উখিয়ায় এলাকার সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে মিথ্যা মামলার আসামি যুবক

নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার জার্নাল ◑

উখিয়ার জালিয়াপালং পশ্চিম সোনাইছড়িতে জীবাণু নাশক স্প্রে ছিটানো কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার আসামী ধরাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা হয়েছে।
মামলাটিতে ২৮ জনকে এজাহারভুক্ত আসামী করা হয়েছে। এই ঘটনায় কক্সবাজার জুড়ে তোলপাড় হয়েছে।

আলোচিত এ ঘটনায় ২৮ জন আসামীর মধ্যে রয়েছেন আইনজীবী, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, মেম্বার ও এনজিও কর্মকর্তা। আছেন অনেক নিরীহ আসামীও।

তারমধ্যে একজন আসামির নাম মোঃ রাশেল।
যে কিনা শুরু থেকে এই সংঘর্ষ না হওয়ার জন্য লড়ে গেছেন। অথচ আজ সেই ছেলেটি মামলার আসামি হয়ে গ্রামছাড়া। দেশের এই করুন পরিস্থিতিতেও থাকতে পারছেন না বাসায়। ঝুঁকির মধ্যে জীবনযাপন করছেন। কিন্তু রাশেলের এই সংঘর্ষে মামলার আসামি হওয়ার কথা না, কেননা সে এই ঘটনার সাথে জড়িত না। কিন্তু এই ঘটনার সাথে জড়িত না হয়েও কেন আজ তাকে আসামি হতে হয়েছে এই প্রশ্ন সচেতন মহলের।

রাসেল একজন এলাকার নম্র ভদ্র ছেলে। যাকে সবাই ভাল হিসেবে চিনে ও জানে। কখনোই কারো সাথে তার সমস্যা হয়নি। বরং ছেলেটে সবসময় অন্যের বিপদে এগিয়ে এসেছেন। একজন পরোপকারী ছেলে হিসেবে এলাকায় তার নাম ডাক। জড়িত নেই কোনো রাজনৈতিক দলের সাথেও।

সোনাইছড়ির এই ঘটনায় যদি তার ফোনকলে ঘটনাস্থলে পুলিশ না আসত তাহলে ঐদিন আরো বড় দূর্ঘটনা ঘটে যেত। কিন্তু সে তাৎক্ষনিক প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করে ঘটনাস্থলে পুলিশ বাহিনী আনায় সংঘর্ষ থামিয়ে দেয়।

ঘটনার দিন সোনাইছড়ি এলাকার মেইন রোডের পশ্চিম পাড়া তার বাড়ির পাশেই রাস্তার মোড়ে সংঘর্ষের জন্য লোক জড়ো হলে বড় ধরনের সংঘাতের আশংকা করে সে তাৎক্ষনিক উখিয়া থানা পুলিশের মোবাইল নাম্বার না থাকায় সচেতন নাগরিক ও শিক্ষিত যুবক হিসেবে দ্রুত ৯৯৯ এ কল করে উখিয়া থানার পুলিশের সাথে যোগাযোগ ঘটনাস্থলের ঠিকানা দিলে দ্রুত উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মরজিনা আক্তার মরজুর নির্দেশে একটি ফোর্স এসে ঘটনা থামিয়ে দেয়। এবং দ্রুত কল করে থানায় অবহিত করার জন্য পুলিশ কর্তৃক তাকে ধন্যবাদ ও জানানো হয়। পরবর্তীতে ৯৯৯ থেকে তার কাছে ফিরতি কল আসে এবং ৯৯৯ এ কল করে বিস্তারিত জানানোর জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা হয়। (সেদিনের কল ও কথা বলার বিস্তারিত ডকুমেন্টস আছে)।

এখন কথা হলো, যদি সে ঘটনার সাথে জড়িত থাকত তবে কেনো সে ঘটনা থামানোর জন্য প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করবে? কেনো বা সে প্রশাসনকে কল করতে যাবে। নাকি বড় ধরণের সংঘাত থামিয়ে দিয়ে সহযোগিতা করায় তাকে আজ মামলার আসামি হয়ে ঘরছাড়া হতে হয়েছে? একজন নিরীহ নিরপরাধ মানুষকেও যদি মামলার ভোগান্তি পোহাতে হয় তবে সাধারণ মানুষ যাবে কোথায়?
আর সেদিন তার ভূমিকা সম্পর্কে প্রশাসন জানে এবং দেখেছে।

এদিকে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে অসংখ্য শিক্ষিত, সম্মানি ও নিরীহ মানুষকে হয়রানী করা ‘অনুচিত ও অমানবিক’ মন্তব্য করেছে স্থানীয় বাসিন্দারা। একটি ঘটনার জের ধরে পুরো এলাকা থেকে বেছে বেছে প্রতিপক্ষ ও নিরীহ লোকজনকে আসামী করা হয়েছে। যে কারণে সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন।

ওই দিন কি ঘটেছিল, কারা ঘটনার ইন্ধনদাতা আর মূলতঃ কারা ঘটনায় সম্পৃক্ত তা তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হোক।

ভুক্তভোগিরা জানিয়েছে, ঘটনায় সম্পৃক্ত হওয়া তো দূরের কথা, ঘটনার সম্পর্কেও আবগত নয়- এমন অনেককে আসামী করা হয়েছে। এ কারণে এলাকার সম্প্রীতি নষ্ট হচ্ছে।

ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় বাসিন্দা ও মামলার আসামী মোঃ রাশেল জানান, ঘটনার দিন তার বাড়ির পাশেই সংঘর্ষের জন্য লোক জড়ো হলে বড় ধরনের সংঘাতের আশংকা করে আমি তাৎক্ষনিক উখিয়া থানা পুলিশের মোবাইল নাম্বার না থাকায় সমাধানের আশায় দ্রুত ৯৯৯ এ কল করে উখিয়া থানার পুলিশের সাথে যোগাযোগ করি।
আর যোগাযোগের কিছুক্ষণের মধ্যেই উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মরজিনা আক্তার মরজুর নির্দেশে একটি ফোর্স এসে ঘটনা থামিয়ে দেয়। এবং দ্রুত কল করে থানায় অবহিত করার জন্য পুলিশ আমার সাথে দেখা করে এবং বড় ধরণের সংঘাত থামাতে থানাকে জানানোর জন্য আমাকে ধন্যবাদ জানায়। পরবর্তীতে ৯৯৯ থেকে কল করে তাদের দ্রুত ঘটনা থামাতে সাহায্য চাওয়ায় ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা হয়। পরবর্তীতে দুইপক্ষের মধ্যে সৃষ্ট ঘটনা, এরপর মামলায় আমাকে জড়ানো হয়েছে দেখে আমি বিস্মিত। করোনা ভাইরাসে আতংকের এই সময়ে আসামি হয়ে আমি আজ ঘরছাড়া। জীবন ঝুঁকি নিয়ে পরিবার ছেড়ে রাত যাপন করছি অন্য জায়গায়।

বাস্তবিক অর্থে আমি ঘটনার সাথে জড়িত না। আমি হয়ত ঘটনা থামাতে পুলিশকে কল দেওয়াতে প্রতিপক্ষ আমার উপর ক্ষেপে আমাকে মিথ্যা মামলার আসামি করেছেন। দেশের একজন সুনাগরিক হিসেবে আমি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। এই মিথ্যা মামলা থেকে রেহাই চাই।

আরও খবর