দীপক শর্মা দীপু ◑
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ ই মার্চের ভাষন আর অসহযোগ আন্দোলনে সাড়া দিয়ে স্বাধীনতার যুদ্ধে এদেশের মানুষ দেশকে মুক্ত করার জন্য নানাভাবে পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান। দেশকে শক্রমুক্ত করতে যার যার অবস্থান থেকে সবাই শক্রর বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। প্রাণের দাবি প্রানপণ প্রচেষ্টায় সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন করেন। কিন্তু এর মধ্যে কিছু দেশের মানুষ স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। দেশের মানুষ হয়ে দেশের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। মুক্তিপাগল মানুষকে হত্যা করতে পাক হানাদারকে নানাভাবে সহযোগিতা করে। তারা হচ্ছে রাজাকার বাহিনী। তাদের কারনে দেশকে শক্রমুক্ত করতে অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়। সারাদেশে রাজাকাররা অত্যাচার চালিয়ে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে।
কক্সবাজারের রাজাকারদের চিহ্নিত করতে এবং নতুন প্রজন্মদের কাছে সঠিক তথ্য উপস্থাপন করার পাশাপাশি ঘৃণা উদ্রেককারি নিন্দিত ভূমিকার জন্য রাজাকারদের ব্যাপারে জনমানসের বিরুপ ধারনার লক্ষ্যে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ২০১৪ সালে প্রকাশিত বিজয় স্মারকে রাজাকারদের নাম তালিকা প্রকাশ করা হয়। এ.এস. এম. সামছুল আরেফিনের লেখায় এই বিজয় স্মারকে বলা হয়, বিভিন্ন পর্যায়ে সরকারি দলিল পত্রাদির সহযোগিতায় রাজাকারের তালিকা প্রস্তুত করা হয়। স্থানীয় জেলা কর্তৃপক্ষ এবং সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে রক্ষিত নথিপত্র যাচাই করা হয়।
বৃহত্তর চট্টগ্রাম জেলার রাজাকারের একটি তালিকা তৈরি করা হয়। এখানে শুধু কক্সবাজার জেলার তালিকা দেয়া হয়েছে। এই তালিকায় রাজাকারদের পরিচিতি দেয়া হয়েছে। কিন্তু একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের প্রবল প্রতিপক্ষ হিসেবে শুধু রাজাকার নয়, পাকিস্থান বাহিনীর সহযোগিতাকারি, রাজনৈতিক ও অরাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, আলবদর, আল-সামস, মুজাহিদসহ আরো অনেকে সক্রিয় ছিলো।
কিন্তু তালিকার সুবিধার্থে ঐ সকল ব্যক্তিকে ভাগ করে বিভিন্ন দলিলে যাদের সুষ্পষ্টভাবে রাজাকার বলে উল্লেখ করা হয়েছে। রাজাকার বাহিনীতে যারা অন্তর্ভুক্ত ছিলেন তারা একটি সরকারি প্রক্রিয়ায় রিক্রুট হয়েছিলেন, তারা একটি নিয়মিত বাহিনীর সদস্য ছিলেন এবং তারা একটি শপথ নামায় স্বাক্ষর করে ও স্বল্পকালীন একটি প্রশিক্ষণ সমাপ্ত কর্ইে কাজে নিযুক্ত হয়েছিলেন।
এই তালিকায় কক্সবাজার জেলার তৎকালীন ৭ উপজেলায় রাজাকারের সংখ্যা ৭১০ জন। তালিকাভুক্ত সব রাজাকারদের ঠিকানা দেয়া দেয়া রয়েছে তৎকালীন সময়ের ঠিকানা অনুযায়ী।
এবার দেয়া হল চকরিয়া উপজেলার ৬৬ জন রাজাকারের তালিকা। ক্রমান্বয়ে পরবর্তিতে বাকি ২ উপজেলার রাজাকারদের তালিকা দেয়া হবে।
চকরিয়া উপজেলার ৬৬ জন রাজাকার: (তৎকালিন ঠিকানা)
রওশন আলী, পিতা-হোসেন আলী, কালিয়ারা ঘোনা। জামানুল মোস্তাফা, পিতা-ফজল আহাম্মেদ, হাজিয়ান। বদরুজ্জামান, পিতা-ইমদাদ আহাম্মেদ, পালাকাটা। মোহাম্মাদুল হক, পিতা-এম আহাম্মেদ, কাকার সাং। ইদ্রিস আহাম্মেদ, পিতা-আলী মিয়া, চিরিঙ্গা। আব্বাস আহাম্মেদ, পিতা-শফিক আহাম্মেদ, কাহারিয়া ঘোনা। এজালার আহাম্মেদ, পিতা-আবদুস সোবহান। নুরুল ইসলাম, পিতা-আব্দুল হাকিম, বেহুলা মানিক চর। কামাল উদ্দিন, পিতা-আবদুস সোবহান, পালাকাটা। রশিদ আহাম্মেদ,পিতা-আলী মদন, কালাকাটা। কবির আহাম্মেদ, পিতা-মনিরুজ্জামান, লইখারচর। বাচ্চু মিয়া, পিতা-আলী মিয়া, হাজিয়া। আমির হোসেন, পিতা-তাইজোমগোলাল, চকোরিয়া। ওসমান গণি, পিতা-শাহ আহাম্মেদ, মগনামা। হোসেন আলী, পিতা-সাইদ আহাম্মেদ, লইখারচর। মুস্তাফিজুর রহমান, পিতা-ফকির মোহাম্মদ, পেকুয়া। কামাল উদ্দিন, পিতা-আমির হোসেন, বড় বাকিয়া। করিম দাদা, পিতা-সুলতান আহাম্মেদ, বড় বাকিয়া। নেজামুল হক, পিতা-আহাম্মেদুর রহমান, ককরা। সাইফুল হক, পিতা-আবুল ফজর সিকদার, পেকুয়া। মোহাম্মদ হোসেন, পিতা-কাজী খুল্ল্যা মিয়া, বড় বাকিয়া। বদিউল আলম, পিতা-হাবিবুর রহমান, বড় বাকিয়া। ইউনুস আলী, পিতা-মীর মদিউজ্জামান, সিরাজপুর। ইকবাল হোসেন, পিতা-মুস্তাফিজুর রহমান, কাকারা। আকবার আহাম্মেদ, পিতা-সেনায়েত আলী, বড় বাকিয়া। দলিলুর রহমান, পিতা-ইসমাইল সিকদার, বেহুলা মানিক চর। জাফর আহাম্মেদ, পিতা-আলতাফ হোসেন, খিল সদর। মুজাহার আলী, পিতা-ওবাইদুল হাকিম, পাহড়চান্দা। মনিরুজ্জামান, পিতা-আলী হোসেন সিকদার, লইখারচর। নুরুল আবসার, পিতা-আব্দুর রশিদ, বেহুলা মানিক চর। শামসুল আলম, পিতা-ওয়াকিল আহাম্মেদ, মঘনামা। নুরুজ্জামান, পিতা-হাজী সেকেন্দার, মাইজঘোনা। সাইফুদ্দিন, পিতা-ডা. ফারুক আহাম্মেদ, হারবাং। আলী আহাম্মেদ, পিতা-কালা মিয়া, বদরখালী। আবু তালেব, পিতা-শফিকুর রহমান, বদরখালী। ইমাম শরীফ, পিতা-সুরা মিয়া, হারবাং। আকবার আহাম্মেদ, পিতা-ফজল করিম, বেহুলা মানিক চর। ফরিদ আলম, পিতা-ফারুক আহমেদ সিকদার, কাইজারবিল। রশিদ আহাম্মেদ, পিতা-বদরুজ্জামান, কাকরা। আবু তাহের, পিতা-মীর আবদুস সোবহান, কালাকটি। নাজির আহাম্মেদ , পিতা-আজিজ উল্লাহ, কাইজারবিল। আবদুস সামাদ, পিতা-করিমদাদ, বেহুলা মানিক চর। নুরুল আলম, পিতা-মুজাহার মিয়া, বদরখীল। আব্দুল হাসেম, পিতা-সাইদ আহম্মেদ, মেহারনামা। সিরাজ উল্লাহ হোসেন, পিতা-এম আহাম্মেদ, খুতাখালি। গোরা মিয়া, পিতা-আবুল ফজল, লুতাম। সবুর আহাম্মেদ, পিতা-চান মল্লিক, মেদাকাচালুয়া। জাফর আহাম্মেদ, পিতা-আবদুস সামাদ, উজানটিয়া। আহাম্মেদ হোসেন, পিতা-আব্দুর রশিদ, সিকদারপুর। সাকির আহাম্মেদ, পিতা-মীর আব্দুল জলিল, উত্তর লইখারচর। আবু আহাম্মেদ, পিতা-বদিউজ্জামান, বদরখালী। মনির আহাম্মেদ, পিতা-ওয়াজুদ্দিন, বদরখিল। নুরুল আলম, পিতা-সুলতান আহাম্মেদ, চিরাঙ্গা। নুরুল কবির, পিতা-সুলতান আহাম্মেদ, চিরাঙ্গা। শামসুল হুদা, পিতা-আশরাফ আলী, হাজিয়ান। আবুল হোসেন, পিতা-সাইদ আহাম্মেদ, মোহর নগর। নুরুজ্জামান, পিতা-এজাহারুল হক, বদরখালী। শফিকুর রহমান, পিতা-আকবার আলী, বদরখালী। নুরুল আবসার, পিতা-এম হক, মাইজপাড়া। আহাম্মেদ হোসেন, পিতা-আব্দুর রশিদ, সাহেরগঞ্জ। মোক্তার আলী, পিতা-এজাহারুল হক, মগনামা। সেলিম উল্লাহ, পিতা-আব্দুল হাকিম সওদাগর, কুটাখালী। আনোয়ার হোসেন, পিতা-ইয়াকুব আলী, বেলনা মানিক চর। আনোয়ার হোসেন, পিতা-আবুল আহাম্মেদ, বদরখালী। আনোয়ার হোসেন, পিতা-এম জামান, বেহুলা মানিক চর। নুরুল আনোয়ার, পিতা-আবু তাহের, কাকরা।
টেকনাফ থানার রাজাকার
নুরুল হক, পিতা-মৃত সাহেব উদ্দিন, কুতুবদিয়া পাড়া। খলির আহাম্মেদ, পিতা-মহিদ আলী, কায়ের পাড়া। সাব্বির আহাম্মেদ, পিতা-আফলাতুন, কায়ের পাড়া। মোস্তাফা কামাল, পিতা-হাজী মুচান আলী, ওহিখং। মোহাম্মদ জহির, পিতা-মৃত আজিজ উদ্দিন, কায়ের পাড়া। শাহ আলম, পিতা-এজাহার মিয়া, সিকদার পাড়া। হোসেন আহাম্মেদ, পিতা-হাফিজ উদ্দিন, নাকাইরা পাড়া। মোহাম্মদ ইলিয়াস, পিতা-আব্দুল মেজর, নোয়াইকং আলী। সৈয়দ আলম, পিতা-আলী হোসেন, ডোমদানিয়া। আবুল কালাম, পিতা-আবুল হোসেন, জাদিমারা। কালা মিয়া, পিতা-মোহাম্মদ শরীফ, ডোমদানিয়া। মোহাম্মদ উল্লাহ, পিতা-মৃত মনির আহাম্মেদ, লাউরবিল। ষৈয়দ করিম, পিতা-আমির হামজা, লাউরবিল। আব্দুল মান্নান, পিতা-বারেক সিকদার, মিসখানা। মোহাম্মদ কামালা, পিতা-আবুল কাশেম, গোদাই বিল। সিদ্দিক আহাম্মেদ, পিতা-সাইদুর রহমান, নতুন পল্টন পাড়া। বশির আহাম্মেদ, পিতা-নতুন পল্টন পাড়া। মোক্তার আহাম্মেদ, পিতা-ইউছুফ আলী, নতুন পল্টন পাড়া। মোহাম্মদ হোসেন, পিতা-ইমাম আলী, সিলবানিয়া। আবদুস শুকুর, পিতা-আব্বাস আলী, সাপার দ্বীপ। লাল মিয়া, পিতা-আব্দুল হাকিম, সারাপ দ্বীপ। আব্দুল মাজিদ, পিতা-আব্দুস শুকুর, সাপার দ্বীপ। ফিরোজ আহাম্মেদ, পিতা-তাযেব মলুক, মন্দার ডাইল। আলী আহাম্মদ, পিতা-ওয়াজেদ আলী, সাপার দ্বীপ। মোহাম্মদ হুসেইন, পিতা-আব্দুল জলিল, হাজীরখালী। নবী হুসেইন, পিতা-খলিলুর রহমান, সাপার দ্বীপ। দরবেশ আলী, হাজী পাঠান আলী, টেকনাফ। আব্দুল মুন্নাফ, পিতা-আহাম্মেদ আলী, বাহারছড়া। মোহাম্মদ মীর কাশেম, পিতা-মোস্তাফিজুর রহমান, সামলাপার। মকবুল আলম, পিতা-নাসারুতুজ্জামান, মাতাভাঙ্গা। আহাম্মেদ হোসেন, পিতা-মোহাম্মদ কালু, সামপা পাড়া। সামছুল ইসলাম, পিতা-মোহাম্ম শফি, সিলখালী। জালাল আহাম্মেদ, পিতা-আবদুন্নবী, খুলারডাইল। আব্দুর রহমান, পিতা-আলী আহাম্মেদ, কাঞ্জরপাড়। কাদের হোসেন, পিতা-মকবুল হোসেন, কাটাখালী। জাফর আহাম্মেদ, পিতা-নাসির উদ্দিন, বরলাইল। জাফর জাফর আলম, পিতা-নাসির উদ্দিন, বরলাইল। আবুল কাশেম, পিতা-মৃত মোকলেসুর রহমান, সিকদার পাড়া।
নভেম্বর/২০১৯খ্রিঃ মাসে মহেশখালী থানা এলাকায় জলদস্যু, ভূমিদস্যু, অস্ত্রধারী ডাকাত, অস্ত্রের কারিগর ও তালিকাভুক্ত চিহ্নিত সন্ত্রাসী সহ সর্বমোট ৯৬ জন আত্মসমর্পন অনুষ্ঠানে তাদের নিকট হইতে বিভিন্ন ধরনের মোট ১৫৫টি অবৈধ অস্ত্র এবং ২৫৫ রাউন্ড কার্তুজ ও অস্ত্র তৈরীর বিভিন্ন সরঞ্জামাদি উদ্ধার করে আইন শৃংখলা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করায় মহেশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ জনাব প্রভাষ চন্দ্র ধরকে বিশেষ পুরুষ্কার প্রদান করেন চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি জনাব খন্দকার গোলাম ফারুক, বিপিএম, পিপিএম মহোদয়। অদ্য ২৩/১২/২০১৯খ্রিঃ তারিখ মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি মহোদয়ের হাত থেকে বিশেষ সম্মাননা পুরুষ্কার গ্রহণ করেন অফিসার ইনচার্জ জনাব প্রভাষ চন্দ্র ধর।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-