নিজস্ব প্রতিবেদক •
পর্যটন শহর কক্সবাজারের কুখ্যাত মাদক সম্রাট রাসেলের নেতৃত্বে বিশাল আকারের মাদকের আস্তানায় মজুদ করে সদরের ৩ শতাধিক খুচরা পাইকারদের নিকট দীর্ঘদিন থেকে মাদক সরবরাহ করে আসার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। ঢাকা-কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম ভিত্তিক একটি শক্তিশালী মাদক সিন্ডিকেটের সাথে কলাতলীর রাসেলের গভীর সখ্যতা রয়েছে। এ বছরের মাঝা-মাঝি সময়ে কলাতলীর রাসেলের বড় আকারের একটি ইয়াবার চালান নিয়ে ঢাকা যাওয়ার পথে রামু থানা পুলিশের হাতে ইয়াবা সহ আটক হয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ হাজতে আছেন তার আপন মামা আমির হোসেন।
স্থানীয়রা বলছেন, কলাতলীর শামসুর ছেলে রাসেল ও তার আপন মামাদের সাথে একটি বিশাল মাদকের সিন্ডিকেট গড়ে তুলে। বিগত কয়েক বছর ধরে পুলিশ সহ অন্যান্য আইন শৃঙ্খলার রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে এ ব্যবসা চালিয়ে আসছে। খরুলিয়া, বাংলাবাজার, পিএমখালী, মিঠাছড়ি, লাইটহাউস, বৌদ্ধ মন্দির সড়ক, টার্মিনাল, কলাতলী ও টেকপাড়া থেকে শুরু করে সদরের প্রায় ৩ শতাধিক স্পটে উক্ত রাসেল ইয়াবা ও গাঁজা সরবরাহ করে আসছে।
স্থানীয়দের প্রশ্ন, শুধু মাত্র কক্সবাজার সদরে ইয়াবা ও মাদক ব্যবসায় অন্তত ৩ শতাধিক বিক্রেতা রয়েছে। এছাড়াও সদরের বাইরে প্রায় ৩০টি পয়েন্ট বা স্পটে মাদক পাচারকারীদের উক্ত মাদক সম্রাট রাসেল শক্তিশালী নেটওর্য়াক গড়ে তুলে। মাদক সম্রাট রাসেল কিভাবে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে বিনা বাঁধায় দীর্ঘদিন ধরে মাদক সরবরাহ করে আসছে, এ প্রশ্ন স্থানীয়দের? আইন শৃংখলা বাহিনীর বেশ কয়েক জন সদস্য ইতি পূর্বে মাদক সম্রাট রাসেলকে গ্রেপ্তারের জন্য একাধিক বার অভিযান চালিয়েও ব্যর্থ হয় বলে জানা গেছে। মাদক সমরাজ্য নিয়ন্ত্রণ করলেও তার বসত ভিটায় মাটির নিচে লুকানো আস্তানাতে কোন মাদক মজুদ না রেখে তা ভিন্ন কৌশলে তার মামাদের বাড়িতে গোপনে মজুদ গড়ে তুলেছে স্থানীয় মাদক প্রতিরোধ কমিটির সদস্যরা অভিযোগ করেছেন। শুধু তাই নয়, কক্সবাজার শহরে ১ শতাধিক পাইকারকে গাঁজা সরবরাহ করে ইতি মধ্যে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। আইন শৃঙ্খলার বাহিনী ও দুর্নীতি দমন কমিশনের নজর এড়াতে মাদক সম্রাট রাসেল এ কৌশল বেচে নিয়েছে বলে স্থানীয়দের অভিমত।
মিয়ানমার সীমান্তের প্রভাবশালী চোরাচালানীদের কাছ থেকে ইয়াবার চালান সংগ্রহ করে তা আবার ঢাকা-চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা সহ দেশের বিভিন্নস্থানে পাচার করার অহরহ অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি কুমিল্লার এক গাঁজা বেপারীর নিকট থেকে ৫ মন গাঁজা ক্রয় করে বিনিময়ে তাদেরকে ইয়াবা তুলে দিয়ে একটি বড় চালান খরুলিয়া ভুত পাড়া গ্রামে তার মামার বাড়ি নিয়ে আসেন। এখান থেকে তার শক্তিশালী নেটওয়ার্কের মাধ্যমে তা শহরসহ সদরের ৩০ টি পয়েন্টে সরবরাহ করে আসছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধি বলেন, মাদক এমন একটা ভয়ানক জিনিস, তা যদি একবার সমাজে প্রবেশ করে তা আর কোন মতেই রোধ করা সম্ভব হয় না। কারণ এ মরণ ঘাতক ব্যধি একবার যে আসক্ত হয়ে পড়বে তা থেকে আর বেরিয়ে আসা অনেক দুঃস্বপ্নের ব্যাপার। মাদক সম্রাট রাসেল ও তার মামা রফিক, দেলোয়ার, জামালসহ তার সিন্ডিকেটকে লাগাম টেনে ধরা না হলে ধীরে ধীরে পুরো জেলায় মরণ ঘাতক এ বিষ ছড়িয়ে পড়বে। যা থেকে এলাকার উঠতি বয়সের তরুণ ও যুব সমাজ কিংবা আগামী প্রজন্মের শিশুরা মাদকাসক্ত হয়ে উঠার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। এব্যাপারে সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা সংস্থা ও আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের মাদক সম্রাট রাসেলকে নজরদারীর আওতায় এনে মাদক নির্মূলে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেবেন বলে তিনি আশা করছেন।
এই সব অভিযোগ সম্পর্কে জানতে রাসেলের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
কক্সবাজার সদর থানার ওসি ফরিদ উদ্দিন খন্দকার বলেন, বিষয়টি পুলিশের অগোচরে থাকায় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তবে কুখ্যাত এ মাদক সম্রাটকে গ্রেপ্তার করে এলাকার মানুষকে স্বস্থি দেবেন বলেও তিনি জানান।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-