মাহাবুবুর রহমান :
কক্সবাজারের বিভিন্ন স্কুলে ঠিক কত রোহিঙ্গা শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে তাদের তালিকা তৈরি করা এবং আগে আসা সেসব রোহিঙ্গাদের অবাধে সরকারি সুযোগ সুবিধা নিয়ে লেখাপড়া বন্ধের বা তাদের শিক্ষা সনদে মায়ানমারের নাগরিক লেখার কোন পরিকল্পনা নেই বলে জানালেন প্রাথমিক ও গণ শিক্ষা সচিব আকরাম আল হোসেন।
তিনি গতকাল ২৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় কক্সবাজার সায়মন বীচ রিসোর্টের কনফারেন্স রুমে ইউনিসেফ আয়োজিত এক অনুষ্টানের পরে দৈনিক কক্সবাজার পত্রিকার পক্ষ থেকে করা সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে এই মন্তব্য করেন।
এ সময় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব বলেন, এখন আমাদের কর্মসূচী নতুন আসা প্রায় দেড় লাখ রোহিঙ্গা শিশুদের নিয়ে সেখানে (ক্যাম্পে) তাদের বার্মিজ এবং ইংরেজী শিক্ষার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তবে এখানে স্থানীয়ভাবে কোথায় তারা পড়ছে কি সমস্যা হচ্ছে সেটা এখন আমরা দেখছিনা। এদিকে প্রাথমিক শিক্ষা সচিবের এমন মন্তব্যে চরম ক্ষোব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করেছেন কক্সবাজারের স্থানীয় সচেতন মহল।
আমরা কক্সবাজারবাসীর সমন্নয়কারী কলিম উল্লাহ বলেন,সরকারী একজন শীর্ষ কর্মকর্তার কাছে আমরা এ ধরনের মন্তব্য কখনো আসা করিনি। এতে রোহিঙ্গারা আরো পশ্রয় পাবে। আর উক্ত কর্মকর্তার বুঝা উচিত যদি একজন রোহিঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করার সুযোগ পায় সে যদি উপবৃত্তি থেকে শুরু করে সরকারি বই খাতা পায় তাহলে আমার আপনার ছেলে মেয়েরা বঞ্চিত হচ্ছে। আর সেই রোহিঙ্গা যদি পিএসসি পাস করে উচ্চ শিক্ষার জন্য যায় সেখানে আমাদের স্থানীয়দের জন্য আসন সংকট হবে। মূলত যাদের দেশপ্রেম নেই তারাই এমন মন্তব্য করতে পারেন।
কক্সবাজার পৌর আওয়ামীলীগের ৭ নং ওয়ার্ড সভাপতি জাফর আলম বলেন, রোহিঙ্গাদের কারণে আমাদের সামাজিক,রাজনৈতিক সমস্যার শেষ নেই। বিশেষ করে আগে আসা কয়েক হাজার রোহিঙ্গা বর্তমানে এখানে জাতীয় পরিচয় পত্র পেয়ে গেছে। আবার তাদের ছেলে মেয়েরা বিভিন্ন স্কুল কলেজে লেখাপড়া করছে ফলে আমাদের স্থানীয়রা অধিকার বঞ্চিত হচ্ছে। আমাদের ৭ নং ওয়ার্ডের ৭ টি স্কুলে অন্তত ৫০০ এর বেশি রোহিঙ্গা শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে। এবং ইতিমধ্যে শহরের অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রোহিঙ্গা শিক্ষার্থী চিহ্নিত করে স্ব উদ্যোগে তাদের ছাত্রত্ব বাতিল করছে সেখানে শিক্ষা সচিবের এমন মন্তব্য আমাদের হতাশ করেছে। এতে রোহিঙ্গারা আরো উৎসাহিত হবে এবং স্থানীয় সাধারণ মানুষ রোহিঙ্গাদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়বে যেটা পরবর্তিতে আমাদের জন্য চরম ক্ষতি হবে।
এদিকে জেলা আইনজীবি সমিতির সাবেক সভাপতি এড. ছৈয়দ আলম বলেন,আগে আসা রোহিঙ্গাদের নিয়ে মানুষ যেখাসে সোচ্ছার যেখানে সরকারের একজন সচিব যদি বলে তাদের নিয়ে আমাদের কোন পরিকল্পনা নাই সেখানে আমরা কি আশা করতে পারি। তাহলে কি সব রোহিঙ্গা অবাধে সরকারি সুযোগ সুবিধা পাবে ? আমার মতে পরিকল্পনা না থাকলেও দ্রুত পরিকল্পনা গ্রহন করে জেলায় ঠিক কি পরিমান রোহিঙ্গা শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে তাদের তালিকা তৈরি করে তাদের ছাত্রত্ব বাতিল করতে হবে এবং তাদের সনদে অবশ্যই মায়ানমার নাগরিক লেখার ব্যবস্থা করতে হবে। এটা কক্সবাজারবাসীর দাবী।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-