এম. বেদারুল আলম :
জেলা কারাগারের বর্তমান ধারণ ক্ষমতা ৫৩০ জন বন্দির। কিন্তু বন্দি অবস্থান করছে ৪৫১৯ জন যা ধারন ক্ষমতার ৮ গুন বেশি। ঝিলংজা মৌজার বাইপাসে ২০০১ সালে ১২.৮৬ একর জমিতে গড়ে তোলা জেলা কারাগারে ৪টি দালান নির্মাণ করা হলেও প্রতি বছরই বাড়ছে কয়েদি ও হাজতির সংখ্যা। ফলে ক্রমবর্ধমান চাহিদা বিবেচনা করে সরকার বন্দিদের সমস্যা লাঘবে জেলা কারাগারে যোগ হচ্ছে আরো ৬’শ জন বন্দি ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন ভবন।
ইতোমধ্যে ভবনের ৮০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। আগামি মার্চ মাস নাগাদ অবশিষ্ট কাজ শেষ হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে কাজের গতি নিয়ে চরম অসন্তোষ রয়েছে জেল সুপারের। গত বছর জুনে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও বছর পেরিয়ে অদ্যাবধি ভবনটি জেলা কারাগার কর্তৃপক্ষকে হস্তান্তর করতে পারেনি গণর্পূত বিভাগ।
কক্সবাজার জেলা কারাগারের সুপার মোঃ মোকাম্মেল হোসেন জানান, কক্সবাজার জেলা কারাগারে প্রতিদিনই বাড়ছে বন্দির সংখ্যা।
বর্তমানে (গতকাল বুধবার পর্যন্ত) ৫৩০ জনের ধারণ ক্ষমতাসস্পন্ন কারাগারে বন্দি ছিল ৪ হাজার ৫শ ১৯ জন। ধারণ ক্ষমতার ৮ গুন বেশি বন্দি থাকায় অনেক সময় ব্যবস্থাপনায় হিমশিম খেতে হয়। ফলে কারাগারে বন্দিদের আবাসন সুবিধা নিশ্চিতের জন্য ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে ৬ তলা বিশিষ্ট বন্দি ব্যারাক নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ করে সরকার। আর্থিক ব্যয় ধরা হয় ৫ কোটি টাকা। কারাগারের উক্ত ভবনের জন্য ২১,৬০৬ বর্গফুট জায়গা বাছাই করে কাজ শুরু করে গণর্পূত বিভাগ। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য দায়িত্ব পায় চট্টগ্রামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ডেল্টা কনস্ট্রাকশন। ভবনটি নির্মাণ কাজ শেষ করে কারাগার কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দেওয়ার কথা ছিল ২০১৯ সালের মার্চে। কিন্তু ঠিকাদারের নানা অবহেলা ও গণপূর্তের সঠিক নজরদারির অভাবে আজো শেষ হয়নি নির্মাণ কাজ। তবে চলতি বছরের মার্চ মাসে ভবনটি উদ্বোধন করার কথা রয়েছে।
জেল সুপার মো. মোকাম্মেল হোসেন সূত্রে জানা যায়, ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন ভবনে থাকবে ১২টি ওয়ার্ড। প্রতি ওয়ার্ডে সরকারি হিসাবে বন্দি রাখা যাবে ৩শ জন। তবে বর্তমান অবস্থা অনুযায়ী পুরো ৬ তলা ভবনে দেড় হাজার পর্যন্ত বন্দির আবাসন নিশ্চিত করা যাবে। সরকারের রাজস্ব খাতের বরাদ্দ থেকে বর্ধিত কারাগার ভবন নির্মাণ হওয়ার ফলে বন্দিদের আবাসন সমস্যার অনেকটা সমাধান হবে বলে মনে করেন কারাগারে দায়িত্বরত কয়েকজন কর্মকর্তা। সরকার জরুরি বিবেচনায় কারাগারের জন্য ৬ তলা ভবন বরাদ্দ প্রদান করলেও নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের নানা অবহেলার কারণে যথাসময়ে কাজ শেষ হওয়া নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন খোদ জেল সুপার।
কারাগারের নতুন ভবন নির্মাণ কাজ কখন শেষ হবে এবং কারাগার কর্তৃপক্ষকে কখন হস্তান্তর করা হবে সে বিষয়ে জানার জন্য কক্সবাজার গণপূর্তের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জহিরুল ইসলামের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর (০১৮২২২২১৬৯২) এ যোগাযোগ করা হয় কিন্তু মোবাইল বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
উল্লেখ্য, কক্সবাজার জেলা কারাগারের জন্য আরো একটি ৩ তলা বিশিষ্ট ভবনের অনুমোদন হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেল সুপার। তবে এটি এখনো টেন্ডার হয়নি বলে তিনি উল্লেখ করেন। জেল সুপার বন্দিদের আবাসন সমস্যা নিরসনে দ্রুত ৬তলা বিশিষ্ট ভবনের অবশিষ্ট ২০ শতাংশ কাজ শেষ করে যেন ভবনটি হস্তান্তর করে সে ব্যাপারে গণর্পূতের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-