রফিকুল ইসলাম ◑
কক্সবাজারের উখিয়ায় ভরা ফসলী জমি কেটে জাতিসংঘের বিরুদ্ধে কথিত খাল খননে কৃষক, জমির মালিক ও এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলা নির্বাহী অফিসার উক্ত খাল খনন কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন।
জাতিসংঘের আর্থিক সুবিধাভোগী এনজিও গুলোর বিরুদ্ধে প্রাকৃতিক সম্পদ, পরিবেশ, প্রকৃতি ধ্বংসের অভিযোগ উঠেছে। কথিত প্রকৃতি সংরক্ষণের নামে দু’ফসলী জমি কেটে খাল বানানোর ফলে স্হানীয় লোকজন ভূমিহীন হয়ে পড়ছে। ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিক ও কৃষকদের বাধা উপেক্ষা করে জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার অর্থায়নে সিএনআরএস এনজিও খাল কাটা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।
মিয়ানমারের রোহিঙ্গা আশ্রিত ক্ষতিগ্রস্ত উখিয়ার স্হানীয় লোকজনের উন্নয়নের নামে জাতিসংঘের একাধিক সংস্থা ও দেশী বিদেশী কিছু এনজিও বিভিন্ন ধরনের প্রকল্প ও কর্মসূচী বাস্তবায়ন করছে। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার অর্থায়নে শরণার্থী ও স্হানীয় লোকজনের “প্রাকৃতিক পরিবেশ উন্নয়ন ” শীর্ষক খাল খনন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে বলে এনজিওটির প্রকল্প সমম্বয় কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
অভিযোগে জানা যায়, উখিয়ার রাজাপালং ইউনিয়নের মাছকারিয়া ফসলী বিলে স্হানীয় সুলতান আহমদ, গোলাম বারী সহ কয়েকজনের মালিকানাধীন জমি কেটে খাল বানাতে তৎপর হয়ে উঠে পড়ে লেগেছে উক্ত এনজিও। জমির মালিক সুলতান ও ইব্রাহিম জানান, ১৮/২০ পূর্ব থেকে এনজিওটি ফসলী জমি ধ্বংস করে বোল্ড ডোজার দিয়ে খাল কাটতে আসে। বিষয়টি উপজেলা চেয়ারম্যানকে জানালে তিনি সংশ্লিষ্টদের ফসলী জমি নষ্ট করে খাল খননে নিষেধ করেন।
তারা সহ স্হানীয় লোকজন জানান, সেই থেকে এনজিওটি আর কাজ করেনি। হঠাৎ রোববার বিকেলে তারা ভরা বোরো ধানের গাছ উপড়ে বোল্ড ডোজার দিয়ে খাল কাটা শুরু করে। সোমবার (২ মার্চ) সকালে উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে উক্ত এনজিওর বেআইনি তৎপরতার ব্যাপারে কৃষকরা জানান।
উখিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ নিকারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, সরকারের জবর দখলকৃত খাল পূনোরুদ্বকর অগ্রাধিকার কর্মসূচীর আওতায় খাল খননের জন্য বলা হয়েছিল। কিন্তু যেখানে খাল খনন করা হচ্ছে সেখানে ফসলী জমি ও বোরো ধান নষ্ট করায় কাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে বলে তিনি জানান।
উখিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী বলেন, বিরোধীয় আবাদি বিলে একান্তই খাল খননের প্রয়োজন হলে জমির মালিক ও কৃষকদের সাথে সমম্বয় করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু এনজিওটি তা না মেনে স্হানীয় কৃষকদের ভূমিহীন করে, ভরা বোরো ধানের খেত নষ্ট করায় লোকজন ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। তিনি বলেন, প্রকৃতি ও পরিবেশ উন্নয়নের নামে জাতিসংঘ ও এনজিও গুলো প্রকৃতি ধ্বংসের খেলায় মেতে উঠেছে।
স্হানীয় লোকজন কি রোহিঙ্গার বোঝা বইবে না সাহায্যের নামে এনজিও গুলোর শোষণ মেনে নেব! এনিয়ে স্হানীয় লোকজন চরম বিপাকে পড়েছে বলে উপজেলা চেয়ারম্যান জানান। জাতিসংঘের খাল খননে নিয়োজিত ঠিকাদার এনজিও সিএনআরএস এর স্ট্রীম রেস্টোরেসন ম্যানেজার গোলাম কিবরিয়া বলেন,স্হানীয় লোকজন না চাইলে খাল খনন করা হবে না। প্রক্কলিত খালের দৈর্ঘ্য ২ হাজার ফুট, প্রস্হ ৪০ ফুট ও গভীরতা ৮ ফুট বলে তিনি জানান।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-