মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :
কক্সবাজার জেলার ৮ টি উপজেলায় ৫০৭ টি সাইক্লোন শেল্টার সম্পূর্ণ প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে। নিজ নিজ উপজেলার ইউএনও গণ এসব সাইক্লোন শেল্টারে উপকূলের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে নিরাপদ আশ্রয়ে লোকজনকে নিয়ে আসতে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে।
তবে আল্লাহর রহমতে কক্সবাজার জেলা এখনো ৭ টি অতি ঝুঁকিপূর্ণ জেলাতে না পড়ায় মানুষের দূর্ভোগের কথা চিন্তা করে জেলার উপকূলবাসীকে আস্তে আস্তে সাইক্লোন শেল্টার সমুহে আনার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এছাড়া জেলার সকল প্রাইমারী ও মাধ্যমিক স্কুল গুলোকেও উপকূলবাসীর আশ্রয়ের জন্য তৈরি রাখা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ এর মোকাবেলায় জেলা প্রশাসনের প্রস্তুতি কেমন রয়েছে, এমন প্রশ্নের জবাবে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন এ তথ্য জানান।
তিনি ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ এর গতি প্রকৃতি ও আবহাওয়ার সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করে দ্রুততম সময়ে যেকোন সিদ্ধান্ত নিতে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে। ইতিমধ্যে ঘূর্ণিঝড় বুলবুল মোকাবেলায় প্রস্তুতি নিতে জেলা ও উপজেলা দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি সমুহ সভা করে সিদ্ধান্ত গুলো বাস্তবায়ন শুরু করেছে।
জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন বলেন, প্রতিটি উপজেলায় ২ লাখ ৬২ হাজার করে নগদ অর্থ দেওয়া হয়েছে। প্রতি উপজেলাতে ২০৬ মেঃ টন করে চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আরো ত্রান সামগ্রী জরুরী ভিত্তিতে প্রেরণের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চাহিদা পাঠানো হয়েছে। জেলায় ৬৪৫০ জন রেডক্রিসেন্টের উদ্ধারকারী স্বেচ্ছাসেবককে স্টেনবাই রাখা হয়েছে। ৯৭ টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। পানি বিশুদ্ধিকরণ টেবলেট ও পর্যাপ্ত শুকনো খাবার মজুদ রাখা হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসকে যে কোন প্রতিকূল অবস্থা মোকাবেলায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, জেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ সহ প্রতিটি উপজেলায় পৃথক নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে। নিয়ন্ত্রণ কক্ষ গুলো ঘূর্ণিঝড় বুলবুল এর প্রভাব না কমা পর্যন্ত ২৪ ঘন্টা খোলা থাকবে। প্রত্যেক নিয়ন্ত্রণ কক্ষে মোবাইল ফোন দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের মোবাইল ফোন নম্বর হলোঃ ০১৭১৫৫৬০৬৮৮।দুর্যোগকালীন সহায়তার জন্য সেনাবাহিনীকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এনজিও এবং আইএনজিও গুলোও তাদের সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। আপদকালীন যেকোন সংকটের কথা সেবাপ্রার্থীরা মোবাইল ফোনে জানালেই প্রশাসনের লোকজন সম্ভব চাহিত সেবা দিতে তাৎক্ষণিক চলে যাবে ইনশাল্লাহ। এছাড়া জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী দূর্যোগকালীন আপদ মোকাবেলায় জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সকল কর্মকর্তা কর্মচারীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত ছুটি বাতিলের এ আদেশ বহাল থাকবে বলে ডিসি মোঃ কামাল হোসেন জানিয়েছেন।
সার্বিক প্রস্তুতিটা এমন যে, যদি ঘূর্ণিঝড় বুলবুল মোকাবেলা করতে হয়, তাহলে উপকূলবাসীর জানমালের নিরাপত্তা বিধান করে সফলভাবে মোকাবেলা করতে সক্ষম হবো বলে ডিসি মোঃ কামাল হোসেন দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ মোকাবেলায় তিনি সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা ও মহান আল্লাহতায়লার অসীম রহমত কামনা করেছেন। এছাড়া উপকূলবাসীকে ঘূর্ণিঝড় বিষয়ক সরকারি ও এনজিও-র সকল পরামর্শ মেনে চলে এ বিষয়ে সবসময় সচেতন থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-