার, খরুলিয়া বাজার, উপজেলা বাজারসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।
এছাড়া শহরের অলিগলিগুলোর তো একেবারেই নাজুক অবস্থা। সেখানে প্রতি মুহুর্তেই মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছেন, আড্ডা দিচ্ছেন। পাশাপাশি বসেছে ইফতারির দোকান। সেখানে নিরাপদ শারীরিক দূরত্ব না মেনেই চলছে বিক্রিও। ইফতারির দোকানে নেই নিরাপদ শারীরকি দূরত্ব।
এদিকে জেলা মার্কেটে ওনার্স এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি এবং কক্সবাজার চেম্বার অফ কমার্স সবাইকে নিয়ে সভা করে জানিয়ে দিয়েছেন ঈদ পর্যন্ত কোন মার্কেট খোলা হবেনা। এই ঘোষনা জানার পর মানুষের মাঝে করোনা বিস্তাররোধে আতংক কমলেও আজকের (১০ মে) লোকসমাগম বেড়ে যাওয়ার কারণে আবার আতংক ভর করছে।
কারণ করোনা নিয়ন্ত্রণে এ জেলাকে গত ৮ এপ্রিল থেকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছিলো। পাশাপাশি করোনার নমুনা পরীক্ষায় কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে স্থাপন হয় করা হয় পিসিআর ল্যাব, লকডাউনের কারণে নিয়ন্ত্রন থাকায় প্রথম প্রথম করোনা রোগী সনাক্ত হয়েছে কম কিন্তু সম্প্রতি এটি উৎবেগজনক হারে বেড়েছে। যার কারণে জনচলাচল ও লোক সামাগম বেড়ে যাওয়ায় করোনা প্রাদুর্ভাবের আতংক আরো বেড়েছে কয়েকগুন।
শহরের চেয়ে গ্রামের প্রায় প্রতিটি এলাকার প্রায় দোকান ও বিভিন্ন উপজেলার প্রতিটি এলাকায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলেছে বলে বিভিন্ন এলাকা থেকে জনপ্রতিনিধি ও সচেতন মহল জানিয়েছেন। রয়েছে মানুষের ভিড়ও। এদের অধিকাংশের শরীরে নিরাপত্তামূলক কোন ব্যবস্থা নেই। পাশাপাশি কেউই বজায় রাখছেন না নিরাপদ শারীরিক দূরত্বও।
জরুরি ওষুধ কোম্পানির সেবায় নিয়োজিত জাকির হোসেন জানান, কয়েকদিন আগেইও বিভিন্ন এলাকায় এতটা স্বাভাবিক জীবনযাত্রা দেখিনি। তখনো রামুতে দেখতাম মানুষ জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বের হতো না। কিন্তু গত চার থেকে পাঁচ দিন ধরেই একেবারেই স্বাভাবিক হয়ে গেছে প্রতিটি উপজেলার মানুষের চলাফেরা। তিনি আরোও বলেন, বৃহস্পতিবার (৭ মে) চৌমুহনী মোড়ে যানজটে আটকাও পড়ে ছিলাম। আমি তো ভেবেছি লকডাউন উঠে গেছে। নিরাপদ শারীরিক দূরত্ব না মেনেই চলছে চলাচল।
রামু চৌমুহনী এলাকায় ওষুধ কিনতে আসা শহিদুল্লাহ বলেন, আমি তো লগডাউনের পর বাসা থেকে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বের হইনি। দুপুরে বের হয়ে কিছুটা অবাক হয়েছি। তার মানে কি শুধু আমিই লকডাউন মানছিলাম! আর কেউ লকডাউন মানেনি, নাকি লকডাউন উঠিয়ে নেওয়া হলো?
এবিষয়ে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ আশরাফুল আফসার বলেন, প্রশাসন নিজের মতো করে সবকিছু নজরে রাখছে, যেখানে লোকজনের জটলা দেখা যাবে সেখানে তাদেরকে বুঝানো হবে। স্ব্যাস্থবিধি না মানলে মোবাইল কোটের মাধ্যমে শাস্তির আওতায় আনা হবে। তবে ব্যাক্তি নিজেকে সচেতন হতে হবে বলে তিনি জানান।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-