বাছাইকৃত রোহিঙ্গাদের ‘গ্রিন কার্ড’ দেবে মিয়ানমার

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে বিতাড়িত হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠীর মধ্য থেকে যাচাইয়ের মাধ্যমে বাছাইকৃত লোকদেরই কেবল ফেরত নিতে চায় দেশটির সেনা সমর্থিত সু চি সরকার। পরবর্তীতে অন্যদের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অনুকরণে ‘অভিবাসী গ্রিন কার্ডে’র মতো জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদান করা হবে। ইউএন নিউজ

বাংলাদেশ সময় রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৪তম অধিবেশনের পঞ্চম দিনে বক্তব্য প্রদানকালে এসব কথা বলেন মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চির নিজস্ব দপ্তরের মন্ত্রী কিউ টিন্ট সোয়ে।

মিয়ানমার সরকারের এই প্রতিনিধি বলেন, ‘রাখাইনের উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্যে সৃষ্ট সহিংসতা থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে যাওয়া রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের বিষয়টি অগ্রাধিকার দিচ্ছে মিয়ানমার। ২০১৭ সালের নভেম্বরে দেশটির সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি অনুযায়ী এই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া পরিচালিত হবে।’

এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘এখন আমাদের প্রধান কাজ হলো- চলতি প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াকে দ্রুত একটি বাস্তবসম্মত রূপ দেওয়া। একই সঙ্গে প্রকৃত রোহিঙ্গাদের যাচাই ও আশ্রয় প্রত্যাশীদের জন্য আরও বেশি অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করা।’ বিবিসি বাংলা

যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত অভিবাসীদের দেওয়া ‘গ্রিন কার্ডে’র আদলে রোহিঙ্গাদের জন্য কার্ড বরাদ্দের প্রসঙ্গে সোয়ে বলেন, ‘রাখাইন রাজ্যে বসবাসরত বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠীর সম্পূর্ণ আলাদা আইনি মর্যাদা রয়েছে। যারা নাগরিকত্বের জন্য যোগ্যতা অর্জন করবেন, কেবল তাদেরই সেই কার্ড দেওয়া হবে। আর বাকিরা জাতীয় যাচাইকরণ কার্ড পাবেন।’

প্রত্যাবর্তনকারীদের নাগরিকত্ব কার্ড পেতে যোগ্যতার প্রমাণ দিতে হবে উল্লেখ করে সু চি সরকারের এই মন্ত্রী আরও জানান, ‘আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আর্সা) সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীর দ্বারা সংঘটিত হিংসাত্মক হামলার ফলেই বর্তমান অঞ্চলটিতে একটি বড় আকারের মানবিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে। কেননা তারা সেখানে সন্ত্রাসবাদের ইন্ধন জুগিয়েছে।’

এর আগে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের বেশ কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে বিচ্ছিন্ন হামলার জেরে সে অঞ্চলটিতে কথিত সন্ত্রাস দমনের নামে পরিকল্পিত ভাবে অভিযান পরিচালনা করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। এ সময় হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর প্রায় সাত লাখের মতো বেসামরিক পালিয়ে বাংলাদেশে চলে আসে।

ব্যাপক নির্যাতনের মুখে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন ইস্যুতে মিয়ানমারের সঙ্গে এরইমধ্যে বেশ কয়েক দফা চুক্তি সম্পাদিত হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। ফলে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় পথ খোলা রেখেই সম্প্রতি এই প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দ্বারস্থ হয় বাংলাদেশ।

এর আগে এবারে আয়োজিত জাতিসংঘ সাধারন পরিষদের ৭৪তম অধিবেশনে রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে ৪ দফা প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আরও খবর