ফারুক আহমদ, উখিয়া ◑
উখিয়ার হলদিয়া পালং ইউনিয়নের উত্তর বড় বিল ও পাগলির বিল এলাকায় সরকারি বনভূমির সংরক্ষিত পাহাড় কর্তন করে বিরান ভূমিতে পরিণত করেছে প্রভাবশালী মাটি খেকো সিন্ডিকেট।
প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ফ্রিস্টাইলে পাহাড় কর্তন করে ডাম্পার গাড়ি যোগে হাজার হাজার ঘনফুট মাটি পাচার করছে। ফলে ভারসাম্য নষ্টসহ পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়, রামু উপজেলার রাজার কুল রেঞ্জের আওতাধীন উত্তর বড় বিল বিটের অধীনে পাগলির বিল ও উত্তর বড়বিল এলাকায় শত শত একর বনভূমিতে অসংখ্য পাহাড় রয়েছে।
স্থানীয় গ্রামবাসীরা জানান, বেশ কিছুদিন ধরে প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় একটি সিন্ডিকেট একের পর এক পাহাড় কর্তন করে চলছে। বিপুল সংখ্যক শ্রমিক দিয়ে পাহাড়ের কর্তনকৃত মাটি ডাম্পার যোগে বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
অভিযোগে প্রকাশ রাজারকুল রেঞ্জ কর্মকর্তা ও উত্তর বড়বিল বিট কর্মকর্তাকে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করে প্রকাশ্যে বনভূমির পাহাড় কর্তন করে বিরাণভূমিতে পরিণত করছে সিন্ডিকেট সদস্যরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রতিদিন অসংখ্য মাটি ভর্তি ডাম্পার যাতায়াতের কারণে গ্রামীণ সড়ক বিধবা হয়ে চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। অনেকের মতে কলেজ স্কুল-মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা ধুলোবালুর কারণে চলাফেরা অসহনীয় হয়ে উঠেছে।
হলদিয়া পালং ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আমিনুল হক আমিন জানান উত্তর বড়বিল চিতাখালী ও পাগলির বিল রাবার ড্যাম এলাকায় অসংখ্য পাহাড় প্রকাশ্যে কর্তন করে ধুধু মরুভূমিতে পরিণত করা হচ্ছে। প্রভাবশালী সিন্ডিকেট ক্ষমতার অপব্যবহার করে এবং বন বিভাগকে ম্যানেজ করে একের পর এক পাহাড় কর্তন করে ধ্বংসলীলা চালাচ্ছে। এতে করে পরিবেশের মারাত্মক বিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় নাগরিক সমাজের অভিমত, বনবিভাগের চোখের সামনে কিভাবে একের পর এক পাহাড় কর্তন করে ১০/১২ টি ডাম্পার ভর্তি মাটি পাচার করা হচ্ছে। অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও বনবিভাগের রহস্যজনক ভূমিকার কারণে আজ সরকারি বনভূমির সংরক্ষিত পাহাড় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়ার প্রধান কারণ। তারা আরও বলেন পাহাড় কর্তন ও মাটি পাচারের ঘটনা ধামাচাপা দিতে স্থানীয় নিরহ গরীব লোকদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে বনবিভাগ যে কাজটি করেছে তা খুবই ন্যাক্কারজনক। কেবল প্রভাবশালী ব্যক্তিদেরকে রক্ষা করার জন্য এসব তামাশার নাটক সৃষ্টি করেছে ।
এ ব্যাপারে উখিয়া উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান কামরুন্নেসা বেবি কক্সবাজার বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ও পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জড়িত প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ দাবি জানান।
খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, স্থানীয় নাগরিক সমাজ পাহাড় কাটার সচিত্র ছবি সহ বনবিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নিকট শরণাপন্ন হলেও এখনো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের টনক নড়েনি। এতে করে নাগরিক সমাজের মনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-