ডেস্ক রিপোর্ট ◑ নগরীর ইপিজেড এলাকায় একটি সমবায় প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে প্রায় ৮ কোটি টাকা জব্দ করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি, ডিএমপি)। গতকাল মঙ্গলবার বিকেল থেকে ইপিজেড এলাকার চৌধুরী মার্কেটের রূপসা উন্নয়ন ফাউন্ডেশন মাল্টিপারপাস নামের প্রতিষ্ঠানটিতে এ অভিযান শুরু হয়। অভিযানে আটক করা হয় তিনজনকে।
জানা যায়, সমবায় প্রতিষ্ঠানটি গার্মেন্টস শ্রমিকদের কাছ থেকে লোভ দেখিয়ে হাতিয়ে নিয়েছে অন্তত ৮ কোটি টাকা। এমন অভিযোগ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জমা হওয়ার পর তদন্তে নামে কর্তৃপক্ষ। অভিযোগের সত্যতা পেয়ে অফিসটিতে অভিযান শুরু করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। অভিযানে গোয়েন্দা পুলিশের সাথে যোগ দিয়েছে ইডিজেড থানা পুলিশ। মধ্যরাতেও চলছিল এ অভিযান ।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ওই কার্যালয় থেকে নগদ প্রায় ৮ কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে বলে জানিয়েছে একটি সূত্র। সূত্র জানায়, এসময় তিনজনকে আটক করা হয়েছে। তবে তাদের পরিচয় জানা যায়নি।
ইপিডেজ থানা ওসি (তদন্ত) ওসমান গণি জানান, ‘আমরা ঘটনাস্থলে আছি। এখানে অনেক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা আছেন। এ মুহূর্তে কিছু বলা সম্ভব না। অভিযান চলছে।’
প্রত্যক্ষদর্শীসূত্রে জানা গেছে, অভিযানের খবর পেয়ে সেখানে ভিড় করে গ্রাহকরা। তারা কার্যালয়ে ঢোকার চেষ্টা করছে। বিক্ষোভ করে তাদের জমা টাকা ফেরত চাচ্ছে। অফিস ঘেরাও করে পুলিশ, সাংবাদিক কাউকে বের হতে দিচ্ছে না।
এদিকে ওই প্রতিষ্ঠানে টাকা সঞ্চয়কারী কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রতিষ্ঠানটিতে টাকা রেখে প্রতিবছর লাভ পেয়েছেন তারা। এমনকি তাদের কোনো অভিযোগও নেই এ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। তবে এখন তাদের দাবি বর্তমানে যে টাকা জমা রয়েছে তা তাদেরকে ফেরত দিতে হবে।
ওমর ফারুক নামে এক সঞ্চয়কারী জানান, প্রতিমাসে পুরো পরিবার মিলে ২৪ হাজার টাকা জমা রাখেন এই সমিতিতে। জমানো টাকার ওপর ৮ শতাংশ লাভ প্রদান করতো প্রতিষ্ঠানটি। তিনি আরও জানান, আগামী ১৭ তারিখ (জানুয়ারি) তিন লাখ টাকা তোলার কথা এই সমিতি থেকে। এখন আজকে দেখি অভিযান চালাচ্ছে। শুনেছি পুলিশ টাকা নিয়ে যাচ্ছে। টাকা নিয়ে গেলে আমাদের জমানো টাকা কে দিবে। আমাদের টাকার হিসাব না দিলে এখান থেকে আমরা কাউকে যেতে দিবো না।
এদিকে মো.মঞ্জু ও মো. সবুজ নামে আরও দুই সঞ্চয়কারী বলেন, এই প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৬ বছর ধরে টাকা লেনদেন করছি। সময় মত লাভও পেয়েছি। আবার পরিচিত কাউকে এখানে একাউন্ট করিয়ে দিলে একটি নির্দিষ্ট টাকাও পেতাম। আজ শুনছি এখানে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। আমাদের দুই জনের পরিবার মিলিয়ে এই সমিতিতে প্রায় আড়াই লাখ টাকা জমা রেখেছি। এখন আমাদের এই টাকা কে দিবে?।
জানা গেছে, রূপসা কিং গ্রুপের নামের প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান লায়ন মো. মজিবুর রহমান কোম্পানি। এর ভাইস চেয়ারম্যান মো. মুছা হাওলাদার।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-