সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য চট্টগ্রাম নগরীতে দুই হাজার ৪৯৬টি ফ্ল্যাট নির্মাণের প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। সেখানকার ৭২টি পরিত্যাক্ত বাড়ি ভেঙে দুই ধাপে এই ফ্ল্যাটগুলো নির্মাণ করা হবে।
বুধবার (২০ নভেম্বর) বিকেলে কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে সংবাদ ব্রিফিংয়ে অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব নাসিমা বেগম। তিনি জানান, গণর্পূত অধিদফতরের বাস্তবায়নাধীন চট্টগ্রামের ৩৬টি পরত্যিক্ত বাড়িতে সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় চট্টগ্রামের বিভিন্ন জায়গায় ১০ তলা আবাসিক ভবন নির্মাণের একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রথম ধাপে এতে ১২৫০, ১০০০ ও ৮০০ স্কয়ার ফুটের মোট ১২৪৮টি ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হবে। এই ভবনগুলো নির্মাণে ব্যয় হবে ১০১ কোটি ৬১ লাখ ৪৬ হাজার টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে মেসার্স নূরানী কনস্ট্রাকশন লিমিটেড নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
নাসিমা বেগম বলেন, একই প্রকল্পের আওতায় অন্য একটি প্রস্তাবে চট্টগ্রামে ৩৬টি পরিত্যক্ত বাড়িতে ১২ তলা আবাসকি ভবন নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রথম ধাপে এতে ১২৫০, ১০০০ ও ৮০০ স্কয়ার ফুট আকারের মোট ১২৪৮টি ফ্লাট নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পের একটি প্যাকজেরে আওতায় পাঁচটি দরপত্র বিক্রি হলেও একটি দরপ্রস্তাব পাওয়া যায়। টিইসি কর্তৃক সুপারিশ করা রেসপনসিভ একমাত্র দরদাতা প্রতষ্ঠিান মেসার্স জামাল অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেডের নাম প্রস্তাব করে। কমিটি প্রস্তাবটিতে অনুমোদন দিয়েছে। প্রকল্পে ব্যয় হবে ১০৬ কোটি ২০ লাখ ৭০ হাজার টাকা।
বুধবারের বৈঠকে আরও ছয়টি প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। প্রস্তাবগুলোর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিউবো) অধীন বিতরণ অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত (সিলেট, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহ) চারটি শহরে আন্ডারগ্রাউন্ড কেবল ডিস্ট্রিবিউশন নেটওয়ার্ক সিস্টেম স্থাপন কাজের সম্ভাব্যতা যাচাই প্রাক্কলন ও ডিপিআর প্রস্তুতকরণের জন্য পরামর্শক নিয়োগের ক্রয় প্রস্তাব। এই প্রকল্পে ব্যয় হবে ২৫ কোটি ৩১ লাখ টাকা। অস্ট্রেলিয়ার নলেজ ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি পরিমর্শক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে পরামর্শক সেবা নেওয়া হবে।
স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের নিয়ন্ত্রণাধীন ১৩ হাজার ৭২৪টি কমিউিনিটি ক্লিনিকে ওষুধ সরবরাহের জন্য কমিউিনিটি বেইজড হেলথ (সিবিএইচসি) অপারেশনাল প্ল্যানে ২০১৯-২০ অর্থবছরে জিওবি (উন্নয়ন) খাতের আওতায় সরকারি প্রতিষ্ঠান অ্যাসেনশিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেড থেকে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ২৭ প্রকার ওষুধ কেনার প্রস্তাবেও অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। সরকারি প্রতিষ্ঠান অ্যাসেনশিয়াল ড্রাগস এসব ওষুধ সরবরাহ করবে। এতে ৮৬ হাজার ৫০০ কার্টন ওষুধ কেনা হবে। প্রতি কার্টনের দাম ১৭ হাজার ৩৪০ টাকা। এ প্রকল্পে মোট ব্যয় ১৪৯ কোটি ৯৯ লাখ টাকা।
এছাড়া পর্যটন মহাপরিকল্পনা প্রণয়নের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক পর্যটন পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগের লক্ষ্যে ক্রয় প্রস্তাবেও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটিতে ব্যয় হবে ২ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। ভারতের আইপিইি গ্লোবাল লিমিটেডের সঙ্গে ফ্রান্স ও বাংলাদেশের একটি প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে পরামর্শক সেবা দেবে।
বৈঠকে দুইটি প্রস্তাব টেবিলে উপস্থাপন করা হয়। এর মধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে দু’টি লটে ২৫ হাজার টন ইউরিয়া সার আমাদানির একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রতি টন সারের দাম ২৪৪ দশমিক ২৫ ডলার হিসেবে বাংলাদেশি টাকায় ব্যয় হবে ৫১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। এর আগে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে আমদানি করা ইউরিয়া সারের একটি প্রস্তাবের বিষয়ে বৈঠকে অবহিতকরণ করা হয়েছে।
সব মিলিয়ে সাত প্রস্তাব বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৪৬৩ কোটি ৫১ লাখ টাকা।- সারাবাংলা
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-