সাইফুল ইসলাম,কক্সবাজার জার্নাল ◑
সারাদেশের ন্যায় কক্সবাজারেও প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি সমাপনি পরীক্ষার ফলাফল গতকাল ৩১ ডিসেম্বর প্রকাশিত হয়েছে। প্রকাশিত ফলাফলে জেলায় পিএসসিতে ৩৯ হাজার ৫৬৪ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাশ করেছে ৩৮ হাজার ০৫ জন। পাশের হার ৯৪.৬১। এতে জিপিএ ৫ পেয়েছে ২৯০০ শিক্ষার্থী। পিএসসিতে অকৃতর্কায হয়েছে ১৫৫৯ জন।
অন্যদিকে ইবতদায়িতে ১২ হাজার ৭৩২ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাশ করেছে ১২ হাজার ৪৫৭ জন। অকৃতকার্য হয়েছে ২৭৫ জন। পাশের হার ৯৭.৬৮ শতাংশ। এতে জিপি- এ ৫ পেয়েছে ৪৮৬ জন শিক্ষার্থী। গত বছরের তুলনায় এ বছর পাশের হার এবং জিপিএ-৫ প্রাপ্তের হার কমেছে। গত ২৪ নভেম্বর পরীক্ষা শেষ হয়। জেলার পিএসসিতে শতভাগ ফলাফল অর্জনকারি কয়েকটি বিদ্যালয় হল কক্সবাজার কেজি স্কুল, পিটিআই সংলগ্ন পরীক্ষণ বিদ্যালয়, শহীদ তিতুমীর ইনস্টিটিউট, চকরিয়া কোরক বিদ্যাপিঠ, কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অন্যতম।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শফিউল আলম বলেন, এবারের পিএসসিতে পাশের দিক দিয়ে জেলার শীর্ষে রয়েছে টেকনাফ এবং সবচেয়ে পিছিয়েছে কুতুবদিয়া উপজেলা। তবে জিপিএ ৫ প্রাপ্তিতে বরাবরের মত শীর্ষ স্থান হারিয়েছে চকরিয়া। সেরা হয়েছে কক্সবাজার সদর ৭৬০ জিপিএ-৫ পেয়েছে। অন্যদিকে ইবতেদায়ী পরীক্ষায় পাশের হারে শীর্ষে রয়েছে সদর উপজেলা। সদর উপজেলায় জিপিএ-৫ পেয়েছে সর্বোচ্চ ১৫৭ জন।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে প্রাপ্ত ফলাফল বিশ্লেষনে জানা যায়, ২০১৯ সালের প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় ১৭০২১ জন ছাত্রের মধ্যে উত্তীর্ণ হয় ১৬,৪১৮। ছাত্রের পাশের হার ৯৬.২১।
অপরদিকে এবারের পরীক্ষায় ২২৫৩৪ জন ছাত্রী অংশগ্রহন করলেও উত্তীর্ণ হয়েছে ২১৫৮৭ জন। তাদের পাশের হার ৯৯৩.০০ শতাংশ।
পিএসসিতে ৯৬.১০ শতাংশ পাশে টেকনাফ উপজেলা জেলার শীর্ষ স্থান অর্জন করেছে। এই উপজেলার ১৬৭১ জন ছাত্রের মধ্যে পাস করেছে ১৬৫৭ জন। পাশের হার ৯৯.১৬। পাশের হারে কক্সবাজার পেকুয়া উপজেলার অবস্থান দ্বিতীয়। এ উপজেলায় ১১০৭জন ছাত্রের মধ্যে পাস করেছে ১০৬৬। পাশের হার ৯৭.৮৩। ছাত্রীর মধ্যে ১৬৩১ জনে পাশ করেছে ১৫৩৮ জন। পাশের হার ৯৭.৮৩। ওই উপজেলার ১২৭ জন ছাত্র এবং ১৮১ জন ছাত্রী জিপিএ-৫ পেয়েছে।
তৃতীয় স্থানে রয়েছে চকরিয়া উপজেলা। ওই উপজেলার ৩৪৩৬ জন ছাত্রের ৩৩৬০ জন পাশ করেছে। সেই হিসেবে পাশের হার ৯৭.৭৯। এছাড়া ৪৬৭৭ ছাত্রীর মধ্যে পাশ করেছে ৪৫৬১ জন। পাশের হার ৯৭.৫২। ওই উপজেলার ২৩৮ জন ছাত্র এবং ৩৩৯ জন ছাত্রী জিপিএ-৫ পেয়েছে।
এরপরের স্থানেই রয়েছে মহেশখালী উপজেলা। ওই উপজেলার ২২৫৬ জন ছাত্রের মধ্যে পাশ করেছে ২২০০ জন। পাশের ৯৭ দশমিক ৫২। অন্যদিকে ৩২০৭ জন ছাত্রীর পাশ করেছে ৩১১৮ জন। পাশের হার ৯৭.২২। এই উপজেলার ৬৩ জন ছাত্র ও ৯২ জন ছাত্রী জিপিএ-৫ পেয়েছে।
তারপরের স্থানে রয়েছে কক্সবাজার সদর উপজেলা। এই উপজেলার ৩২৩৭ জন ছাত্রের পাশ করেছে ৩১১১ জন। পাশের হার ৯৬ দশমিক ১১। অন্যদিকে ৪০০৮ জন ছাত্রীর পাশ করেছে ৩৮৫২ জন। পাশের হার ৯৬.১০ দশমিক। এতে ৩৪০ জন ছাত্র এবং ৪২০ জন ছাত্রী জিপিএ-৫ পেয়েছে।
এরপরের স্থানেই রয়েছে উখিয়া উপজেলা। ওই উপজেলার ১৯৪৫ জন ছাত্রের পাশ করেছে ১৮৯৮ জন। পাশের হার ৯৭.৫৮। এতে ২২৯৪ জন ছাত্রীর পাশ করেছে ২২১৯ জন। পাশের হার ৯৬.৭৩। ওই উপজেলার ৯৩ জন ছাত্র ও ১১২ জন ছাত্রী জিপি এ ৫ পেয়েছে।
পিএসসিতে পিছিয়েছে কুতুবদিয়া উপজেলা। এখানকার ১৪৮৫ জন ছাত্রের পাশ করেছে ১৩৪৯ জন। সেই হিসেবে পাশের হার ৯০.৮৪। ২০৫৪ ছাত্রীর পাশ করেছে ১৭৮৫। পাশের হার ৮৬.৯০। এতে ১৫৪ জন ছাত্র এবং ১৪৭ জন জিপি-এ ৫ পেয়েছে।
অপরদিকে গতকাল প্রকাশিত ইবতেদায়ী পরীক্ষায় জেলায় ১২,৭৩২ জনে পাস করেছে ১২,৪৫৭ জন শিক্ষার্থী। তন্মধ্যে ৫১৫৪ জন ছাত্রের মধ্যে উত্তীর্ণ হয় ৫০৪৭। ছাত্রের পাশের হার ৯৭.৮৪। অপরদিকে এবারের পরীক্ষায় ৭৫৭৮ জন ছাত্রী অংশগ্রহন করলেও উত্তীর্ণ হয়েছে ৭৪১০। তাদের পাশের হার ৯৭.৫৩।
এবতেদায়িতে পাশের হারে কক্সবাজার সদর উপজেলা জেলার শীর্ষে অবস্থানে রয়েছে। এই উপজেলার ১১৮৪ জন ছাত্রের মধ্যে পাস করেছে ১১৭৬ জন। পাশের হার ৯৯.৩২। ১৯৩৭ জন ছাত্রীর উত্তীর্ণ হয়েছে ১৯২০ জন। তাদের পাশের হার ৯৯.১২।
ওই উপজেলার ৫৫ জন ছাত্র এবং ১০২ জন ছাত্রী জিপিএ-৫ পেয়েছে। পাশের হারে মহেশখালী উপজেলার অবস্থান দ্বিতীয়। ৬৫৮ জন ছাত্রের মধ্যে পাস করেছে ৬৫২। পাশের হার ৯৯.০৯। ছাত্রীর মধ্যে ৮৯৪ জনে পাশ করেছে ৮৮০ জন। পাশের হার ৯৮.৪৩। ওই উপজেলার ৩০ জন ছাত্র এবং ২৩ জন ছাত্রী জিপিএ ৫ পেয়েছে।
তৃতীয় স্থানে রয়েছে পেকুয়া উপজেলা। ওই উপজেলার ৪৪৮ জন ছাত্রের ৪৪৩ জন পাশ করেছে। সেই হিসেবে পাশের হার ৯৮.৮৮। এছাড়া ৬৮১ জন ছাত্রীর মধ্যে পাশ করেছে ৬৭৫ জন। পাশের হার ৯৯.১২। ওই উপজেলার ৫ জন ছাত্র এবং ১৬ জন ছাত্রী জিপিএ ৫ পেয়েছে।
এরপরের স্থানেই রয়েছে উখিয়া উপজেলা। ওই উপজেলার ৫৮৫ জন ছাত্রের মধ্যে পাশ করেছে ৫৪৬ জন। পাশের ৯৩.৩৩। অন্যদিকে ৫৫২ জন ছাত্রীর পাশ করেছে ৫২৬ জন। পাশের হার ৯৫.২৯। এই উপজেলার ১৪ জন ছাত্র ও ১২ জন ছাত্রী জিপিএ-৫ পেয়েছে।
তারপরের স্থানে রয়েছে রামু উপজেলা। এই উপজেলার ৪৩২ জন ছাত্রের পাশ করেছে ৪২২ জন। পাশের হার ৯৭.৬৯। অন্যদিকে ৭২৫ জন ছাত্রীর পাশ করেছে ৭০৫ জন। পাশের হার ৯৭.২৪। এতে ৩২ জন ছাত্র এবং ৪৮ জন ছাত্রী জিপিএ-৫ পেয়েছে। এরপরের স্থানেই রয়েছে টেকনাফ উপজেলা। ওই উপজেলার ৬৬৮ জন ছাত্রের পাশ করেছে ৬৫৩ জন। পাশের হার ৯৭.৭৫। এতে ১০২২ জন ছাত্রীর পাশ করেছে ৯৯৬ জন। পাশের হার ৯৭.৪৬। ওই উপজেলার ১৫ জন ছাত্র ও ১১ জন ছাত্রী জিপিএ-৫ পেয়েছে।
সর্বশেষ স্থানে রয়েছে কুতুবদিয়া উপজেলা। এখানকার ১৭২ জন ছাত্রের পাশ করেছে ১৭০ জন। সেই হিসেবে পাশের হার ৯৮.৮৪। ২০৩ ছাত্রীর পাশ করেছে ১৯৭। পাশের হার ৯৭.০৪। এতে ১১ জন ছাত্র এবং ৮ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-