বিজিবির কঠোর প্রতিরোধের মুখে পিছু হটলো অনুপ্রবেশ চেষ্টাকারী রোহিঙ্গারা

রফিকুল ইসলাম, উখিয়া ◑

ফাইল ছবি

মিয়ানমার উত্তর রাখাইন থেকে আবারও  রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ সীমান্ত অভিমূখে ঠেলে দেওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার থেকে কয়েক গ্রুপ রোহিঙ্গা সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে অনুপ্রবেশের জোর চেষ্টা চালাচ্ছে। এ ধরনের একটি দল রোববার(১২ এপ্রিল) ভোরে তুমব্রু সীমান্ত দিয়ে প্রবেশের চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়েছে      বিজিবি সদস্যরা।

রাখাইনে চলমান সংঘাতে ঘর বাড়ী হারা ও সদ্য বিভিন্ন জেল থেকে মুক্তি পাওয়া রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক সীমান্তের দিকে এনে জড়ো করার সংবাদ পাওয়া যায়। এধরনের শতাধিক রোহিঙ্গা উখিয়া ও  টেকনাফের বিভিন্ন সীমান্তে পয়েন্ট দিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টায় বিজিবি কঠোর অবস্থানে টহল জোরদার করেছে।

উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নেতা নুরুল আলম ও মোঃ ইলিয়াস জানান, গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে রাখাইনে সরকারী ও সেখানকার জাতিগত সশস্ত্র বিদ্রোহী বাহিনীর মধ্যে সংঘাত চলে আসছে। উভয় পক্ষের সংঘর্ষের মধ্য পড়ে রাখাইনের রাচিডং ও বুচিডং এলাকায় কয়েকশো রোহিঙ্গা গৃহহীন হয়ে পড়েছে। সংঘাতের কবলে পড়া অনান্য জাতিগোষ্ঠীর উদ্বাস্তু লোকজন আশ্রয়সহ বিভিন্ন সহায়তা পেয়ে থাকে। পক্ষান্তরে অভ্যন্তরীন বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা মানবেতর দিন অতিবাহিত করতে বাধ্য হচ্ছে।

অপর রোহিঙ্গা নেতা সিরাজুল মোস্তফা বলেন, মিয়ানমারের এক এলাকার লোকজন অন্য এলাকায় বিনা অনুমতিতে যাতায়াত করতে পারেনা। গত ফেব্রুয়ারী ও মার্চে রাখাইন থেকে আয় রোজগারের জন্য অন্য এলাকায় যাওয়ার পথে দু’দফায় ২৫০ জন রোহিঙ্গাকে পুলিশ আটক করেছিল। তাদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়ে জেলে দিয়েছিল। কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারণে সেদেশের প্রেসিডেন্টের আদেশে এরাসহ অনান্য বন্দী রোহিঙ্গাদের মুক্তি দিয়ে রাখাইনে ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দেন সংশ্লিষ্ট আদালত।

রোহিঙ্গা নেতা জাফর আলম জানান, জেলে আটক রোহিঙ্গারা চিকিৎসাসহ কোন মৌলিক অধিকার পায়নি। তাদের মধ্যে অনেকে নানা জঠিল রোগে আক্রান্ত। সাম্প্রতিক করোনা ভাইরাসেও আক্রান্ত থাকতে পারে। তাছাড়া রাখাইনে চলমান সংঘাতে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা চরম খাদ্য, আশ্রয় ও ঔষধ সংকটে রয়েছে।

এ  ধরনের অনিশ্চয়তার মূখে পড়া রোহিঙ্গাদের মিয়ানমার জোরপূর্বক বাংলাদেশের সীমান্তে জড়ো করে ঠেলে দিতে চেষ্টা করছে বলে রোহিঙ্গারা জানান। গত জানুয়ারী মাসে মিয়ানমারের জেল থেকে মুক্তি পাওয়া শ’খানেক রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করে বিভিন্ন ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছিল বলে জানা যায়।

গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে এ ধরনের শতাধিক রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে ঠেলে দিতে চেষ্টা চালাচ্ছে সংবাদে সীমান্ত রক্ষী বিজিবি, স্হানীয় জনপ্রতিনিধি ও লোকজন সীমান্ত পাহারা দিয়ে আসছে। উখিয়ার আনজুমানপাড়া, রাহমতেরবিল ও টেকনাফের উলুবনিয়া সীমান্তের ওপারের কেওড়া বনে অনুপ্রবেশের অপেক্ষমাণ রোহিঙ্গাদের অনেকে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত বলে সন্দেহ করেছেন উখিয়ার পালংখালী ইউপি চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী ও ওয়ার্ড মেম্বার সোলতান আহমদ।

কক্সবাজার -৩৪ বিজিবি অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল আলী হায়দার আজাদ আহমেদ বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে এ খবরে সীমান্ত এলাকায় কাউকে দেখা যায় নি। তবে বিজিবির কড়াকড়িতে এ ধরনের কিছু রোহিঙ্গা পিছু হটে অন্য সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছে।

তিনি বলেন, রোববার (১২ এপ্রিল) ভোরেও ১০/১৫ জনের একদল রোহিঙ্গা তুমব্রু সীমান্ত দিয়ে ঢোকার চেষ্টা করে। কিন্তু বিজিবি সদস্যদের প্রতিরোধের মূখে তারা প্রবেশ করতে পারেনি বলে তিনি জানান

আরও খবর