ওমর ফারুক হিরু :
কক্সবাজার থেকে এই বছর (২০১৯ সালের) বিদেশে রপ্তানী হয়েছে ১২৫ মেট্রিক টন সামুদ্রিক মাছ। যা কিনা গত বছরের (২০১৮ সালের) তুলনায় বেশি। মৎস্য সম্পদ রক্ষার্থে সরকারী নির্দেশনা মান্য করে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত সাগরে মাছ ধরা বন্ধ রাখার ফলে এই সফলতা এসেছে বলে জানান মৎস্য কর্মকর্তা ও সচেতন মহল।
কক্সবাজার মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের হিসাব অনুযায়ী ২০১৮ সালের অর্থ বছরে স্থানীয় বাজার ও দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানী হয়েছিল ৭৫ মেট্রিকটন সামুদ্রিক মাছ। আর এই বছর ২০১৯ সালে রপ্তানী হয়েছে ১২৫ মেট্রিকটন। যা গত বছরের তুলনায় ৫০ মেট্রিক টন বেশি।
প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, কক্সবাজারে ছোট-বড় ৫ হাজারের অধিক মাছ ধরার ট্রলার সমুদ্র থেকে মাছ শিকার করে বিদেশে রপ্তানীর জন্য চট্টগ্রাম বন্দরের জাহাজে তুলে দেওয়া পর্যন্ত চলে বিশাল কর্মযজ্ঞ। সাগর থেকে মাছ আহরণ শেষে বাচাঁই, পরিষ্কার, নাম্বারিং, প্যাকিং, উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ব্লাস্ট ফ্রিজে সংরক্ষন পরে মৎস্য অধিদপ্তরের পরিক্ষা শেষে বেদেশে রপ্তানীর জন্য ছাড়পত্র দেয়া হয়। এর পর চট্টগ্রাম থেকে জাহাজের মাধ্যমে চিন, সাউথ কোরিয়া সহ বিশে^র বিভিন্ন দেশে রপ্তানী করা হয়।
বিদেশে রপ্তানীকৃত মাছের মধ্যে রয়েছে রূপচাঁদা, পাতা, মায়া, কামিলা, ছুরি, কেটল ফিস, স্টোইট, কাঁকড়া ও চিংড়ী। বিদেশ রপ্তানীতে এই কাজ নিখুঁতভাবে সম্পন্ন করতে দৈনিক ব্যস্থ সময় কাটে মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের।
কক্সবাজার মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের সিনিয়র সুপারভাইজার আব্দুর সাত্তার জানান, ফিসারী ঘাট থেকে মাছগুলো ফ্রিজার ভ্যানে করে মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনে আনা হয়। এসব মাছ রিসিভ করে গ্রেড করা হয়। গ্রেড করার পরে প্রোডাকশন রুমে আনা হয়। পরে নাম্বারিং করে প্যাকেং করা হয় এবং রপ্তানীর জন্য ব্লাস্টে ফ্রিজআপ করা হয়।
মৎস্য প্রক্রিয়াকরণ ও বিপণন কেন্দ্রের ম্যানেজার মোহাম্মদ রঞ্জুর রহমান জানান, মাছ গ্রহণ থেকে শুরু করে রপ্তানী পর্যন্ত পুরোটাই চেকআপ করা হয়। কোন মাছে ক্রটি আছে কিনা তা পরিক্ষা করা হয়। যেসব মাছ রপ্তানী যোগ্য নয় তা আলাদা করা হয়।
মাছ ব্যবসায়ী শ্যামল দেবনাথ জানান, ‘মৎস্য অবহরণ কেন্দ্র থেকে রপ্তানী উপযোগী মাছ সংগ্রহ করে বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনে আনার পরে পক্রিয়া জাত করণ শেষে পুনরায় ফ্রিজিং গাড়িতে করে চট্টগ্রাম বন্দরে নিয়ে চায়না-সাউথ কুরিয়া সহ বিশে^র বিভিন্ন দেশে মাছ রপ্তানী করি।
‘কক্সবাজার মৎস্য প্রক্রিয়াকরণ ও বিপণন কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক মো: ইসানুল হক জানান, গত অর্থ বছরে (২০১৮) বিদেশে রপ্তানী করা হয়েছে ৭৫ মেট্রিকটন সামুদ্রিক মাছ। আর এই (২০১৯) অর্থবছরে রপ্তানী করা হয়েছে ১২৫ মেট্রিকটন। দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে মাছ রপ্তানীর এই সফলতায় জন্য সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী নিধারিত ২২ দিন পর্যন্ত মাছ ধরা বন্ধ রাখাকেই সফলতার কারণ হিসেবে দেখছেন এই মৎস্য কর্মকর্তা।
সচেতন মহল বলছেন, মৎস্য সম্পদ রক্ষার্থে প্রতিবছর সরকারের নির্দেশ মান্য করলে মৎস্য ভান্ডার বৃদ্ধির পাশাপাশি অর্থনীতি‘র চাকা চাঙ্গা হবে। আর মৎস্য খাতে ঘটবে বিপ্লব।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-