মাহাবুবুর রহমান ◑
কক্সবাজার পৌর এলাকা সহ সর্বত্র মশার উপদ্রব বেড়েছে। এতে আবারো ডেঙ্গু সহ মশা জনিত অন্যান্য রোগ নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছে সর্বস্থরের মানুষ।
সাধারণ মানুষের দাবী কয়েক মাস আগে ডেঙ্গু নিয়ে ব্যাপক তৎপরতার কারণে মশার উৎপাত কিছুটা কম ছিল এতে অনেকটা স্বস্তি পাওয়া গেলেও এখন আবারো মশার উপদ্রব বেড়েছে। তাই দ্রুত কর্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী জানিয়েছে সাধারণ মানুষ।
কক্সবাজার পৌর এলাকার ৪ নং ওয়ার্ডের হাঙ্গর পাড়ার বাসিন্দা মনোয়ারা বেগম বলেন,গত কয়েকদিন ধরে মশার উৎপাত খুব বেড়েছে। এতে রাতে দিনে শান্তিতে ঘরে থাকতে পারছিনা। বিশেষ করে রাতে ঘুমাতে পারিনা মশার কারনে। তিনি জানান,ঘরে ছোট বাচ্চা আছে এদের নিয়ে মহা সমস্যায় আছি তাই মশা নিধনে খুব দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
একই দাবী করেন পেশকার পাড়ার বাসিন্দা নাছিমা বেগম তিনি বলেন, আমাদের এলাকা যে পৌর এলাকার একটি পাড়া সেটা বুঝার উপায় নেই। এখানে সব দিকে ময়লা আবর্জনার ভাগাড়, রাস্তার ময়লা পরিষ্কার করা হয়না। আর নালাও পরিষ্কার হয়না দীর্ঘ সময় ধরে তাই এখানে মশার উৎপাত সব চেয়ে বেশি। মাঝ খানে কিছুদিন স্বস্তিতে থাকলেও সম্প্রতি মশার উপদ্রব বাড়ায় আমরা মারাত্নক অসুবিধায় আছি। শহরের দক্ষিণ রুমালিয়ারছড়ার কলেজ ছাত্র সোয়েব নুর বলেন,এখন কলেজের পরীক্ষা চলছে একটু রাত জেগে পড়তে চাইলেও মশার উৎপাতের কারণে বসা যায়না। আর রাতে ঘুমাতে গেলেও মশার কারণে ঘুমাতে পারিনা।
৬নং ওয়ার্ড এলাকার বড়ুয়া পাড়া এলাকার সোলাইমান বলেন, ঘরে ছোট বাচ্চা থাকায় রুমে মশার কয়েল ও বেশি দেওয়া যায়না কারণ ডাক্তারদের বারণ আছে। আবার মশার কয়েক ছাড়া এখন রাতে ঘুমানোটাও কঠিন হয়ে পড়েছে।
তিনি জানান, আমরা ছোট বেলায় দেখেছি পৌরসভার পক্ষ থেকে ঘরে ঘরে এসে মশার বিষ মারতো। এখন সে সব কর্মসূচী নাই। আর নালা নর্দমা পরিস্কার করার নাম নেই তাই মশার উৎপাত বেড়েছে। কিছুদিন আগে ডেঙ্গু নিয়ে ব্যাপক দৌড়ঝাপের কারণে সব নালাতে কিছুটা বিষ মারা হয়েছিল তবে এখন আবার মশার উৎপাত বেড়েছে।
এদিকে শুধু পৌরসভা বা অন্য দায়িত্বশীল প্রতিষ্টানের উপর দোষারুপ না করে নিজেদের বাড়ির আশপাশ পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখার দায়িত্ব নিজেদের নিতে হবে জানিয়ে সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর এম এ বারী বলেন, আমরা শুধু অন্যদের দোষারোপ করি এই সংস্কৃতি পরিহার করতে হবে,এখনো বেশির ভাগ মানুষ বাড়ির ময়লা রাস্তায় ফেলে যায়, নিজের বাড়ির পাশের নালা ঠিকমত পরিস্কার রাখেনা। তবে হ্যাঁ যারা দায়িত্বশীল প্রতিষ্টান তারাও ঠিকমত দায়িত্ব পালন করছেনা। ডেঙ্গু একদিনে সৃষ্টি হয়নি। এটা বহুদিনের অবহেলার কারণে সৃষ্টি আগে থেকে দায়িত্ব নিয়ে কাজ করলে এই পরিস্থিতি সৃস্টি হতো না। তাই পরিস্থিতি ভয়াবহ না হওয়ার আগেই মশার উপদ্রব বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।
এ ব্যাপারে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডাঃ মোঃ মহিউদ্দিন বলেন, শীত কালে সাধারণত মশার উপদ্রব একটু বাড়ে, তবে অপরিস্কার পরিবেশ এবং জমানো পানি থেকে মশার সৃষ্টি হয়। তাই মশা নিধনের চেয়ে মশার জন্মস্থান ধ্বংস করতে পারলে সবার জন্য উপকার হবে। আবার মশার কয়েল স্প্রে সহ যাবতীয় কীটনাশক ব্যবহারেও সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। কারণ এসব কিছুর মধ্যে স্বাস্থ্য ঝুকি বাড়ে। তাই রাতে ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারী টাঙ্গানো প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।
এদিকে কক্সবাজার পৌরসভার প্যানেল মেয়র হেলাল উদ্দিন কবির বলেন, পৌরসভায় এখন যথেষ্ট ফগার মেশিন সহ যাবতীয় সরাঞ্জাম আছে তাই মশা নিধন কার্যক্রম শুরু করা কোন বিষয়না সে বিষয়ে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-