ডেস্ক রিপোর্ট ◑
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ১১তম সমাবর্তনে রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর মো. আবদুল হামিদ বলেন, বর্তমানে শিক্ষকরা প্রশাসনের বিভিন্ন পদপদবি পাওয়ার লোভে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রমে ঠিকমতো অংশ নিচ্ছেন না। বরং তারা বিভিন্ন লবিংয়ে ব্যস্ত। অনেকে আবার নিজের স্বার্থের জন্য শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করতেও পিছপা হন না। ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক ভুলে গিয়ে পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট লেনদেনে সম্পৃক্ত হন। এটি অত্যন্ত অসম্মান ও অমর্যাদাকর। আপনারা ব্যক্তিগত চাওয়া ও পাওয়ার জন্য নীতি এবং আদর্শের সঙ্গে আপস করবেন না। শনিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ কামাল স্টেডিয়ামে এসব কথা বলেন তিনি।
সমাবর্তনে গ্র্যাজুয়েটদের উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রপতি বলেন, তোমরা দেশের উচ্চতর মানবসম্পদ। তোমাদের ওপর দেশের ভবিষৎ ও অগ্রগতি নির্ভর করছে। কখনও অর্জিত ডিগ্রির মর্যাদা, ব্যক্তিগত সম্মানবোধ আর নৈতিকতাকে ভুলণ্ঠিত করবে না। সবসময় সত্য ও ন্যায়ের পথে নিজেকে সমুন্নত রাখবে।
দেশকে এগিয়ে নিতে গবেষণা কার্যক্রমে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, শিক্ষানীতির মূল উদ্দেশ্য হলো, নতুন প্রজন্মকে মানবিকবোধসম্পন্ন দক্ষভাবে গড়ে তোলা। বিশ্ব আজ এক নজিরবিহীন গতিতে পরিবর্তিত হচ্ছে। এ পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইতে হবে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ফলে চাকরির বাজার অনেকটাই জটিল হয়ে গেছে। ফলে স্নাতকদের শিক্ষাজীবন শেষে একটি কঠিন মুহূর্ত পার করতে হয়। ভালো চাকরি পাবো কিনা সে নিয়ে অস্থিরতা তৈরি হয়। এ সময় তিনি গ্র্যাজুয়েটদের পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলার আহ্বান জানান।
সমাবর্তনের বক্তা ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, গ্র্যাজুয়েটদের চিন্তাহীন কাঠামো পরিবর্তন করতে হবে। দায়িত্ব ও অঙ্গীকার নিয়ে দেশের জন্য কাজ করতে হবে।
সমাবর্তনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অধ্যাপক মলয় কুমার ভৌমিকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান, স্বাগত বক্তব্য দেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনন্দ কুমার সাহা, শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমান আল-আরিফ, ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. চৌধুরী মো. জাকারিয়া।
এর আগে বিকেল সাড়ে ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ আমীর আলী মাঠের হেলিপ্যাডে অবতরণ করেন রাষ্ট্রপতি। সেখান থেকে উপাচার্যের বাসভবনে লাল গালিচার সংবর্ধনা ও গার্ড অব অনার প্রদান শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ কামাল স্টেডিয়ামে আগমন করেন তিনি। পরে জাতীয় সংগীত, পবিত্র ধর্মগ্রন্থসমূহ থেকে পাঠ, গ্রাজুয়েটদের ডিগ্রি প্রদান করা হয় এবং রাষ্ট্রপতি, সমাবর্তন বক্তা ও শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনিকে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠান শেষে বিকেল সাড়ে ৫টায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এ সময় রাসিক মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, রুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম শেখসহ প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, এবারের সমাবর্তনে ২০১৫ ও ২০১৬ সালে পিএইচডি, এমফিল, স্নাতকোত্তর, এমবিবিএস, বিডিএস ও ডিভিএম ডিগ্রি অর্জনকারী ৩ হাজার ৪৩১ জন গ্রাজুয়েট অংশ নেন।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-