সৌদি আরবের বিরুদ্ধে কোরআন বিকৃতির অভিযোগ

সৌদি আরব কর্তৃক অনুমোদিত হিব্রুতে পবিত্র কোরআনের অনুবাদ করা হয়েছে। মূলত সৌদি আরবের শাসকগোষ্ঠীর সম্প্রতি ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের অংশ হিসেবে এই অনুবাদ করা হয়। তবে এই অনুবাদে প্রায় ৩০০টি ভুল পাওয়া গেছে। কোরআনের যেসব আয়াতের অনুবাদে ভুল করা হয়েছে সেসবের মধ্যে মূলত ফিলিস্তিন ও আল-আকসা মসজিদের ওপর ইসরায়েলের দখলদারিত্বের প্রতি সমর্থন জানানো হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে এই ভুলগুলো ইচ্ছাকৃতভাবে করা হয়েছে।

ফিলিস্তিনের বার্তা সংস্থা শেহাবের বরাতে যুক্তরাজ্য ভিত্তিক সংবাদ সংস্থা মিডল ইস্ট মনিটরের মাধ্যমে এই খবর জানা যায়।

ফিলিস্তিনের বার্তা সংস্থা শেহাব যেসব ভুলগুলো চিহ্নিত করেছে তার মধ্যে সবচেয়ে ভয়ানক ভুলটি হলো নবী মোহাম্মদ (সা.) এর নাম উল্লেখ না করা। কোরআনে অন্তত চারবার মোহাম্মদ (সা.) এর নামের উল্লেখ ছিলো। আর আল আকসা মসজিদকে বলা হয়েছে ইহুদিদের মন্দির বা উপসনালয়।

ফিলিস্তিনি বার্তা সংস্থা শেহাব বলছে, এই অনুবাদকে ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা ভয়ানক বিকৃত অনুবাদ হিসেবেই গণ্য করবে। কেননা এতে এমন একটা ভাব আনা হয়েছে যে, মুসলিমদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থতেও ইহুদিবাদিদের দাবির পক্ষে সমর্থন রয়েছে। সুতরাং ইহুদিবাদি ইসরায়েল যে আল আকসা মসজিদ ধ্বংস করে সেখানে তাদের পুরোনো উপসনালয় বা মন্দিরটি পুনরায় তৈরি করতে চায় সেই দাবিও ন্যায়সঙ্গত।

এদিকে কিং ফাহাদ কমপ্লেক্স থেকে প্রতি বছর বিশ্বের ৭৪টি ভাষায় ১ কোটি কোরআন ছাপানো হয়। এই কিং ফাহাদ কমপ্লেক্স ওয়েবসাইটেও ‘বিকৃত’ অনুবাদ সম্বলিত কোরআনের কপিটি দেখানো হয়েছে।

ভুল সম্পর্কে কিং ফাহদ কমপ্লেক্স বলেছে, ‘বিষয়টি নিয়ে কিং ফাহাদ কমপ্লেক্সের যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ কোরআনের ওই কপিটি পড়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’

‘বিকৃত’ অনুবাদ সম্বলিত কোরআনের ওই কপিটি গত শনিবার সন্ধ্যায় পিডিএফ সংস্করণে জনসাধারণের জন্য ওয়েবসাইটে সরবরাহ করা হয়। এরপরই ফিলিস্তিনের শেহাব বার্তা সংস্থা এই ঘটনার বিষয়ে একটি ভিডিও প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

ভিডিওতে ইসরায়েল বিষয়ক গবেষক আলাদ্দিন আহমেদকে এই ‘বিকৃত’ অনুবাদ সম্পর্কে হুঁশিয়ারি মূলক কথা বলতে দেখা যায়।

ভিডিওতে জানানো হয়, সুরা আল-ইসরার ৭ম আয়াতে আল আকসা মসজিদকে বিকৃত করে ‘ইহুদিদের মন্দির’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ওই আয়াতে মোহাম্মদ (সা.) এর মিরাজ গমনের সময় অলৌকিকভাবে মক্কা থেকে জেরুজালেমে যাওয়ার ঘটনা বর্ণিত হয়েছে।

ওই আয়াতের হিব্রু অনুবাদে আল আকসা মসজিদকে ‘ইহুদিদের মন্দির’ হিসেবে উল্লেখের পাশাপাশি একটি ব্যাখ্যাও জুড়ে দেওয়া হয়। যেখানে বলা হয়, আল আকসা মসজিদ হলো সেই জায়গা যেখানে নবী সোলায়মানের (আ.) মন্দির বা উপাসনালয় অবস্থিত।

তবে অনেকেই এই বিকৃত অনুবাদকে ভুলবশত হয়েছে বা কাকতালীয় বলে গণ্য করছেন।

অবশ্য সৌদি শাসকগোষ্ঠী সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইসরায়েলের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চেষ্টায় রয়েছে। বিশেষ করে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ইসরায়েলের সঙ্গে বন্ধুত্বপুর্ণ সম্পর্ক স্থাপন করে সৌদি আরবের অর্থনৈতিক সংকট থেকে বের হয়ে আসার রাস্তা খুঁজছেন।

মিডল ইস্ট মনিটর অবলম্বনে নাফরুল হাসান। independent থেকে

আরও খবর