গিয়াস উদ্দিন ভুলু,কক্সবাজার জার্নাল •
অবশেষে দুই দিন অতিবাহিত হওয়ার পর টেকনাফে ডাকাত দলের হাতে অপহরণ হওয়া স্কুল পড়ুয়া দুই কিশোরীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
তথ্য সুত্রে দেখা যায়, গত ২০ অক্টোবর ভোর রাত আড়াইটার দিকে শীর্ষ রোহিঙ্গা হাকিম ডাকাতের নেতৃত্বে একদল ডাকাত টেকনাফ বাহাছড়া ইউনিয়ন শীলখালী মাঠপাড়া এলাকার ‘হেডম্যান’ আবুল কালামের বসত বাড়ীর দরজা ভেঙ্গে ঘরে প্রবেশ করে স্বর্ন-অলংকার নগদ টাকা লুট করার পাশাপাশি তার স্কুল পড়ুয়া ৬ষ্ট শ্রেনীর ছাত্রী লাকি(১২), তসলিমা(১৪) দুই কিশোরী মেয়েকে অপহরণ করে গহীন পাহাড়ে নিয়ে যায়। ঘটনার সেই রাত থেকে স্থানীয় জনগনের সহযোগীতা নিয়ে মেয়ে দুটোকে উদ্ধার করার জন্য পুলিশ সদস্যরা বেশ কয়েবার সাঁড়াশী অভিযান পরিচালনা করে। কিন্তু অপহরণের দীর্ঘ ৪৫ ঘন্টা অতিবাহিত হয়ে গেলেও দুই কিশোকীকে উদ্ধার করতে পারেনি।
অবশেষে ২৩ অক্টোবর টেকনাফ থানা ও বাহারছড়া ফাঁড়িতে কর্মরত পুলিশ সদস্যদের সাঁড়াশী অভিযান পরিচালনা করে ভোর রাত ৩টার দিকে গহীণ পাহাড়ের ভিতর থেকে অপহরন হওয়া দুই মেয়েকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয় পুলিশ। উক্ত খবরটি চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছে টেকনাফের আপাময় জন-সাধারন।
অপহরণ হওয়া দুই কিশোরীর আপন বড় ভাই শামলাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেনীর ছাত্র মোঃ রেদুয়ান অভিমত প্রকাশ করে বলেন, পুলিশ ও স্থানীয় জনগন ও সংবাদ কর্মিদের আন্তরিকতার কারনে ডাকাত দলের হাতে অপহরন হওয়া আমার দুই কিশোরী বোনকে ফিরে পেয়ে আল্লাহর দরবারে শুকুরিয়া আদায় করছি।
দুই কিশোরী উদ্ধার হওয়ার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে
টেকনাফ থানার আওয়তাধীন বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির তদন্ত কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন জানান,
গত ২০ অক্টোবর ডাকাতদের হাতে অপহরন হওয়া দুই কিশোরীকে উদ্ধার করার জন্য গহীন পাহাড়ে আমরা বেশ কয়েবার সাঁড়াশী অভিযান পরিচালনার পাশাপাশি বিভিন্ন কৌশল হাতে নিয়েছি। অবশেষে ২৩ অক্টোবর গভীর রাতে পুলিশের একটি দল আবারও একটি সাঁড়াশী অভিযান পরিচালনা করে।
উক্ত অভিযানে ডাকাত দলের সদস্যরা দিশেহারা হয়ে দুই মেয়েকে তাদের বাড়ীর পার্শ্ববর্তী পাহাড়ে রেখে সু-কৌশলে পালিয়ে যায়। তিনি আরো বলেন উদ্ধার হওয়া দুই কিশোরী খুবেই অসুস্থ হওয়ায় তাদেরকে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সুস্থ হলে ঘটনার মুল রহস্য কি জানতে সক্ষম হবো।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় বেশ কয়েক লোকের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে জানা যায়, অপহরণ হওয়া দুই কিশোরীকে উদ্ধার করার জন্য ভুক্তভোগীর পরিবার সদস্যরা ডাকাত দলের দাবীকৃত মুক্তিপন দেওয়ার পর তাদেরকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তবে মুক্তিপন দেওয়ার সঠিক কোন তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি!
এব্যাপারে উদ্ধার হওয়া দুই কিশোরীর পিতা হেডম্যান আবুল কালামের হাতে থাকা ০১৮৮৭০২২৩২৯ মোবাই নাম্বারে ঘটনার আসল রহস্য কি? জানার জন্য ফোন করা হলে উক্ত মোবাইল নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়।
উল্লেখ্য, উক্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে ২২ অক্টোবর মঙ্গলবার সন্ধার দিকে অপহরন হওয়া দুই কিশোরীর পিতা আবুল কালাম বাদী হয়ে শীর্ষ রোহিঙ্গা ডাকাত আব্দুল হাকিমকে প্রধান আসামী করে টেকনাফ মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে।
এদিকে শীর্ষ রোহিঙ্গা ডাকাত ‘আব্দুল হাকিম’ ও তার সহযোগীদের দমন করার স্থানীয় আইন-শৃংখলা বাহীনির সদস্যরা বেশ কয়েক বার সাঁড়াশী অভিযান পরিচালনা করেছিল। উক্ত অভিযানে এবং কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ তার আপন ভাই, স্ত্রীসহ বেশ কয়েক জন চিহ্নিত ডাকাত নিহত হয়েছিল।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-