মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের চেয়ে ভাষানচরে যাওয়াই ভালো”-মনে করছে রোহিঙ্গারা

ডেস্ক রিপোর্ট•  আরআরআরসি অফিস সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রে জানা গেছে,মূলতঃ এখনো পর্যন্ত সাড়ে চার হাজার রোহিঙ্গা ভাষানচরে যেতে রাজী হয়েছে। তবে ভাষানচরে যেতে ইচ্ছুক রোহিঙ্গাদের সংখ্যা বাড়বে বলে অনুমান করা হচ্ছে।

গত দু বছরে দু’দফায় মিয়ানমারে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের চেষ্টা করা হয়েছে। এ নিয়ে রোহিঙ্গারা উদ্বিগ্ন।
ভাষানচরে যেতে ইচ্ছুক রোহিঙ্গারা মনে করছে,ওই দ্বীপে স্থানান্তরিত হলে,মিয়ানমারে ফেরত যাবার চাপ থাকবে না।

মূলতঃ যে কোন মূল্যে বাংলাদেশে রয়ে যাবার পক্ষপাতি রোহিঙ্গারা ভাষানচরে যাবার ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে উঠছে বলে জানা গেছে।

এদিকে আগামী নভেম্বর মাসে ভাষানচরে রোহিঙ্গা স্থানান্তর করার কথা বলছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
কিন্তু মাঠ পর্যায়ে এব্যাপারে কোনো প্রস্তুতি নেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বেসরকারি সংস্থার এক কর্মকর্তা জানান,ভাষানচরে রোহিঙ্গাদের নেয়ার আগেই সেখান এনজিওদের “সেটআপ” করতে হবে। এখনও এনিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয় নি।

উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নিকারুজ্জামান চৌধুরী জানান, “বর্তমানে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সংখ্যা স্থানীয়দের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি। অন্তত এক লাখ রোহিঙ্গা যদি এখান থেকে সরানো যায় তাহলে অন্তত কিছুটা চাপ কমবে।”

টেকনাফ জাদিমুরা শালবন শরণার্থীশিবিরের ক্যাম্প ইনচার্জ মো. খালেদ হোসেন বলেন, “ভাসানচরে যাওয়ার ব্যাপারে এবার রোহিঙ্গাদের মধ্যে বেশ ভালো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। শুধু টেকনাফ জাদিমুরার ৩০ পরিবার আগ্রহ প্রকাশ করেছে।”

তিনি বলেন, “প্রাথমিকভাবে আমরা রোহিঙ্গাদের কাছে ভাসানচরে কী কী সুবিধা আছে তা জানাচ্ছি। এর আগে বৈঠক করে মাঝিদের আমরা এ বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছি। এখন মাঝিরাও সাধারণ রোহিঙ্গাদের বোঝাচ্ছে। সবকিছু শুনে অনেকেই ভাসানচরে যেতে আগ্রহ দেখাচ্ছে।”

উখিয়ার কুতুপালং শরণার্থী ক্যাম্প-৩ এর বাসিন্দা ফাতেমা বেগম (২৩) বলেন, “এখানকার ঘরগুলো ছোট ছোট। আমরা মানুষ আছি চারজন। এখানে থাকতে সমস্যা হচ্ছে। ভিডিওতে দেখে ভাসানচর জায়গাটি আমার পছন্দ হয়েছে। তাই আমরা স্বেচ্ছায় সেখানে চলে যাচ্ছি।”

আরেক বাসিন্দা মো.আলম (২৫) বলেন, “জায়গাটি দেখে আমার খুব পছন্দ হয়েছে। ঘরবাড়িগুলোও বড় বড়।”

তিনি বলেন, “এখানে খুব গাদাগাদি করে থাকতে হচ্ছে। এখানে কোন কাজকর্মও করতে পারছিনা। ওখানে গেলে কাজকর্ম করতে পারবো। ভালভাবে থাকতে পারবো। সে কারণে যাওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছি।”

মো. আলম (২৩) বেনারকে বলেন, “ভাসানচরে হালচাষ করতে পারবো। মাছ চাষ করতে পারবো। ভালভাবে ঘুমাতে পারবো। শুনেছি অনেক সুযোগ সুবিধা আছে। সে কারণে আমরা যেতে রাজি হচ্ছি।”
এদিকে ১০ হাজার রোহিঙ্গাকে আগামী মাসে ভাসান চরে স্থানান্তারের প্রক্রিয়া শুরু করা হবে বলে ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মহাবুব আলম তালুকদার জানিয়েছেন৷

নভেম্বরের প্রথম অথবা দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে নৌকায় করে এদের ভাসান চরে স্থানান্তরের প্রক্রিয়া শুরু করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি৷ বাংলাদেশে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের অনেকেই স্বেচ্ছায় ভাসানচরে যেতে সম্মত হয়েছে বলে জানান মাহবুব তালুকদার৷

আরও খবর