টক অব দ্যা কান্ট্রি : হাসিনার সাথে দল পরিচালনায় যাচ্ছেন কে?

ডেস্ক রিপোর্ট ◑ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধন। শনিবার দিনব্যাপী চলবে কাউন্সিল অধিবেশন। সম্মেলনে পরবর্তী সভাপতি হচ্ছেন শেখ হাসিনা এটা নিশ্চিত। তবে শেখ হাসিনার রানিং মেট কে হচ্ছেন সেটাই এখন টক অব দ্যা কান্ট্রিতে পরিণত হয়েছে। আর এই তালিকায় রয়েছেন আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতা।

জানা গেছে, সভাপতি পদে শেখ হাসিনাকেই অপরিহার্য মনে করছেন নেতাকর্মীরা। সে কারণে নবম বারের মত সভাপতি নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন তিনি। তাছাড়া প্রতিবারের মত এবারো সাধারণ সম্পাদকসহ অনান্য পদে কারা আসবেন সেটা কাউন্সিলররা শেখ হাসিনার উপর ছেড়ে দেবেন। শনিবার বিকেলেই সাধারণ সম্পাদকসহ শীর্ষ পদগুলোর নাম ঘোষণা করা হবে।

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রানিং মেট হিসেবে সবচেয়ে আলোচনায় রয়েছেন বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। দলের বেশ কয়েকজন নেতা এ বিষয়ে ইঙ্গিত দিয়েছেন। এছাড়া সাধারণ সম্পাদক পদে আলোচনায় রয়েছেন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, দীপুমনি, আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, বিএম মোজাম্মেল এবং তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ আলোচনায় রয়েছেন। যে সব নেতাদের নাম দলটির সাধারণ পদের জন্য আলোচনা হচ্ছে তারো কেউই নিজেদের প্রার্থী হিসেবে দাবি করছেন না। সবাই আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন। এর আগে বেলা তিনটার দিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ মঞ্চের পাশে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় তিনি ও ওবায়দুল কাদের সাদা পায়রা উড়িয়ে দেন। আর পাশেই আলাদা মঞ্চে শিল্পীরা জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন। প্রধানমন্ত্রীসহ অন্য নেতাকর্মী ও অতিথিরাও এতে সুর মেলান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় বসে গঠন করা দল নয়। আওয়ামী লীগ গ্রাম-গঞ্জের মানুষ নিয়ে গঠন করা দল। যখনই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে তখনই মানুষের উন্নতি হয়েছে। জাতির পিতা দরিদ্র মানুষদের জন্যই সারাজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। এই দেশের মানুষ ছিলো দারিদ্রসীমার নিচে, একবেলা খাবার পেতো, চিকিৎসা পেতো না। জাতির পিতার লক্ষ্য ছিলো এই ধারা থেকে জনগণকে মুক্তি করার। তিনি কিভাবে দেশ স্বাধীন করেছেন এটা তার প্রতিটি বক্তব্যেই এসেছে। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং যাবে। বাংলার মানুষের ভাগ্য নিয়ে আর কেউ ছিনিমিনি খেলতে পারবে না।’

সারাদেশ থেকে আসা দলীয় নেতাকর্ম‌ীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নীতি ও আদর্শ মেনে চললে সে দল গন্তব্যস্থলে পৌঁছাবেই। আমরা সবাই বঙ্গবন্ধুর আদর্শ অনুসরণ করব। তিনি যে নীতিতে বিশ্বাসী ছিলেন তা মেনে চলব। তাহলেই আমরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে পারব।’ তিনি বলেন, ‘তৃণমূল পর্যায়ের কাউন্সিলের মধ্যে দিয়ে সংগঠনকে আরও শক্তিশালী করা হবে। ইতোমধ্যে ২৯টি জেলায় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাকি সব জেলায় খুব দ্রুত সম্মেলন শেষ করা হবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘স্বাধীন হওয়ার পর মাত্র সাড়ে তিন বছরে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে একটি উন্নয়নশীল দেশে পরিণত করেছিলেন। তিনি বেঁচে থাকলে বাংলাদেশ অনেক আগেই উন্নত দেশ হতো।’ এদিকে সকাল থেকেই তীব্র শীত উপেক্ষা করে সারাদেশ থেকে আসা কাউন্সিলর, ডেলিগেট ও নেতাকর্মীরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে উপস্থিত হয়েছেন।

দলের জাতীয় সম্মেলনকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসহ রাজধানীজুড়েই উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। সকাল আটটা থেকেই লাইনে দাঁড়িয়ে সুশৃঙ্খলভাবে দলটির নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলে প্রবেশ করতে থাকেন। সম্মেলনকে ঘিরে নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ।

সম্মেলনস্থলে প্রবেশের জন্য পাঁচটি গেটের মধ্যে চারটি গেট সকাল থেকে খুলে দেয়া হয়। এই চারটি গেট দিয়ে সকাল থেকে সম্মেলনস্থলে প্রবেশ করেন নেতাকর্মীরা। ভিআইপি গেট দিয়ে প্রবেশ করেন শেখ হাসিনা। সম্মেলনকে কেন্দ্র করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে। পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন, তোরণ, আলোকসজ্জায় ঝলমল করছে পুরো সোহরাওয়ার্দী উদ্যান।

সম্মেলনে সারাদেশ থেকে প্রায় সাত হাজার কাউন্সিলর এবং ১৫ হাজার ডেলিগেটসহ ৫০ হাজার নেতাকর্মী ও আমন্ত্রিত অতিথি অংশ নিয়েছেন। ২৮টি এলইডি পর্দায় দেখানো হচ্ছে সম্মেলনের পুরো অনুষ্ঠান।

আরও খবর