অনলাইন ডেস্ক ◑ মহামারি করোনাভাইরাসের ছোবলে বিশ্বব্যাপী প্রাণ হারিয়েছেন ৩৭ হাজার ৫৬০ জন। এ সংখ্যা ক্রমশ বেড়েই চলছে। প্রতি মিনিটেই বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। করোনায় এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন সাত লাখ ৬০ হাজার ৮৯৯৫ জন। আর সুস্থ হয়েছেন ১ লাখ ৬৪ হাজার ৬৮৫ জন।
করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের সংখ্যা ও প্রাণহানির পরিসংখ্যান রাখা ওয়ার্ল্ডওমিটারের তথ্যানুযায়ী সোমবার রাত ৪টা পর্যন্ত এ খবর জানা গেছে।
করোনাভাইরাস প্রথম ধরা পড়ে গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর, চীনের উহান শহরে। শুরুতে এই ভাইরাসের প্রকোপ যতটা ছিল, এখন তার চেয়ে অনেকগুণ বেড়েছে।
ওয়ার্ল্ডোমিটারসের লাইভ তথ্য মতে, ভাইরাসটিতে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। দেশটিতে এখন পর্যন্ত এক লাখ ৪২ হাজার ৭৯৩ জন সংক্রমিত হয়েছে। এর মধ্যে দুই হাজার ৪৯০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্তের দিক থেকে এরপরই অবস্থান ইতালির। দেশটিতে ৯৭ হাজার ৬৮৯ জন করোনায় আক্রান্ত। আর মারা গেছেন ১০ হাজার ৭৭৯ জন।
অপরদিকে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরো একজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তিনি একজন নারী। তার বয়স ২০ বছর। এ নিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৪৯ জনে দাঁড়িয়েছে।
করোনাভাইরাস বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ার ঘটনায় ব্যাপকভাবে সমালোচিত হচ্ছে চীন। বিশেষ করে পশ্চিমা গণমাধ্যম এবং রাজনীতিকরা এ ঘটনায় প্রথম থেকেই চীনের দিকে অঙুল তুলেছেন। তবে চীন প্রথম থেকেই ভাইরাসটির বিরুদ্ধে দৃঢ় মনোবলে বুক চিতিয়ে লড়াই করছে। প্রকৃতপক্ষে চীন শুরু থেকেই যদি পরিস্থিতি কঠোরভাবে সামাল না দিত, তাহলে বিশ্ব পরিস্থতি হয়তো আরো ভয়াবহ হতো।
চীনের পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে হলেও ইতালি, যুক্তরাষ্ট্র, স্পেন, জার্মানিসহ অনেক দেশই মৃত্যুর মুখ থেকে মানুষকে ফিরিয়ে আনতে পারছে না। প্রতিদিন যে হারে শত শত মানুষ মরছে, তা শিউরে ওঠার মতোই।
ইতালির স্বাস্থ্য বিভাগের দেয়া হিসেব অনুযায়ী, মাত্র ৩৬ দিনে দেশটিতে মৃতের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়েছে। অথচ করোনা শনাক্তের প্রথম ৮০ দিনে সারাবিশ্বে মারা গেছে এতগুলো মানুষ।
ইউরোপের আরেক দেশ ফ্রান্সে নতুন করে ২৯২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এখন পর্যন্ত দেশটিতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ৬০৬ জনে। আর আক্রান্তের সংখ্যা ৪০ হাজার ১৭৪ জনে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে জার্মানিতেও প্রতিদিন বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। দেশটিতে নতুন করে ১১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এখন পর্যন্ত মৃত্যু ৫৪৫ জনের। আর এ পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৬৩ হাজার ৭৯ জন।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে ইউরোপের প্রায় সব দেশ লকডাউন। যুক্তরাষ্ট্রের অর্ধেকের বেশি মানুষ ঘরবন্দী। এ রকম লকডাউন চলছে এশিয়া ও আফ্রিকাসহ অন্যান্য মহাদেশেও। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন আর স্বাস্থ্যমন্ত্রীও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। প্রাণঘাতী এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ব্রিটিশ রাজপরিবারের উত্তরাধিকার প্রিন্স চার্লসও।
এশিয়ার মধ্যে ইরানের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে নতুন করে ১১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর ফলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৭৫৭ জনে। আর ইরানে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৪১ হাজার ৪৯৫ জন।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, করোনাভাইরাস মানুষ ও প্রাণীদের ফুসফুসে সংক্রমণ করতে পারে। ভাইরাসজনিত ঠাণ্ডা বা ফ্লুর মতো হাঁচি-কাশির মাধ্যমে মানুষ থেকে মানুষে ছড়িয়ে পড়ছে এই ভাইরাস। ভাইরাসটিতে সংক্রমিত হওয়ার প্রধান লক্ষণগুলো হলো- শ্বাসকষ্ট, জ্বর, কাশি, নিউমোনিয়া ইত্যাদি। তাছাড়া শরীরের এক বা একাধিক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নিষ্ক্রিয় হয়ে আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু হতে পারে।
এ ভাইরাস থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় সংক্রমিত ব্যক্তিদের থেকে দূরে থাকা। তাই মানুষের শরীরে এমন উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চীনা বিজ্ঞানীরা।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-