জসিম উদ্দিন টিপু, টেকনাফ •
টেকনাফে ড্রাগন চাষের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। উচ্চমূল্য ফসল,রোগ বালাই কম এবং সহজে চাষ যোগ্য হওয়ায় নূতন ফসল হলেও চাষীরা দিন দিন এই চাষের দিকে ঝুঁকছে। টেকনাফের মাটি এবং পরিবেশ ড্রাগন চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী বলে জানাগেছে। অনূকুল পরিবেশ এবং চাষ সহজী করণ হওয়ায় প্রান্তিক কৃষকেরাও নূতন এই ফলের চাষ করার কথা ভাবছেন।
উপজেলার হোয়াইক্যং রইক্ষ্যং এলাকার কৃষক আব্দুল বাহাদুর এবং হ্নীলার রঙ্গিখালী এলাকার দুদু মিয়া জানান,ড্রাগন ফল নাকি ডায়বেটিস এবং ক্যান্সার রোগের জন্য বেশ উপকারী। ফলের দামও বেশী। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কারিগরী সহযোগীয় কৃষক বাহাদুর এবং দুদু মিয়ার মত অনেকে ড্রাগনের চাষ করার পরিকল্পনা করছে।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে,ড্রাগন ফল পুষ্টি সমৃদ্ধ ফসল। এতে প্রচুর পরিমাণে আয়রণ এবং ক্যালসিয়াম আছে। এটি ডায়াবেটিস এবং ক্যান্সার রোগের জন্যও উপকারী ফল। মূল্য বেশী হলেও নূতন এই ফলের কদর দিন দিন বাড়ছে।
কৃষকরা জানায়,শীতকাল ছাড়া সারা বছরই ড্রাগন ফলন দেয়। তবে,বর্ষাকালে ড্রাগন ফল বেশী ধরে। ড্রাগন ফল সহজে বংশ বিস্তার করে। সেচ এবং তেমন সারও প্রয়োগ করতে হয়না। নিয়মিত পরিচর্যা করলে চারা রোপনের ১বছরের মাথায় ফলন পাওয়া যায়। সবদিক বিবেচনায় কৃষকরা উচ্চমূল্য পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ ড্রাগনের চাষ করছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়,বর্তমানে টেকনাফে ১২টি ড্রাগনের বাগান আছে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ড্রাগন চাষে কারিগরী সহযোগীতা দিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া ব্যক্তি পর্যায়ে ৫০টিরও বেশী বসতভিটায় বিচ্ছিন্নভাবে ড্রাগনের চাষ করা হচ্ছে।
কৃষকরা জানান,এখনো টেকনাফে কৃষকসহ অনেকে আছেন, যারা কিনা ড্রাগন কি? কিভাবে চাষ করে? সে সম্পর্কে কিছুই জানেন না। অথচ ড্রাগন চাষের জন্য অতিরিক্ত জমিও লাগেনা। অন্যান্য ফসলের মত তেমন পরিচর্যাও করতে হয়না। বাড়ীর সামনে বা পিছনে ছোট্ট জায়গায় সহজে ড্রাগন চাষ করা যায়। দীর্ঘ মেয়াদী লাভবান হওয়া যায়। ড্রাগন গাছ সহজে মরেনা। নিয়মিত পরিচর্যার মাধ্যমে ৪০বছর পর্যন্ত এই গাছ থেকে ফলন পাওয়া যায়। সচেতন কৃষকরা উপজেলাজ্ুেড় ড্রাগন চাষের বিস্তার ঘটাতে কৃষি বিভাগের সহযোগীতায় সরকারী-বেসরকারী উদ্যোগের কথা জানান।
উপজেলার হোয়াইক্যং লম্বাঘোনা এলাকার সফল কৃষক বাবু কিং তঞ্চঙ্গা জানান,২০১৬ সনে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগীতায় ২০শতক জমিতে আমি ড্রাগন ফলের চাষ শুরু করি। পরের বছর থেকেই ১শ ৬০টি গাছে ফলন দিতে শুরু করে। প্রতি মৌসুমে তিনি সহজে ৩০/৪০হাজার টাকা আয় করেন বলে জানান। উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শফিউল আলম জানান,এটি একটি উচ্চমূল্য ফসল। টেকনাফে ড্রাগনের চাহিদা খুব বেশী। রোগব্যাধী কম, ফলের চাহিদা বেশি হওয়ায় কৃষকরাও চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-