বিডি নিউজ •
কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলায় কুয়েত প্রবাসী রোকেন বড়ুয়ার পরিবারের চার সদস্যকে গলাকেটে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে।
উখিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. নুরুল ইসলাম মজুমদার জানান, রোকেনের শ্বশুর শশাঙ্ক বড়ুয়া বাদী হয়ে অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে এ মামলা দাযের করেন।
রোকেন উখিয়ার রত্নপালং ইউনিয়নের পূর্ব রত্নপালং গ্রামের প্রবীন বড়ুয়ার ছেলে।
পরিদর্শক নুরুল জানান, বুধবার রাতের কোনো এক সময় রোকেনের বাড়িকে ঢুকে তার মা সুখী বালা বড়ুয়া (৬৫), স্ত্রী মিলা বড়ুয়া (২৬), ছেলে রবীন বড়ুয়া (২) ও ভাই শিপু বড়ুয়ার মেয়ে সনি বড়ুয়াকে (৬) গলা কেটে হত্যা করা হয়।
সকালে থানায় খবর দেওয়া হলে পুলিশ ওই বাড়ির অন্য একটি দড়জা ভেঙে ভেতরে ঢোকে এবং তিনটি ঘরে মেঝের ওপর চারজনের গলা কাটা রক্তাক্ত লাশ পায়।
তিনি বলেন, “একটি ঘরে টিভি আর ফ্যান চালু অবস্থায় ছিল। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি দা পাওয়া গেছে ঘরের ভেতরে। হত্যাকারী সম্ভবত বাসর ভেতরেই ছিল। রাতে খুন করে ছাদ হয়ে বেরিয়ে গেছে।”
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রোকেনদের চার ভাইয়ের মধ্যে বড় ভাই রবিসন বড়ুয়ার ইঞ্জিন ওয়ার্কশপের দোকান আছে। মেজ ভাই দীপু বড়ুয়া এক সময় স্থানীয় কোটবাজারে কাপড়ের ব্যবসা করতেন। তবে বছর দেড়েক ধরে তিনি পরিবার নিয়ে থাকেন চট্টগ্রামে। সেজ ভাই শিপু বড়ুয়া কোটবাজারে একটি ফার্নিচারের দোকান চালান।
আর সবার ছোট রোকেন গত দশ বছর ধরে কুয়েতে থাকেন। মাস ছয়েক আগে দেশে এসে বেশ কিছুদিন থেকে গতমাসে আবার কুয়েতে ফিরে যান। পূর্বরত্নাপালংয়ে তার বাড়ির পাশেই আলাদা দুটি বাড়িতে পরিবার নিয়ে থাকেন তার দুই ভাই দীপু ও শিপু।
শিপু বড়ুয়ার স্ত্রী মিনু বড়ুয়া সাংবাদিকদের বলেন, তার মেয়ে সনি মাঝে মধ্যেই রোকেনের বাড়িতে দাদীর সঙ্গে থাকত। বুধবার রাতেও সে ওই বাড়িতে ছিল।
“মিলা সন্ধ্যার দিকে কোটবাজার স্টেশনে গিয়েছিল ঘরের বাজার করতে। সাড়ে ৭টার দিকে ও বাসায় চলে আসে। রাতে খেয়ে চারজন ঘুমিয়ে পড়েছিল বলেই আমরা জানি। আর কেউ ওই বাসায় থাকে না।”
সকালে ওই বাসায় কারও সাড়া না পেয়ে খোঁজ নিতে যান মিনু বড়ুয়ার বড় জা। দরজা ধাক্কানোর পর কেউ সাড়া না দেওয়ায় তিনি শাশুড়ির ঘরের জানালার ফাঁক দিয়ে উঁকি দেন। শাশুড়িকে মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখে তিনি চিৎকার দিলে রবিসন ছুটে যান।
এদিকে পুলিশের পাশাপাশি পিআইবি ও সিআইডির বিশেষজ্ঞ দল বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে জেলার পুলিশ সুপার এ বি এম মাসুদ হোসেন জানান।
ঘটনাস্থল থেকে বেশকিছু আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে বলে এ পুলিশ কর্মকর্তা জানালেও তদন্তের স্বার্থে কি বিস্তারিত বলতে রাজি হননি তিনি।
এসপি বলেন, “এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে প্রাথমিক ধারণা করা হচ্ছে। হত্যা ঘটনায় একাধিক ব্যক্তি ও পরিবারের ঘনিষ্ট কেউ জড়িত থাকতে পারে।”
এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে পুলিশ প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে বলে জানান তিনি।
প্রতিদিনের খবরগুলো আপনার ফেসবুক টাইমলাইনে পেতে নিচের লাইক অপশনে ক্লিক করুন-