গিয়াস উদ্দিন ভুলু,কক্সবাজার জার্নাল
টেকনাফে গহীন পাহাড়ে লুকিয়ে থাকা রোহিঙ্গা ডাকাত দলকে দমন করার জন্য র্যাব-১৫ সদস্যরা বিভিন্ন কৌশল হাতে নিয়েছে। কারণ ইদানিং রোহিঙ্গা ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্যরা দিনের পর দিন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। অপহরণ, ধর্ষণ, ছিনতাই, মাদক কারবারসহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ডে জড়িত। তথ্য সুত্রে দেখা যায় রোহিঙ্গা ডাকাত দলের মূলহোতা হচ্ছে শীর্ষ রোহিঙ্গা ডাকাত আবদুল হাকিম।
এই হাকিম ডাকাতকে আইনের আওয়তাই নিয়ে আসতে স্থানীয় আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা বেশ কয়েকবার অভিযান পরিচালনা করেও ডাকাত আব্দুল হাকিমকে আটক করতে পারেনি।
সেই সূত্র ধরে ২৫ অক্টোবর শুক্রবার সকাল ৬ টা থেকে বিকেল ৩ টা পর্যন্ত কক্সবাজারের টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নে অন্তর্গত বেশ কয়েকটি দূর্ঘম পাহাড়ে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব-১৫। এই প্রথম ড্রোন উড়িয়ে পাহাড়ে লুকিয়ে থাকা ডাকাত ও গড়ে আস্তানার তথ্য সংগ্রহ করার জন্য একটি সাঁড়াশী অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। অভিযান চলাকালিন র্যাবৈর উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে গেছে। তবে র্যাব সদস্যরা পাহাড়ে গড়ে উঠা ডাকাতদের আস্তানার অনেক তথ্য সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে এসব তথ্য প্রকাশ করেনি র্যাব।
উক্ত অভিযানের নেতৃত্বদেন কক্সবাজার র্যাব-১৫ অধিনায়ক উইং কমান্ডার (সিও)আজিম আহমেদ।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, র্যাব-১৫’র উপ-অধিনায়ক মেজর রবিউল হাসান, সিপিএসসি কোম্পানী কমান্ডার মেজর মেহেদী হাসান, সিপিএসসি স্কোয়াড কমান্ডার এডিশনাল এসপি বিমান চন্দ্র কর্মকার, সিপিসি-১ কোম্পানী কমান্ডার লেঃ মির্জা শাহেদ মাহতাব,সিপিসি-২ কোম্পানী কমান্ডার এএসপি শাহ আলম প্রমুখ।
র্যাব জানায়,টেকনাফে রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন পাহাড়ী এলাকা গুলোতে ডাকাদের সক্রিয় সদস্যরা সাধারণ রোহিঙ্গা ও স্থানীয়দের জিম্মি করে প্রায়ই লুটপাট চালায়। এ ছাড়া ডাকাত দলের সদস্যরা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে রোহিঙ্গাদের বাসায় ঢুকে মালপত্র লুট ও অপহরনের অভিযোগ রয়েছে। ক্যাম্পের ভেতর বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও হামলা চালানো হয়।
টেকনাফে পাহাড়ে লুকিয়ে থাকা অস্ত্রধারী রোহিঙ্গা ডাকাত দলকে দমন করতে এই প্রথম ড্রোন উড়িয়ে র্যাব-১৫ অধিনায়ক উইং কমান্ডার আজিম আহমেদের নেতৃত্বে র্যাবের বেশ কয়েকটি টিম বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন টেকনাফ বাহারছড়া ইউনিয়নের অন্তর্গত বেশ কয়েকটি পাহাড়ে অভিযান পরিচালনা করেছে র্যাবব। তবে এই অভিযানে কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। তবে ড্রোন উড়িয়ে গহীন পাহাড়ে লুকিয়ে থাকা ডাকাত দলের বেশ কিছু তথ্য সংগ্রহ করার মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছে র্যাব।
এছাড়া গত ২০ অক্টোবর গভীর রাতে টেকনাফ বাহাছড়া শীলখালী মাঠপাড়া এলাকার ‘হেডম্যান’ আবুল কালামের বসত বাড়ীর দরজা ভেঙ্গে স্কুল ছাত্রী লাকি (১২) ও তসলিমা(১৪) তার দুই কিশোরী মেয়েকে অপহরণ করে গহীন পাহাড়ে নিয়ে যায় রোহিঙ্গা ডাকাত আব্দুল হাকিম বাহিনী। এরপর স্থানীয় জনগন ও পুলিশের সহযোগীতায় অপহরন হওয়া দুই কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়েছিল।
অভিযান শেষ করে,কক্সবাজার র্যাব-১৫ অধিনায়ক উইং কমান্ডার (সিও) আজিম আহমেদ বলেন, টেকনাফ উপজেলা রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন পাহাড়ি এলাকায় শীর্ষ রোহিঙ্গা হাকিম ডাকাত বাহিনীর অবস্থানের খবর রয়েছে। এই ডাকাত দলের সদস্যরা গহীন পাহাড়ের ভিতরে আস্তানা তৈরী করে অত্র উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় খুন,অপহরন,ধর্ষনসহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। তাই এই ডাকাত হাকিম বাহিনীকে আটক করার জন্য আমরা প্রাথমিক ভাবে পাহাড়ী এলাকায় একটি অভিযান পরিচালনা করলাম।
এদিকে সর্ব প্রথম র্যাব হেড কোয়ার্টার থেকে ড্রোন এনে পাহাড়ি ভিতরে লুকিয়ে থাকা ডাকাত ও তাদের আস্তানা সনাক্ত করার জন্য ড্রোনের ওড়িয়ে ডাকাত ও সন্ত্রাসীদের দমন করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে কক্সবাজার র্যাব-১৫।
সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী মাদক পাচার প্রতিরোধের পাশাপাশি ডাকাত ও সন্ত্রাসীদের দমন করার জন্য র্যাব সদস্যদের চলমান এই অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে উল্লেখ করে র্যাব কর্মকর্তা আজিম আহামেদ আরো বলেন, এই ডাকাত দলকে আইনের আওয়তাই নিয়ে আসার জন্য প্রয়োজনে দূর্ঘম গহীন পাহাড়ি এলাকা গুলোর মধ্যে হেলিকপ্টারের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করবে র্যাব।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-