মোবারক হোছাইন :
উখিয়া উপজেলার হলদিয়া পালং ৯নং ওয়ার্ডের রুমখাঁ পালংয়ের অসহায় ভূমি ও গৃহহীন অসুস্থ কাশেম সওদাগর উপজেলা পরিষদ ও প্রশাসনের সহযোগীতা কামনা করেছেন। বর্তমানে পরিবার পরিজন নিয়ে খুব কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন অসুস্থ আবুল কাশেম।
অভাব-অনটনের সংসারে নিজের চিকিৎসার জন্য টাকার ব্যবস্থা করতে গিয়ে নানান সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় আবুল কাশেমকে।
জানা যায়, বিগত ৩০ বছর আগে রুমখাঁ পালং রেজুর খাল সংলগ্ন ব্যবসায়ী কাশেমের বাড়ী ভিটে ভেঙ্গে খালের পানিতে মিশে যায়, তখন থেকে ভূমি ও গৃহহীন হয়ে আবুল কাশেমের পরিবার বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন লোকের বাড়ী ভিটেয় আশ্রয় নেয়, এভাবে মানুষের দ্বারে ঘুরতে ঘুরতে অবশেষে স্থান হলো রুমখাঁ বাজার মাহামুদুল হক চৌধুরীর একটি খালি দোকানগৃহে। আর সেই দোকানগৃহে কাশেম তার স্ত্রী সন্তান, বিধবা কন্যা ও নাতি নাতনীসহ দীর্ঘদিন যাবত অনেক কষ্টে বসবাস করে আসছেন। এক সাথে একটি ছোট্ট কুটিরে স্ত্রী, সন্তান,মেয়ে,নাতী-নাতনী নিয়ে থাকাটা কি কষ্টের তা প্রতিবেদককে কান্না জড়িত কন্ঠে বললেন আবুল কাশেম।
তিনি জানান, নিজ এলাকায় পরবাসী হয়ে বসবাস করে আসছি। এই একটি ছোট্ট ঘরে ৯জন মানুষ গাদাগাদি করে থাকাটা খুব কষ্টের। থাকার পরিবেশটা খুব খারাপ। সম্প্রতি শুনলাম কক্সবাজারে গৃহহীণদের জন্য ১০৯ টি বাড়ি দেওয়া হচ্ছে, আমরা অসহায় পরিবারটি কি সুন্দরভাবে মাথাগুজার ঠাঁই পাবো না।
আবুল কাশেমের স্ত্রী জানান, অসুস্থ স্বামী ও নাতী-নাতনী নিয়ে একসাথে থাকতে হয়। যার মধ্যে আমার একটা কন্যা ও নাতী পঞ্চম শ্রেণীতে অধ্যায়নরত, তাদের নিয়মিত পড়ালেখা করাটাও কষ্টকর হয়ে যায়। তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রতিনিয়ত মানসিক চাপ ও যন্ত্রণায় আছি। যা অসহনীয় কষ্টকর হয়ে উঠেছে। তাছাড়া যেখানে আশ্রয়ে আছি সেখানে খোলামেলা বাজার, নেই লেট্রিন, গোসলখানা ও সুপেয় পানির ব্যবস্থা। যার কারণে প্রতিদিন অনেক দূরে গিয়ে ল্যাটিন, গোসল ও বাড়ির জন্য পানি আনতে যেতে হয়।
তিনি আরো জানান, বাড়ির মেয়ে গুলা দিন দিন উপযুক্ত হচ্ছে। বাজারে অনেক রকম মানুষের যাওয়া-আসা নিয়মিত। মাঝে মাঝে অনেক কটুক্তি শুনতে হয়। এখন আরো বেশী চিন্তার ভুগতেছি সম্ভাবনাময় যৌন হয়রানি নিয়ে। এখন পারছিনা কোথাও চলে যেতে, পারছিনা ভালভাবে বাঁচতে।
তিনি কান্নাজড়িত কন্ঠে বলে উঠেন, এ দেশে লাখ লাখ রোহিঙ্গাদের স্থান হয়, থাকা ও খাওয়ার সু-ব্যবস্থা হয়। কিন্তু আমাদের মত গরিবরা এইভাবে অবহেলায় পড়ে থাকব। এ পরিবেশ পরিস্থিতিতে আর পারছিনা, আমাদের মেয়েদের যদি কোন প্রকার ক্ষতি হয় তাহলে তার দায়ভার কে নিবে?
এমতাবস্থায় আমরা সরকারের কাছ থেকে থাকার জন্য বাসস্থান, ও নিরাপদ জীবনের ব্যবস্থা চাই। সর্বোপরি তারা স্থানীয় চেয়ারম্যান, উপজেলা পরিষদ এবং প্রশাসনের মাধ্যমে সরকারের সহযোগীতা চাই।
এ বিষয়ে উখিয়া উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমের সাথে আলাপ করা হলে তিনি প্রতিবেদককে বলেন, তাদের জন্য একটি বাড়ী করে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে পারি, তবে তাদের তো জায়গাও নেই, তবুও সহযোগীতার আশ্বাস দেন।
এদিকে অসহায় ভূমি ও গৃহহীন আবুল কাশেম তার মেয়ে শিশুদের নিয়ে নিরাপদে বাস করতে পারে এমন একটি বাসস্থান করে দেওয়ার জন্য স্থানীয় বিত্তবান শ্রেণির মানুষের সহায়তা, জনপ্রতিনিধি ও উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-