‘কোথায় চলেছি আমরা’

আলমগীর মাহমুদ

পূর্ব রত্না। উখিয়া উপজেলার রত্নাপালং ইউনিয়নেরই অংশ। বৃহত্তর জালিয়াপালং ভাগ হয়ে রত্নাপালং আলাদা ইউনিয়নের মর্যাদা পায়। সমতল পাহাড়ের নান্দনিক ভূমি উখিয়ার পাঁচ ইউনিয়নের একটি এই রত্নাপালং।

বসতকারীরা মমতায় খনার বচনের মতো প্রবাদ প্রতীম। পালং অঞ্চলের বাইরের ময় মুরুব্বীরা প্রজন্মকে সতর্কবার্তা শুনায় ‘পালংইগ্যার প্রেমত ন পরিছ, কুয়ালত চোয়ার মারিবি”১ ”

এমন মমতার ভুমিতে একইরাতে খুন হয়েছে প্রবাসীর পরিবারের চারজন। তার মধ্যে দূ’জন শিশু । শোকের মাতমে উখিয়ার জনপদ। বাতাসে ভাসছে আহাজারি। হিসেব মিলাতে পারছে না কেউ। কি কারনে ? কারা? কেন? দুটি অবোধ শিশুই কেন বাদ গেল না পাষান্ডের বীভৎসতা থেকে?

১৯১২ সালে টেকনাফ থানার অধীনে বীট থানা হিসেবে উখিয়া থানার যাত্রা শুরু। আজ পর্যন্ত এতবড় হৃদয় বিদারক ঘটনা তার বুকে ঘটেনি। যত হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে কোনটির সাথে নেই এর বিন্দু মাত্রই সামঞ্জস্যতা। প্রতি ঘরে বাইরে দেশে বিদেশে আলোচ্য শুধুই একটি কে? কেন? কি কারনে ঘটাতে পারে এমন ঘটনা? এমন জল্পনা, কল্পনার প্রকাশে প্রকাশে।

সম্পদশালী আরাকান বাংলা সাহিত্যের তীর্থভূমি ছিল। আরাকান যাবার পথ ছিল উখিয়া। মহাকবি আলাওলের বাবা সাগরের চরের পথে আরাকান যাবার কালে জলদস্যুর হাতে হত্যা হয়। উখিয়ায় এটি ছিল সাড়া পড়ে যাওয়া আলোচ্য হত্যাকান্ড।

উখিয়া উপজেলার আলোচ্য মনের সুখ কেড়ে নেয়া হত্যাকান্ড ছিল বালুখালীর বুজুরুছ মেন্বার। রাজাপালং আততায়ীর গুলিতে ফকির মিয়া হত্যা, জালিয়াপালং ইদ্রিস মাষ্টারকে জমির বিরোধে সৎ ভাইয়েরা জবেহ করে হত্যা করে (মরিচ্যা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ধর্মের শিক্ষক ছিলেন ১৯৮২/৮৩ সালের দিকে) রামু উপজেলার দারিয়ার দীঘি এলাকায় আজিজ মিয়া হত্যা (নারীর কারণে)

এই রত্নাপালং খামার বাড়িতে অলি পল্লান (শিকারী) হত্যা, মহেন্দ্র সিকদার (প্রকাশ টুলুর বাপ) হত্যা এইসব হত্যা মানুষের মন নাড়া দেয়া হত্যাকান্ড । যার কথা মানুষ ভুলেনি এখনও। সব হত্যার বীভৎসতাকে হার মানিয়েছে সখি (শ্বশুড়ি) মিলা (ছেলের বউ) অবোধ দুই শিশুর হত্যা।

কিলার এমন কায়দায় ঘটনা ঘটিয়েছে সবাইর শুধুই ধারনায় ঘুরপাক খাচ্ছে ছাদের দরজায় পাষান্ডরা ঢুকেছে মনে হয়। আবার কেউ ভাবছে আগেই ঘরে ঢুকে লুকিয়েছিল।

গুহামানবেরা কাপড় পরতো না ঠিক, আমরা কাপড় পরে যাহ করছি, তারা তার বিচারে হাজার গুণই ছিল নমস্য! এই পথ কবে হবে শেষ!!

লেখক
বিভাগীয় প্রধান (সমাজবিজ্ঞান) বিভাগ
উখিয়া কলেজ, উখিয়া কক্সবাজার।

আরও খবর