কক্সবাজারে হঠাৎ ভাড়া নিয়ে নৈরাজ্য: বিপাকে স্থানীয়-পর্যটকরা

সাইফুল ইসলাম,কক্সবাজার জার্নাল ◑
হঠাৎ পর্যটন নগরী কক্সবাজার শহরজুড়ে যাত্রীদের কাছ থেকে ২ থেকে ৩ গুন ভাড়া বেশি আদায়ের অভিযোগ উঠেছে চালকদের বিরুদ্ধে। গত ১৬ ডিসেম্বর থেকে ১০ টাকার টমটম ভাড়ায় এখন নিচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাক পর্যন্ত। এ হিসেবে প্রায়ই ১০ থেকে ১৫ টাকা বাড়তি ভাড়া নিচ্ছেন চালকরা। এতে বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় ও পর্যটকরা। এই বিষয়ে কক্সবাজার পৌরসভাসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোন উদ্যোগেই নিচ্ছেন বলে দাবি সচেতন মহলের। এ বাড়তি ভাড়া নিয়ে প্রতিনিয়তেই যাত্রী ও চালকদের মধ্যে বাকবিতন্ডা চলছে। এক পর্যায়ে উভয়ের মধ্যে মারামারিও সংগঠিত হচ্ছে।

স্থানীয় জানায়, কেন্দ্রীয় বাসটার্মিনাল থেকে পেট্রোলপাম্প ও ৬নং রাস্তার মাথা পর্যন্ত আগে টমটম ভাড়া নিতো ১০ টাকা এখন নিচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা, একইভাবে শহীদ স্মরনী রোড অর্থাৎ পালের দোকানের সামনে থেকে কলাতলী মোড় পর্যন্ত ভাড়া নিতো ১০ টাকা এখন নিচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা। অনুরুপভাবে ৬নং রাস্তার মাথা থেকে টুইট্টা পাড়া ভাড়া নিতো ১০ টাকা এখন নিচ্ছে ১৫ টাকা। এমনকি পর্যটকদের কাছ থেকে ৩০ থেকে ৪০ টাকাও আদায় করছেন অসাধু চালকরা। পৌরসভাসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এভাবে নিরবতা পালন করলে বড় ধরণের অঘটনও ঘটতে পারে যাত্রী ও চালকদের মধ্যে।

২৫ ডিসেম্বর (বুধবার) এই টমটম ভাড়া নিয়ে সদর উপজেলাস্থ পশ্চিম ঝিলংজার মোঃ আব্দুর রহিম ও টমটম চালক মোঃ ইসলামের সাথে ভাড়া অতিরিক্ত চাওয়ায় প্রথমে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে তাদের দুইজনের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটছে। এতে যাত্রী আব্দুর রহিম আহত হয়েছে। এভাবে পথে পথে যাত্রী ও চালকদের মধ্যে বাকবিন্ডা লেগেই রয়েছে।

ভুক্তভোগী যাত্রীরা জানায়, সম্প্রতি টমটম, সিএনজি ও রিক্সা ভাড়া আগের চেয়ে দ্বিগুন আদায় করা হচ্ছে। যার কারণে দরিদ্র মানুষ পড়েছেন চরম বিপাকে। কিন্তু এ নিয়ে কারো মাথা ব্যাথা নেই। ফলে গাড়ি চালকরা এক প্রকার বেপরোয়া হয়ে যাত্রীদের জিম্মি করে ফেলেছে। শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে দীর্ঘক্ষন গাড়ির জন্য অপেক্ষা করে হাঁফিয়ে উঠেছেন। গাড়ি না পেয়ে বিরক্ত হয়ে রিক্সা নিলেও সেখানেও চলছে নৈরাজ্য।

বুধবার দুপুরে সরেজমিন দেখা গেছে, অতিরিক্ত ভাড়া নিয়ে অনেক যাত্রীদের সাথে চালকদের বাকবিতন্ডা পথে পথে। এ অবস্থায় অসংখ্য যাত্রী
চালকদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছেন। তারা এ থেকে মুক্তি পেতে পৌরসভাসহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

টমটম চালক জসিম উদ্দীন বলেন, হঠাৎ কক্সবাজার শহরে পর্যটক বেড়ে গেছে। টমটমের চাহিদার চেয়ে লোকজন বেশি হওয়ায় একটু বাড়তি ভাড়া নিচ্ছি। তারপরেও আমরা টমটম জায়গা দিতে পারচ্ছিনা। প্রতিবছর পর্যটন মৌসুমে নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে এভাবে আমরা বাড়তি ভাড়া নিয়ে থাকি। মৌসুমেও আমরা একটু গাড়ি ভাড়া বাড়িয়ে না নিলে কখন নিবো। মৌসুম ছাড়াতো টমটমের ভাড়া তুলতেও কষ্ট হয়ে যায়।

ঢাকা যাত্রা বাড়ি থেকে বেড়াতে আসা আবুল কালাম বলেন, আমি প্রতিবছর শীত মৌসুমে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে বেড়াতে আসি। এখানকার অটোরিক্সা ইচ্ছামতো ভাড়া আদায় করছে। প্রতি মৌসুমে আসি বিধায় অটোরিক্সা অর্থাৎ টমটম কিভাবে ভাড়া নেয় মোটামুটি আমার কিছুটা ধারণা আছে। আগে কলাতলী মোড় থেকে বাজারঘাটা আসতে ভাড়া নিতো ১৫ টাকা, এখন দাবি করছে ৩০ টাকা। অতিরিক্ত ভাড়া নিয়ে তার সাথে আমার কিছুটা বাকবিতন্ডা হয়। অবশেষে ২০ টাকা দিয়ে ছাড়া পেয়েছি ওই চালকের হাত থেকে।

আরও খবর