কক্সবাজারে মাদকের বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে মামা-ভাগিনা সিন্ডিকেট

শাহীন মাহমুদ রাসেল :

বেপরোয়া হয়ে উঠেছে মাদক ব্যবসায়ী রাসেল ও জামাল বাহিনীর প্রধান জামাল। কক্সবাজার শহরের কলাতলী ও সদর থানার মাদক ব্যবসায়ীর গডফাদার হিসেবে পরিচিত রাসেল ও জামালের রয়েছে শক্তিশালী সিন্ডিকেট।

এলাকার বেশ কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে নিয়ে গড়ে তুলেছেন নিজস্ব বাহিনী। এ দুজন মাদক ব্যবসায়ীর গড ফাদারের মধ্যে রাসেল ও জামালের নামে চারঘাট, সদর থানাসহ দেশের বিভিন্ন থানায় রয়েছে একাধিক মাদকের মামলা। কিন্তু দিব্যি এলাকায় অবস্থান নিয়ে গোপন আস্তানায় বসে মাদকের নিয়ন্ত্রণ করছেন রাসেল ও জামাল।

তারা দুজনেই এলাকায় অবস্থান করলেও রহস্যজনক কারণে পুলিশ তাদের আটক করছেনা। সদর উপজেলার কলাতলী এলাকার শামশুর ছেলে মোস্ট ওয়ানটেড মাদক ব্যবসায়ীর গডফাদার রাসেল এবং একই এলাকার আপন মামা মুত কাশেমের ছেলে জামাল।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, জামালের বিরুদ্ধে সদর থানাসহ দেশের বিভিন্ন থানায় রয়েছে একাধিক মাদকের মামলা। এসব মামলার গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকলেও জামালকে আটক করে না পুলিশ। অভিযোগ রয়েছে পুলিশের সঙ্গে জামালের গভীর সম্পর্ক থাকায় তাকে আটক করা তো দুরের কথা তার মাদকের চালানসহ তার বাহিনীর কোন সদস্য আটক হলেও মামলা দেয়া হয় না জামালের বিরুদ্ধে।

এদের মধ্যে আমির হোসেন গত মে মাসের ১৮ তারিখে ১৯ হাজার পিচ ইয়াবা নিয়ে রামু থানা পুলিশের হাতে আটক হয়ে বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। (মামলা নং জিআর ১৫০/১৯) যার বাজার মূল্য ৫৭ লাখ টাকা বলে মামলা সুত্রে জানা যায়।

যার প্রমান হিসেবে তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, গত ১৮ মে-২০১৯ তারিখ মাদক সম্রাট জামালের নিকট থেকে ১৯ হাজার পিস ইয়াবার একটি চালান নিয়ে ঢাকা যাচ্ছিলেন তাদের সিন্ডিকেটের জামালের আপন ভাই ও রাসেলের আপন মামা আমির হোসেন। এসময় বাইপাস এলাকা থেকে ১৯ হাজার ইয়াবাসহ আমির হোসেনকে আটক করে রামু থানা পুলিশ।

আটক আমির হোসেন জামাল ও রাসেলের মাল বললে পুলিশ জামাল ও রাসেলের বিরুদ্ধে মামলা দেয়নি। অভিযোগ উঠেছে, রাসেল ও জামালের নিকট থেকে পুলিশ মোটা অংকের উৎকচ নিয়ে তাদের মামলায় জড়ায়নি। এমন ঘটনা অহরহ ঘটলেও পুলিশের ভুমিকা বরাবরই রহস্যময়ী।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কলাতলী এলাকার একাধিক ব্যাক্তি জানান, রাসেলের বিরুদ্ধে শুধু মাদকের মামলায় নেই, তার বিরুদ্ধে রয়েছে অস্ত্র ব্যবসারও অভিযোগ। জামালের বাড়িতে ইয়াবা ও অস্ত্র ব্যবসা চালিয়ে গেলেও রাসেল প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ায়। রাসেলের সঙ্গে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক অফিসারের রয়েছে গভীর সম্পর্ক। তাই পুলিশ আসলেও রাসেলকে আটক না করে ফিরে যায় টাকার থলে নিয়ে।

অপর দিকে কলাতলীর আরেক ডন জামাল। তার বিরুদ্ধেও একাধিক মামলা চলমান থাকলেও পুলিশ তাকে আটক করছে না। অভিযোগ রয়েছে জামাল প্রকাশ্যে মটর সাইকেল নিয়ে পুলিশের চোখের সামনে দিয়ে দাপিয়ে বেড়ালেও পুলিশ থাকে নিরব।

এ বিষয়ে জামাল ও রাসেলের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

সদর থানার ওসি ফরিদ উদ্দিন খন্দকার বলেন, মাদক ব্যবসায়ীর সঙ্গে পুলিশের কোন সদস্যের সম্পৃক্ত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে। সেই সঙ্গে মাদক ব্যবসায়ীর গডফাদার রাসেল ও জামালকে আটক করতে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

আরও খবর