রত্নাপালং যুদ্ধে আতংকের ক্ষতি টুকুন যেন হয় মোর উত্তরাধিকার!

আলমগীর মাহমুদ

রত্নাপালং উখিয়া কক্সবাজারের একটি নান্দনিক ইউনিয়ন। পূর্বসীমানায় অবাক করা উচু পাহাড়। যাহ উত্তর দক্ষিণ লম্বালম্বি হয়ে টেকনাফ পর্যন্ত বিস্তৃত। প্রকৃতির পাহাড়ি প্রাচীরেই যেন বিচ্ছিন্ন করা দূ’দিকে দূটি দেশ। বাংলাদেশ বার্মা। আজকের মায়ানমার।

বার্মাদেশের আরাকানীদের সুখ দুখেই এপারের আপামর জনগনের জীবনমানে ঘটেছে ছন্দপতন। এসেছে জীবনের সুখ দুখের কালবৈশাখী ।

আরাকানীরা বর্মীদেশে যখন থেকেই নির্যাতিত , অসহায়, ঘরছাড়া, রিক্ত, নিরাশ্রয় তখনই তারা পুরানো কাপড়ের পুটলাটা কাঁধে নিয়ে গোয়ালের গরুর গলায় থাকা রশিটি টানতে টানতে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ঠাঁই নিয়েছে উখিয়া টেকনাফের ভূমিতে ।

সেই ১৭৮৪ সালের বর্মীরাজ বোধপায়া আরাকান দখল করার পর থেকে। সেদিনের আরাকানি রিফুইজি থেকে আজকের রোয়াইঙ্গা রিফুইজি এই বিস্তৃত সময়ে এপারের মানুষের শুধু সুখই দুখে পরিণত হয়নি, সাথে হারিয়েছে বাপ দাদার হাজার বছরের কৃষ্টি কালচার ইতিহাস ঐতিহ্যও।

হারাতে হারাতে পূর্বপুরুষের মণণে ভালবাসায় লালিত এলাকার নামটিও গেছে বদল হয়ে। একজন বৃটিশের (ক্যাপ্টেন হিরাম কক্স) নামেই হয়ে আছে এই ভূমির নাম।

প্যানোয়া, পালংক্যি, বাকোলী এই প্রাচীন নাম আজ অচিন, বিস্মৃত, বিলুপ্ত। ক্যাপ্টেন হিরাম কক্সের নামে ধারিত হতে বাধ্য হয়েছে ”কক্সবাজার”।

বাপ দাদা চৌদ্দগোষ্টীর লালিত এলাকার নামের কবর দিয়েছে কক্সবাজারবাসী। মনঃতাপ ভুলে মেনে নিয়েছে হা,হুতাশ বিনে। বেশী মনঃদাহ কষ্ট দিলে সে মনেরে বুঝিয়েছে ‘এটিই তোর কপাল লিখন’।

রোয়াইঙ্গাসেবক কর্তাব্যক্তিরা যখন রিফুইজি আসায় কক্সবাজারবাসীর কোন ক্ষতিই হয়নি বরং তারা লাভবানই হয়েছে বলে, গরম বাতাসের দীর্ঘশ্বাস বিসর্জনে শান্তি পাওন ছাড়া কোন পথই রয় না খোলা! কারন একটি, আমাদের যে অতীত আছে সে খবর যে আমরা নিজেরাই রাখি না !!

(আগামীকাল বাকী অংশ ‘রত্নাপালং এর যুদ্ধ বৃটিশ শাসন আমলে)

লেখক: বিভাগীয় প্রধান (সমাজবিজ্ঞান বিভাগ)
উখিয়া কলেজ, উখিয়া, কক্সবাজার।
ইমেইল: alamgir83cox@gmail.com

আরও খবর