ভারতে করোনাভাইরাস আক্রান্ত প্রথম রোগী শনাক্ত

চীনের উহান থেকে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম রোগী ভারতে শনাক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির সরকারি কর্মকর্তারা। বৃহস্পতিবার দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশ কেরালায় নভেল করোনাভাইরাসের পরীক্ষায় এই ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায় এক শিক্ষার্থীর শরীরে।

দেশটির সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রথমবারের মতো দক্ষিণাঞ্চলীয় কেরালায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত প্রথম রোগী পাওয়া গেছে। প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে আক্রান্ত ওই রোগী চীনের উহান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। বর্তমানে তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল এবং তাকে কেরালার একটি হাসপাতালে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে।

ভারতের জ্যেষ্ঠ সরকারি এক কর্মকর্তা বলেছেন, আক্রান্তের ঝুঁকি তৈরি হওয়ায় করোনাভাইরাসের প্রাণকেন্দ্র উহান থেকে ভারতীয়দের ফিরিয়ে আনার চেয়ে অন্য কোনও উত্তম বিকল্প নেই। নাগরিকদের ক্রমাগত চাপের কারণে উহান থেকে ভারতীয়দের ফেরত আনতে একটি বিমান প্রস্তুত রাখা হয়েছে। উহানে ভারতীয় অনেক শিক্ষার্থী রয়েছেন; যারা সেখানকার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছেন।

চলতি সপ্তাহেই উহান থেকে নাগরিকদের ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে ভারত সরকার একটি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বিমান প্রস্তুত রেখেছে। কিন্তু চীন সরকারের অনুমতি না পাওয়ায় নাগরিকদের ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত এখনই বাস্তবায়ন করতে পারছে না ভারত।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভারতীয় এই কর্মকর্তা বলেন, এই ভাইরাসে যারা সংক্রমিত হননি, শুধুমাত্র তাদেরকে বিমানে করে ফিরিয়ে আনা হবে। সেখান থেকে আনার পর দিল্লির বাইরে একটি স্থাপনায় তাদের ১৪ দিন পর্যবেক্ষণে রাখা হবে।

জাপান, যুক্তরাষ্ট্র এবং অস্ট্রেলিয়া নিজ নাগরিকদের চীন থেকে ফেরত নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করায় দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে নাগরিকদের ফেরানোর দাবি জোরাল হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে উহান থেকে ১৯৫ মার্কিন নাগরিককে ফিরিয়ে নিয়েছে।

জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার ২১০ জন জাপানিকে টোকিওর একটি চার্টার্ড বিমানে করে চীন থেকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। এর আগে বুধবার আরও ২০৬ জনকে জাপানে ফিরিয়ে নেয়া হয়। পরে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় এই জাপানিদের মধ্যে তিনজনের শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি নিশ্চিত হয়েছেন দেশটির স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা।

গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের মধ্যাঞ্চলীয় হুবেই প্রদেশের উহানে প্রথম এই ভাইরাসের উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত দেশটিতে ১৭০ জনের প্রাণহানি ও ৭ হাজার ৭১১ জন আক্রান্ত হয়েছেন।

সূত্র : রয়টার্স, এপি।

আরও খবর