কক্সবাজারে পাহাড় কাটায় বাড়ছে ঝুঁকি; খবর নেই প্রশাসনের

  • মোহাজের পাড়ায় পাহাড় কেটে চলছে ভবন নির্মাণ

নিজস্ব প্রতিবেদক ◑

কক্সবাজার শহরের ১০ নং ওয়ার্ডস্থ মোহাজের পাড়া এলাকায় ভোররাতে ভয়াবহ পাহাড় কাটা চলছে। ইতোমধ্যে বেশি কয়েকটি জায়গায় পাহাড় কেটে বহুতল ভবন নিমার্ণ কাজও চলছে দ্রæত গতিতে। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিতে চলছে ভোররাতে পাহাড় কাটা ও অবৈধভাবে ভবন নির্মাণের কাজ। সরকারি পাহাড় গুলো কেটে একের পর এক ভবন নির্মাণ কাজ চলমান থাকলেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের দৃষ্টি নেই সেদিকে। একই সাথে বাদশা ঘোনার পর মৌলভী পাড়ায়ও চলছে পাহাড় কেটে ভবন নির্মাণ। পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ডস্থ মৌলভী পাড়ার অংশ। সেখানেও ভোররাতে চলে পাহাড় কাটা। গত কয়েকদিন সরেজমিনে ঘুরে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, শহরের পূর্ব মোহাজের পাড়া এলাকায় গত একমাসে ভয়াবহ পাহাড় কেটে সমান করেছে ছৈয়দ হোসেন সওদাগর নামের একব্যক্তি। রাস্তার পাশে এক মাস ধরে ভয়াবহ পাহাড় কেটে সাবাড় করলেও প্রশাসনের নজরে আসেনি। বর্তমানে সেখানে অবৈধভাবে বহুতল ভবন উঠছেই। পাহাড় কেটে ভবন তৈরি করার কারণে আশপাশের বেশ কয়েকটি বসতবাড়িও ঝুঁকিতে পড়েছে। অবৈধভাবে ভবন তৈরির পাশাপাশি পাহাড়ও কেটে যাচ্ছে এই ছৈয়দ হোসেন। একই সাথে ছৈয়দ হোসেনের পূর্বে কিছু দূরে পাহাড় কেটে বাড়ি তৈরি করছে সাখাওয়াত হোসেন নামে একব্যক্তি।

ইতিমধ্যে একপাশে পাহাড় কেটে ঘর তৈরির কাজ চলছে। সাখাওয়াত হোসেন পাহাড় কাটার কারণে আশপাশের অনেকেই বসতবাড়িতে যাতায়ত করতে পারছে না। সাখাওয়াত হোসেনের পশ্চিম পাশে অবৈধভাবে ভবন তৈরি করছে জাফর মিস্ত্রি ও আব্দু রহমান। তারাও পাহাড় কেটে বহুতল ভবন নির্মাণ করেই যাচ্ছে বর্তমানে। সাখাওয়াত হোসেনের উত্তর পাশে অবৈধভাবে বহুতল ভবন তৈরি করছে আবছার ড্রাইভার। দীর্ঘদিন ধরে পূর্ব মোহাজের পাড়া এলাকায় এভাবে প্রকাশ্যে পাহাড় কেটে ভবন তৈরির কাজ চলমান থাকলেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কোনো দৃষ্টি নেই। যার কারণে একের পর এক পাহাড় কাটা চলছেই মোহাজের পাড়া এলাকায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক এলাকাবাসী জানান, মোহাজের পাড়া এলাকায় পাহাড় কাটা চলছে এক বছর ধরে। অনেকেই পাহাড় কেটে শেষ করেছে ইতিমধ্যে। বর্তমানে অবৈধভাবে ভবন তৈরি করছে। এরমধ্যে অনেকেই রয়েছে ইয়াবা কারবারি। দিন দিন পাহাড় কাটা বাড়ছে মোহাজের পাড়া এলাকায়। বিশেষ করে গভীররাতে ও ভোরে চলে পাহাড় কাটা।

অন্যদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাদশা ঘোনার পর মৌলভী পাড়া এলাকায়ও চলছে পাহাড় কাটা। মৌলভী পাড়ার টেক এলাকায় আলহেলা একডেমীর পাশে চলছে ভয়াবহ পাহাড় কাটা। ইতিমধ্যে সেখানে মোস্তাফিজুর রহমান ও আবুল বশর নামে দুই ব্যক্তি পাহাড় কেটে সাবাড় করেছে।

তারা পাহাড় কেটে পাশের প্লটও ভরাট করেছে ইতিমধ্যে। একই পাশে খোরশেদ আলম ওরফে ডিস খোরশেদও পাহাড় কেটে ইতিমধ্যে নির্মাণ করে যাচ্ছে ভবন। প্রশাসনের নজর এড়াতে চারপাশে টিনের বেড়া দিয়ে পাহাড় কেটে বিল্ডিং তৈরি করছে এই খোরশেদ। অন্যদিকে মৌলভীর টেকে উচু পাহাড় সাবাড় করেছে নেছারু নামে এক মহিলা। বর্তমানে সেখানে একপাশে পাহাড় কর্তন অন্যপাশে ইটের বাউন্ডারির কাজ চলমান রয়েছে। এসব এলাকায় অবৈধভাবে পাহাড় কর্তনের মাঝি হিসেবে রয়েছে আয়ুব নামের একব্যক্তি। এই বর্মায়া আয়ুব এসব পাহাড়ের মাটি চুক্তি ভিত্তিতে কেটে সাবাড় করে বলে এলাকায় জনশ্রæতি রয়েছে।

এভাবে ভয়াবহ পাহাড় কাটার বিষয়ে জানতে চাইলে পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের উপপরিচালক শেখ মো. নাজমুল হুদা বলেন, কোনোভাবে পাহাড় কর্তনকারীদের রেহায় দেওয়া হবে না। হয়ত পাহাড় খেকোরা প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে গভীররাতে পাহাড় কাটছে কৌশলে। তাদের বিরুদ্ধে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

একই সাথে মোহাজের পাড়া ও মৌলভী পাড়া এলাকায় যারা পাহাড় কাটছে বা অবৈধভাবে ভবন নির্মাণ করে যাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে দ্রæত সময়ে অভিযান চালিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও খবর