সাড়ে সাত বছর পর হাসি ফুটেছে শাহপরীর দ্বীপের দেড় হাজার চাষীর

জসিম মাহমুদ ◑

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ। অবশেষে ভাঙ্গা বেড়িবাঁধ নির্মাণ হওয়ায় সাড়ে সাত বছর পরে দুই হাজার ৩০০ একর জমিতে ফসলের মুখ দেখে হাসি ফুটেছে চাষীদের। এতে করে ওই সব জমিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রায় দেড় হাজার চাষী।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কক্সবাজার কার্যালয় সূত্র জানায়, ২০১২সালে জলোচ্ছাসের কবলে পড়ে শাহপরীর দ্বীপের দক্ষিণ ও পশ্চিম অংশের প্রায় এক কিলোমিটার বাঁধের বিভিন্ন স্থানে ভেঙে যায়। তখন ভাঙা অংশ মেরামত না হওয়ায় অমাবস্যা ও পূর্ণিমায় জোয়ারের পানি ঢুকে পড়ে ১২ গ্রামের ফসলি জমি ও লবণের দুই হাজার ৩০০ একর জমিতে লবণ চাষাবাদ বন্ধ ছিল সাড়ে সাত বছর ধরে। অপরদিকে, শাহপরীর দ্বীপের দক্ষিণ ও পশ্চিম অংশের প্রায় এক কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নিমাণ করার জন্য সরকার ১১৬ কোটি টাকার বরাদ্দ দেন। এরপর ২০১৭ সালের ৯ অক্টোরব বেড়িবাধ নিমাণ কাজ শুরু করা হয়।

বিসিক টেকনাফের পরির্দশক মো. মিজানুর রহমান বলেন, গত মৌসুমে টেকনাফ উপজেলায় ৯২০জন চাষী ৩ হাজার ২২৭ একর জমিতে লবণ উৎপাদন হয়েছিল ১ লাখ ১৪ হাজার ৫০০ মেট্রিকটন। তবে এবার ওই অংশে নতুন করে চাষাবাদ শুরু হওয়াই টেকনাফে লবণ চাষ আরও বাড়ছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, সাবরাং টুরিজম পাক সংলগ্ন এলাকা দিয়ে বেড়িবাধ নিমাণ কাজ চলছে। ট্রাক করে বেড়িবাধে মাটি ও শত শত বøক ফেলা হচ্ছে নিমিত বাধের ওপর। বাধের র্পূব পাশে বিশাল এলাকা জুড়ে শত শত চাষীরা লবণ উৎপাদনের জন্য মাঠে কাজে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন।
স্থানীয় লোকজন জানান, একবার জোয়ারের পানি ঢুকে পড়লে তা ১০-১২ দিনেও নাম তো না। কারণ এসব স্থানে পানি নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা ছিল না। তাই এতোদিন ধরে চাষাবাদ বন্ধ ছিল।

উত্তরপাড়ার বাসিন্দা লবণচাষি শাহাবু উদ্দিন, জসিম উদ্দিন, জাহেদ উল্লাহ, মোহাম্মদ তৈয়ুব ও মোহাম্মদ শফিক বলেন, প্রতিবছর এসব জমিতে লবণ চাষ করে যা আয় হতো, তা দিয়ে সংসার চলত। এতো দিন বন্ধ থাকায় প্রায় দেড় হাজার চাষীর অনেক কষ্টে দিন কাটছে। এখন চাষাবাদ শুরু করতে পারায় উৎসব আমেজ চলছে পরিবার গুলোর মধ্যে। এতোদিন শত শত মণ লবণ উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। পাশাপাশি আমন মৌসুমেও কিছু জমিতে চাষাবাদ হতো সেগুলোও খালী পড়ে ছিল। এবার আমন চাষাবাদ হবে বলে আশা করছি।
শাহপরীর দ্বীপ রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক এম এ হাশেম বলেন, জোয়ারের পানির কারণে সাড়ে সাত বছর ধরে লবণ চাষ ব্যাহত হয়। র্বতমানে ভাঙ্গা বেড়িবাধটি নিমাণ করার পর ওই সব জমিতে জোযারের পানি প্রবেশ বন্ধ হলে চাষীরা পুনরায় লবণ চাষ করতে পারছে।

সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপির) চেয়ার?ম্যান নুর হোসেন বলেন, দীর্ঘ সাড়ে সাত বছর বন্ধ থাকার পর চলতি মৌসুমে দুই হাজার ৩০০ একর জমিতে লবণ চাষাবাদ করা হচ্ছে। এতে করে এলাকার দেড় হাজার লবণচাষীর মুখে হাসি ফুটে উঠেছে।
পাউবোর টেকনাফের উপসহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, ভাঙ্গা বেড়িবাধ নিমাণ করার জন্য সরকার ১১৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দেন। এরপর ২০১৭ সালের ৯ অক্টোরব বাংলাদেশ নৌবাহিনীর তত্বাবধানে বেড়িবাধ নিমাণ কাজ শুরু করা হয়।

আরও খবর