এম আমান উল্লাহ আমান, টেকনাফ ◑
টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের ডেগিল্যার বিল গ্রামের সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্ম নেই সাইমা আফরোজা। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস জন্মের ১ বছর বয়সে হারায় জন্মদাতা রশিদ আহমদকে।
পিতৃহীন এতিম শিশু সাইমার ২ বছর বয়সে নেমে আসে জীবনের আরেক কালো অধ্যায়। খেলার মাঠে বাতাসে বালু বা ধূলিকণা উড়ে সাইমার চোখে এসে পড়ে। স্বামী হারা বিধবা মা ফাতেমা খাতুন কোন মতে মেয়ের চোখের চিকিৎসা করালেও অপারেশনের সময় চোখে বালি বা ময়লা বের করার ভুল চেষ্টার কারণে তার একটি চোখ নষ্ট হয়ে আজ ক্যান্সারে আক্রান্ত ৬ বছর বয়সী শিশু সায়মা আফরোজা।
অন্যান্য শিশুদের মত পড়া-লেখা, খেলাধুলার বদলে তার দিন যাচ্ছে ব্যথা আর যন্ত্রণায়। দীর্ঘ চার বছর ধরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায় ক্যান্সারে আক্রান্ত শিশু সায়মার দীর্ঘ চিকিৎসা চালাতে গিয়ে বাবার অর্জিত সম্পদ জমি-জমা বিক্রি করে লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় করে পরিবারও এখন প্রায় নিঃস্ব।
সায়মা আফরোজার মা বিধবা ফাতেমা খাতুন জানান, সায়মার চোখে বালি পড়ায় চোখ অপারেশনে ভুল চিকিৎসায় জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে পরবর্তীতে তার ক্যান্সার শনাক্ত হয়। প্রতিমাসে একটি কেমোথেরাপি নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চট্রগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ডাঃ তাপস মিত্র। ডাক্তারের পরামর্শেই প্রতিমাসে কেমোথেরাপি দিতে না পারলেও দুই বছরে ছয়টি কেমোথেরাপি দিতে সক্ষম হয়। এখন অভাবে নিজের কন্যাকে বাচাঁনোর জন্য টাকা পয়সা না থাকায় এলাকাবাসীর সহায়তা ছাড়া আর কোন উপায় নেই।
শিশু সাইমার চিকিৎসায় কয়েক লক্ষ টাকার প্রয়োজন। মেয়েকে বাঁচাতে সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছেন বিধবা মা ফাতেমা খাতুন।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম সাইফ ও এলাকার কিছু যুবকের একান্ত উদ্যোগে পুনরায় চিকিৎসার উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানান সাইমার মা। বর্তমান মেয়ে’র চিকিৎসায় চট্রগ্রাম মেডিকেলে অবস্থান করছে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম সাইফ বলেন , আমার/আপনার সকলের বাড়িতে সন্তান-সন্ততি আছে। কালের পরিক্রমায় আজ বিধবা মা ফাতেমার শিশু মেয়ে ক্যান্সারে আক্রান্ত। এ মেয়ে আমার হলে যেমন আমি ঘরে বসে থাকা অসম্ভব হত তেমনি ছোট্ট এই শিশুটির কান্না বেচেঁ থাকার আকুতি মায়ে’র আহাজারি আমাকে ব্যতীত করে। তাই অন্যের মেয়ে না ভেবে নিজের মেয়ের মতো দেখে শিশুটির চিকিৎসা নেওয়ার জন্য তার পরিবারকে উৎসাহ ও সাহস প্রদান করি। “মানুষ মানুষের জন্য” তাই একটি নিস্পাপ শিশুকে বাচাঁনোর প্রচেষ্টায় মানবতার হাত বাড়িয়ে সকলকে এগিয়ে আসার আহবান জানানন তিনি।
বিধবা ফাতেমা কান্না বিজড়িত কন্ঠে আবেদন করে বলেন, ইনশাআল্লাহ দেশ-বিদেশ, প্রবাসী ও এলাকাবাসীর সহযোগিতা পেলে হয়তো আমার নিস্পাপ মেয়ে আবারো স্বাভাবিক জীবন ফিরে পাবে।
সায়মা’র চিকিৎসায় সহযোগিতা পাঠানোর ঠিকানা: বিকাশ – ০১৮২২২৩৯৯৯৯,০১৮৫৭৭৩৪২২৮, নগদ-০১৮২২২৩৯৯৯৯ এবং কারেন্ট একাউন্ট-০০১-১০০-১২০৮, ঢাকা ব্যাংক, টেকনাফ শাখা।
উল্লেখ্য : সায়মার জন্য সহযোগিতা তহবিলে বিকাশ/নগদ ও সরাসরি ২০০+২০০+৪০+৫১০+১০৫+২০৪০+২০০+৬০০০+১০০০+৭০০ মোট ১২৭৯৫ টাকা জমা হয়েছে। সকল অনুদান দাতার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে সাইমা’র মা।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-