ডেস্ক রিপোর্ট ◑ ফিকে হয়ে আসছে তিন মন্ত্রী, চার প্রতিমন্ত্রী ও দুই উপমন্ত্রীর সম্ভাবনা। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদে তাদের না রাখার সম্ভাবনাই বেশি।
মন্ত্রিসভার এই সদস্যরা হলেন- শিল্পমন্ত্রী অ্যাডভোকেট নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, গণপূর্তমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করিম, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা, পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম এবং শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর তিন প্রভাবশালী সদস্য সমকালকে জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত মঙ্গলবার তার সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর প্রথম বৈঠকে এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন। তারা প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার উদ্ৃব্দতি দিয়ে বলেছেন, দলের পদে মন্ত্রীদের থাকার দরকার নেই। মূলত সরকার ও দলকে আলাদা করার জন্যই মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীদের দলের সাংগঠনিক কাঠামোতে রাখতে চাচ্ছেন না তিনি।
ইতোমধ্যে এর প্রতিফলনও ঘটেছে। মন্ত্রিসভার দুই সদস্য বিদায়ী কমিটির পদ হারিয়েছেন। তারা হলেন আইন সম্পাদক গণপূর্তমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করিম এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা। অ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করিমের পদে এসেছেন অ্যাডভোকেট কাজী নজিবুল্লাহ হীরু। তিনি বিদায়ী কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্য। ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরার পদে এসেছেন মেহের আফরোজ চুমকি। তিনি সাবেক মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী।
তবে বিদায়ী কমিটির সাংগঠনিক কার্যক্রমে বেশ সক্রিয় থাকার পরও এখন পর্যন্ত দলের পদ-পদবি পাননি তিন সাংগঠনিক সম্পাদক পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এবং ধর্ম সম্পাদক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শেখ মোহাম্মদ আবদুল্লাহ। তাদের অনেকের সম্ভাবনা ফিকে হয়ে এসেছে। শিল্পমন্ত্রী অ্যাডভোকেট নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান দলের বিদায়ী কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্য। তাদের সম্ভাবনাও নেই বলে জানা গেছে।
মন্ত্রিসভা সদস্যদের মধ্যে একমাত্র তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ পদোন্নতি পেয়ে দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন। তিনি বিদায়ী কমিটির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক। তথ্যমন্ত্রীর মতো চারজন মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী আওয়ামী লীগের নতুন কার্যনির্বাহী সংসদে রয়ে গেছেন। তারা হলেন- দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তারা নিজেদের সৌভাগ্যবান মনে করছেন।
আওয়ামী লীগের ৮১ সদস্যের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের ৪২ নেতার (৪০ জন বিদায়ী কমিটির) নাম ঘোষণা করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সম্পাদকমণ্ডলীর ১০টি, কোষাধ্যক্ষ এবং কার্যনির্বাহী সংসদের ২৮ সদস্যসহ ৩৯ নেতার নাম ঘোষণা করা হবে বলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন।
এদিকে বিদায়ী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ অ্যাডভোকেট, কোষাধ্যক্ষ এইচ এন আশিকুর রহমান, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক আব্দুছ ছাত্তার, শ্রম ও জনশক্তি সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ এবং উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিনকে এখন পর্যন্ত কমিটিতে রাখা হয়নি।
তবে এই নেতাদের মধ্যে বিদায়ী কমিটির শ্রম ও জনশক্তি সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ এবং উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিনকে স্বপদে রাখার সম্ভাবনা রয়েছে। বিদায়ী কমিটির তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেনও কার্যনির্বাহী কমিটিতে থাকবেন বলে শোনা যাচ্ছে।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-