মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী ◑
উখিয়া-টেকনাফের রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্প গুলোতে নতুন কোন বিদেশি যেতে চাইলে তাকে ক্যাম্পে যাওয়ার আগে কমপক্ষে ১৪ দিন কোয়ারান্টাইনে থাকতে হবে। কোয়ারাইন্টানে থেকে আশংকা মুক্ত হলেই রোহিঙ্গা প্রশাসনের অনুমতি সাপেক্ষে রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্পে যেতে পারবেন। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে রোহিঙ্গা প্রশাসন এ বিষয়ে কঠোর নির্দেশনা জারি করেছে। তবে রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্পে আগে থেকেই কর্মরত বিদেশিরা এ নির্দেশনার আওতায় পড়বেনা। কারণ তারা আগেই থেকেই ক্যাম্পে কাজ করার কারণে তাদের স্বাস্থ্যগত অবস্থা এখানকার সুস্থ, স্বাভাবিক মানুষের মতোই।
রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্পে করোনা প্রতিরোধে বিদেশি নাগরিক আনাগোনায় কি ব্যবস্থা নিয়েছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে কক্সবাজারের শরনার্থী ত্রান ও প্রত্যাবাসন কমিশনার- আরআরআরসি (জ্যেষ্ঠ যুগ্ন সচিব) মোঃ মাহবুব আলম তালুকদার এ তথ্য জানান।
রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্পে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে আর কি কি প্রদক্ষেপ নিয়েছেন, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, মোট ৩৪ টি রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্পে ৪৭ টি করোনা ভাইরাস আইসোলেশন বেড রেডি করা আছে। প্রয়োজন হলে আরো ১৫০ শয্যার বেড প্রাথমিকভাবে প্রাক প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে। যেটা জরুরিভিত্তিতে ব্যবহার করা যাবে। আরআরআরসি (জ্যেষ্ঠ যুগ্ন সচিব) মোঃ মাহবুব আলম তালুকদার বলেন-আজ বৃহস্পতিবার ১৯ মার্চ পর্যন্ত রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্পে কোন করোনা ভাইরাস জীবাণু আক্রান্ত রোগী সনাক্ত হয়নি। তবে রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্পের স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র গুলো এ বিষয়ে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নিয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতার সাথে কাজ করছে।
রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্পে বড়, ছোট, মধ্যম মিলিয়ে প্রায় ২০৭ টি স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ক কেন্দ্রে গত এক সপ্তাহ ধরে এ সেবা জোরদার করা হয়েছে।
স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে গুলোতে থার্মাল স্ক্রানার সহ কোন পরীক্ষা সামগ্রীর অপ্রতুলতা নেই। আধুনিক সব পরীক্ষা সামগ্রী রয়েছে। জাতিসংঘ উদ্বাস্তু বিষয়ক হাই কমিশন (ইউএনএইচসিআর) এর নির্মিত রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্পে যে খালি ভবন গুলো রয়েছে, জরুরি অবস্থায় প্রয়োজনে সেগুলোও ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে। রোহিঙ্গা প্রশাসন থেকে এ বিষয়ে কঠোর নজরদারি করা হচ্ছে। উচ্চ পর্যায়ের হেলথ মনিটরিং টিম এসব ব্যবস্থা ও করণীয় বিষয়ে নিয়মিত মনিটরিং করছে।
আরআরআরসি (জ্যেষ্ঠ যুগ্ন সচিব) মোঃ মাহবুব আলম তালুকদার আরো বলেন, দেশের স্বাস্থ্য বিভাগীয় ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনাগুলোর প্রেরিত করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ সংক্রান্ত লিফলেট, হ্যান্ডবিল ইত্যাদি বার্মিজ ভাষায় অনুবাদ করে ক্যাম্পে রোহিঙ্গা শরনার্থীদের মাঝে বিলি করা হচ্ছে। যাতে রোহিঙ্গা শরনার্থীদের সেগুলো বুঝতে সুবিধা হয়। রোহিঙ্গা শরনার্থীদের আতংকিত না হয়ে তাদের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তুলতে ক্যাম্পে প্রচুর কাজ করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, সীমান্ত দিয়ে যাতে মিয়ানমারের কোন নাগরিক সহজে এদেশে অনুপ্রবেশ করতে নাপারে সে বিষয় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)কে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া, উখিয়া-টেকনাফে অবস্থিত রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্প এলাকার চলমান লার্নিং সেন্টার, মাদ্রাসা, মক্তব গত ১৭ মার্চ মঙ্গলবার থেকে ৩১ মার্চ মঙ্গলবার পর্যন্ত সম্পূর্ণ বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে। শরনার্থী ত্রান ও প্রত্যাবাসন কমিশনার কার্যালয় থেকে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সোমবার ১৬ মার্চ ৬৪৭ নম্বর স্মারকে জারীকৃত আদেশে এ ঘোষনা দেওয়া হয়। যা কার্যকর রয়েছে।
আদেশে স্বাস্থ্য সম্পর্কিত সচেতনতামূলক কার্যক্রম ব্যতীত সব ধরনের জনসমাগম এড়িয়ে চলার জন্যও বলা হয়েছে।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-