উখিয়ায় ফোর মার্ডার: ৬ দিনেও ক্লু উদঘাটন হয়নি, বিচারের দাবিতে মানববন্ধন

ফারুক আহমদ, উখিয়া

উখিয়ার রত্নাপালং ইউনিয়নের পূর্ব রত্না গ্রামের জঘন্যতম ও কলঙ্কময় শিশুসহ একই পরিবারের ৪ জনকে নির্মম হত্যাকাণ্ডের জড়িত কাউকে এখনো পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারেনি।

ঘটনার সাতদিন অতিবাহিত হওয়ার পরও হত্যাকাণ্ড মোটিব উদঘাটন কিংবা কিলিং মিশনে কারা অংশগ্রহণ করেছে সেই বিষয়ে স্পষ্ট না হওয়ায় সাধারণ জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিলেও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নিরলস তৎপরতা ও ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ এবং নিরবিচ্ছিন্ন দন্ত কার্যক্রমে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন রত্নাপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খায়রুল আলম চৌধুরীসহ সচেতন নাগরিক সমাজ।

মামলার তদন্তকারী অফিসার নুরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, পুলিশ বিভাগ সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের পরিচয় দিয়ে তদন্ত কার্যক্রম এগুচ্ছেন। যেকোনো সময় ঘাতক কে আমরা সনাক্ত করে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হব।

উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আবুল মনসুর সাংবাদিকদের বলেন চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের মোটিভ ও  ক্লু উদঘাটনে পিবিআই ফরেনসিক এবং সিআইডির ক্রাইমসিন টিমের সদস্যরাও তদন্তের কার্যক্রমে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করছেন।

এদিকে নিশংস হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে প্রতিদিন সমাবেশ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। একই পরিবারে কোমলমতি দুই শিক্ষার্থী সহ ৪জনকে জবাই করে হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে শিক্ষার্থীরা।

সোমবার সকালে রুমখাঁপালং সরকারি সাইরা প্রাথমিক বিদ্যালয় ও রুমখাঁপালং উচ্চ বিদ্যালয়ের শত শত শিক্ষার্থীরা এ প্রতিবাদ জানায়। এ সময় শিক্ষার্থীরা দ্রুত সময়ের মধ্যে ন্যাক্কারজনক এই হত্যাকান্ডে জড়িত অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার দাবী জানায়।

গত বুধবার গভীর রাতে রত্নাপালংং ইউনিয়নের পূর্বরত্না গ্রামের কুয়েত প্রবাসী রোকেন বড়ুয়া’র বাড়িতে ঢুকে তার মা-স্ত্রী, ছেলেসহ চারজনকে গলা কেটে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।

এ ঘটনায় নিহতরা হলেন রোকেন বড়ুয়ার মা সখি বড়ুয়া (৫০), স্ত্রী নিলা বড়ুয়া (২৫), ছেলে রবিন বড়ুয়া (৫) ও রোকেন বড়ুয়ার বড় ভাই শিপু বড়ুয়া’র মেয়ে সনি বড়ুয়া (৬)।নিহতদের মধ্যে রবিন বড়ুয়া রুমখাঁপালং সরকারি সাইরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণির ছাত্র এবং সনি বড়ুয়া প্রথম শ্রেণির ছাত্রী বলে নিশ্চিত করেছেন প্রধান শিক্ষক নুরুল কবির।

তিনি বলেন, কোমলমতি দুই শিক্ষার্থীসহ একই পরিবারের ৪জনকে নৃশংসভাবে হত্যার প্রতিবাদে ম্যানেজিং কমিটি, শিক্ষক-শিক্ষিকা, শিক্ষার্থীসহ এই কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।

এ দিকে হত্যাকান্ডের ৭  দিনেও কোন আসামীকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। যদিও বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের একাধিক সংস্থা মাঠে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে। সন্দেহভাজনদের একেক সময় একেক জনকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে প্রশাসন। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যেও অজানা আতংক কাজ করছে।

স্বজনদের নির্মম ভাবে হত্যাকারীদের উচিত বিচার ও
অবিলম্বে চাঞ্চল্যকর হত্যাকান্ডে প্রকৃত খুনির সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড দাবী করে নিকটতম আত্বীয় শিশু বড়ুয়া ও টিটু বড়ুয়া   বলেন, তদন্তের স্বার্থে কয়েকদিন বিলম্ব হলেও প্রকৃত আসামীদের বের করতে গিয়ে নিরীহ কেউ যেন হয়রানির শিকার না হয়।

এ প্রসঙ্গে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইকবাল হোসেন বলেন, ঘটনার পর থেকেই কেবল উখিয়ার পুলিশ প্রশাসন নয়, ডিআইজিসহ একাধিক তদন্ত সংস্থা ঘটনার রহস্য উদঘাটনে কাজ করছে। আশা করি শীঘ্রই ঘাতককে আটক করতো সক্ষম হবো। সর্বদিক থেকে অপরাধীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উখিয়া থানার ওসি (তদন্ত) নুরুল ইসলাম মুজুমদার।।

আরও খবর